মুক্তিযুদ্ধে কলকাতার সাংবাদিকদের ভূমিকা চিরস্মরণীয় : কলকাতায় তথ্যমন্ত্রী

651

ঢাকা, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ (বাসস) : তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন ‘মুক্তিযুদ্ধে কলকাতার সাংবাদিকদের অসীম সাহসী ভূমিকা চিরস্মরণীয়’।
আজ শনিবার বিকেলে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ : কলকাতার সাংবাদিকরা ও প্রেস ক্লাব কলকাতা’ গ্রন্থের ওপর প্রেসক্লাব আয়োজিত বিশেষ আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী একথা বলেন। আজ ঢাকায় প্রাপ্ত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ খবর জানা যায়।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রায় এক কোটি মানুষ ভারতে আশ্রয় নিয়েছিলো। ভারতীয় সৈন্যরা যখন তৎকালীন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে বাংলাদেশে প্রবেশ করে, তখন বাংলাদেশের মানুষ ছিলো উল্লসিত। ভারতের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। আর কলকাতার সাংবাদিকবৃন্দ যে সাহসিকতার সাথে যুদ্ধের সংবাদ সংগ্রহ ও পরিবেশন করেছেন, ইতিহাসে তা স্বর্ণাক্ষরে লেখা রয়েছে।’
উপমহাদেশের সর্বপ্রাচীন প্রেসক্লাব হিসেবে কলকাতা প্রেস ক্লাবের ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে তাদের অভিনন্দন জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, “ইতিহাস যেনো হারিয়ে না যায়, সেজন্য ইতিহাসের সাক্ষী এই বর্ষীয়ান সাংবাদিকবৃন্দের কথন সংগ্রহে রাখা একান্ত জরুরি। ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ : কলকাতার সাংবাদিকরা ও প্রেসক্লাব কলকাতা’ গ্রন্থটি সেই কাজটিই করেছে।”
ইতিহাসের প্রয়োজনে গ্রন্থটির দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশে সার্বিক সহায়তার আশ্বাস দেন ড. হাছান মাহমুদ।
কলকাতা প্রেস ক্লাব সভাপতি স্নেহাশীষ সুরের সভাপতিত্বে অনুষ্টানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে কলকাতায় বাংলাদেশের উপ-হাইকমিশনার তৌফিক হাসান, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অবদানের জন্য স্বীকৃতিপ্রাপ্ত জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকদের মধ্যে তরুণ গাঙ্গুলি, মানস ঘোষ, দিলীপ চক্রবর্তী, ড. পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সুখরঞ্জন দাশগুপ্ত, উপেন তরফদার, প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক কিংশুক প্রামাণিক বক্তব্য রাখেন।
‘বঙ্গবন্ধুই বাংলাদেশ’
শনিবার সন্ধ্যায় আইসিসিআর মিলনায়তনে বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ’ শীর্ষক চিত্রকর্ম প্রদর্শনী উদ্বোধন করেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
আইসিসিআর পরিচালক গৌতম দে, কলকাতায় বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনার তৌফিক হাসান, গণমাধ্যম গবেষক ড. পবিত্র সরকার, বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট পরিচালনা পর্ষদ চেয়ারম্যান আবেদ খান এসময় বক্তব্য রাখেন।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুই বাংলাদেশ। বাঙালির ইতিহাস প্রায় পাঁচ হাজার বছরের পুরনো হলেও, তাদের কোনো জাতিরাষ্ট্র ছিলো না। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানই বাঙালির স্বতন্ত্র জাতিসত্তার উন্মেষ ঘটিয়ে একটি জাতিরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেন। নবাব সিরাজ উদ্দৌলাকে বাংলার শেষ বলা হলেও, তার ভাষা ও তার অন্দরের ভাষা বাংলা ছিলো না।’
‘বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উদযাপন উপলক্ষে বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশভিত্তিক এ চিত্রকর্ম প্রদর্শনী আয়োজনের জন্য উপহাইকমিশন ও আইসিসিআরকে ধন্যবাদ’ জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘যতদিন বাংলাদেশ থাকবে, ততদিন বাংলাদেশের মানুষ তাদের মুক্তিযুদ্ধে কলকাতা তথা ভারতের অবদান কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করবে।’
দু’দেশের চিত্রশিল্পীদের আঁকা ৪০টি চিত্রকর্ম তিনদিনব্যাপী এ প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে।
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল করিম, চলচ্চিত্র প্রকাশনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ ইসতাক হোসেন, চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার, তথ্যমন্ত্রীর একান্ত সচিব আরিফ নাজমুল হাসান, উপসচিব ইকরামুল হক, উপহাইকমিশনের প্রথম সচিব-প্রেস মোঃ মোফাখখারুল ইকবাল, সেন্সর বোর্ডের সচিব মমিনুর রহমান, চিত্রতারকা রোকেয়া প্রাচী, সাইমন, অপর্ণা ঘোষ, অনার্য কর্পোরেশনের নির্বাহী পরিচালক সফিক রহমান, উপদেষ্টা সুনীত কান্তি পালৌধি প্রমুখ উভয় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে কলকাতায় শুক্রবার ১৩ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় কলকাতায় পৌঁছে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান রবীন্দ্র তীর্থে আয়োজিত ইন্দো-বাংলা সম্মেলনের উদ্বোধনী সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন। আগামীকাল মন্ত্রী আগরতলায় প্রথমাবারের মতো বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসব উদ্বোধন করবেন।
বাসস/সবি/কেকে/২১৫০/অমি