ডিএনসিসি’তে নতুনভাবে অন্তর্ভুক্ত ১৮টি ওয়ার্ডের জন্য আগামীতে ৪ হাজার ২৬ কোটি টাকার প্রকল্প নেয়া হবে : মেয়র

235

ঢাকা, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ (বাসস) : ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে (ডিএনসিসি) নতুনভাবে অন্তর্ভুক্ত ১৮টি ওয়ার্ডের সড়ক অবকাঠামো ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার নির্মাণ ও উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে ১৬১ দশমিক ৭২ কিলোমিটার (কি.মি.) রাস্তা আগামীতে নির্মাণের কথা জানিয়েছেন ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘এই প্রকল্পের মাধ্যমে সেখানে ২২২ দশমিক ৮২ কি.মি. ড্রেন নির্মাণ ও উন্নয়ন করা হবে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের খরচ ধরা হয়েছে ৪ হাজার ২৫ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। এছাড়াও এখানে ১১ হাজার ২২৪টি এলইডি লাইট স্থাপন করা হবে।’
বৃহস্পতিবার ডিএনসিসি’র ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপনকালে মেয়র উত্তর সিটিতে অন্তর্ভূক্ত নতুন ১৮টি ওয়ার্ডের উন্নয়নে ভবিষ্যত এই পরিকল্পনা ও প্রকল্পের কথা জানান।
ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল আরও বলেন, ৩ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে মিরপুর আনসার ক্যাম্প হতে রজনীগন্ধা মার্কেট হয়ে কাকলী এবং মাটিকাটা পর্যন্ত সংযোগ সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের মাধ্যমে ৪ দশমিক৭ কি.মি. সড়ক বা নর্দমা বা ফুটপাথ ও ৫ দশমিক ১০ কি.মি. এলিভেটেড সড়ক নির্মাণ ও উন্নয়ন করা হবে। এতে এই এলকায় চলাচলকারী জনগণের ব্যাপক সুবিধা হবে।
তিনি বলেন, ৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের বাড্ডা এলাকায় বহুতলা বিশিষ্ট সেবক নিবাস নির্মাণ প্রকল্পের মাধ্যমে একটি ১৫ তলা আবাসিক ভবন ও ২৪২ মিটার অভ্যন্তরীন রাস্তা ও ড্রেন নির্মাণ করা হবে।
ভবিষ্যত উন্নয়ন প্রকল্পের কথা তুলে ধরে মেয়র বলেন, উত্তর সিটিতে ৮২৬ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে “আমিনবাজার ল্যান্ডফিল সম্প্রসারণ ও আধুনিকীকরণ প্রকল্পের” মাধ্যমে ২ দশমিক ৭ কি.মি. বাঁধ, ৩ দশমিক ৬ কি.মি. রাস্তা, ৫ হাজার ৪০০ বর্গমিটার ডাম্পিং প্লটফর্ম, ৭৭৮টি প্লানটেশন এবং ৩ দশমিক ২২ কি.মি. ড্রেন নির্মাণ করা হবে।
তিনি বলেন, ১ হাজার ৩১৯ কোটি ৮৯ লাখ টাকা ব্যয়ে বর্জ্যরে রিসোর্স রিকোভারি সুবিধাদিসহ ডিএনসিসির বর্ধিতাংশের জন্য আধুনিক স্যানিটারি ল্যান্ডফিল নির্মাণ প্রকল্পের মাধ্যমে ২টি টায়ার ডোজার, ৬টি হাইড্রোলিক স্কেভেটর, ২টি হাইড্রোলিক লং বুম স্কেভেটর, ৬টি বুলডোজার বা চেইন ডোজার, ২টি পে-লোডার, ৫টি ডাম্প ট্রাক (১০টন), ২টি ওয়েস্ট কম্পেক্টও কেনা হবে। এছাড়াও এখানে ওয়ার্কসপ বিল্ডিং, স্টোরেজ হাউজ, সাব-স্টেশন রুম ও সিকিউরিটি ব্যারাক নির্মাণ করা হবে।
ডিএনসিসি মেয়র আধুনিক পরিচ্ছন্ন বাসযোগ্য ঢাকা গড়তে ৪৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে আধুনিক যান-যন্ত্রপাতি সংগ্রহের মাধ্যমে সড়ক পরিষ্কার ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কাজের উন্নয়নে মেকানিক্যাল রোড সুইপার মেশিন, এপেক্স বা সোয়াম্প টাইপ চেইন ডোজার, বেকহো-লোডার, কম্পেক্টও ট্রাক ক্রয় করা হবে।
মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, ৭০০ কোটি টাকা ব্যয়ে উত্তর সিটি কর্পোরেশনের সম্প্রসারিত এলাকার বর্জ্য ব্যবস্থা আধুনিকায়ন ও উন্নয়ন প্রকল্পে এসটিএস এর জন্য ৩ একর ভূমি অধিগ্রহণ, ভুমি উন্নয়ন (৪৯৩২৮ ঘনমিটার মাটি ভরাট), ১ হাজার ৪১৩ মিটার বাউন্ডারী ওয়াল নির্মাণ, ৪০ হাজার ৮০ বর্গমিটার এলাকার কার পাকিং নির্মাণ, ৭ হাজার ৮৪৬ বর্গমিটার স্টোর বিল্ডিং নির্মাণ ৩ হাজার ২৫৪ বর্গমিটার ওয়ার্কসপ নির্মাণ, ৩৩১ বর্গমিটার ইউটিলিটি বিল্ডিং নির্মাণ, ৩৬টি এসটিএস নির্মাণ, ১৮টি ওয়ার্ড অফিস নির্মাণ এবং ৫ ধরণের বর্জ্য অপসারণ যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করা হবে।
তিনি বলেন, ২ হাজার ৮৪২ কোটি ৬৫ লাখ টাকা ব্যয়ে জল নিসর্গ – ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের আওতায় দীগুন মৌজাধীন জলাধার সংরক্ষণে জলজ ও স্থলজ জীব বৈচিত্র্য সমন্বিত প্রল্পের মাধ্যমে ব্রিজ, সুইস গেট, পাওয়ার প্ল্যান্ট, সুইমিং পুল ও হ্রদ, ভাসমান কনভেনশন কেন্দ্র ও ভাসমান রেস্তোরা নির্মাণ করা হবে।
ডিএনসিসি মেয়র ভবিষ্যত পরিকল্পনায় আরও বলেন, ৪৯ কোটি ৫২ লাখ টাকা ব্যয়ে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন ২৬ ও ৩৩ নং ওয়ার্ডে বহুতলবিশিষ্ট আধুনিক কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণ প্রকল্পের মাধ্যমে ৭ হাজার ২৪৫ বর্গমিটার আয়তনের ৬তলা বিশিষ্ট একটি কমিউনিটি সেন্টার ভবন ও ৩ হাজার ৬৮০ বর্গমিটার আয়তনের ৮তলা বিশিষ্ট একটি কমিউনিটি সেন্টার ভবন নির্মাণ করা হবে।
আতিকুল ইসলাম জানান, ৪০১ কোটি টাকা ব্যয়ে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ট্রাফিক অবকাঠামো উন্নয়নসহ সড়ক নিরাপত্তা প্রকল্পের মাধ্যমে বিদ্যমান সড়ক উন্নয়নসহ নতুন সড়ক নির্মাণ, প্রতিবন্ধীবান্ধব ফুটপাত নির্মাণ, জলাবদ্ধতা দূরীকরণে ড্রেন নির্মাণসহ সড়কবাতি ও ট্রাফিক সিগনাল স্থাপন করা হবে।
উল্লেখ্য, মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বৃহস্পতিবার ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) ২০১৯-২০ অর্থবছরের জন্য ৩ হাজার ৫৭ কোটি ২৪ লাখ টাকার প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণা করেছেন।