নাইজেরিয়ায় রাখাল-কৃষক সংঘর্ষে নিহত ৮৬

244

জোস (নাইজেরিয়া), ২৫ জুন, ২০১৮ (বাসস ডেস্ক) : নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুহাম্মাদু বুহারি গোলযোগপূর্ণ মধ্যাঞ্চলের সন্দেহভাজন রাখালদের হামলায় ৮৬ জন নিহত হওয়ার পর রোববার সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। খবর এএফপি’র।
প্লাতেয়াউ রাজ্যের নারিকিন লাদি এলাকায় বৃহস্পতিবার ফুলানি রাখালদের ওপর জাতিগত বেরোম কৃষকরা হামলা চালালে এই সংঘর্ষ শুরু হয়।
রাজ্য পুলিশের কমিশনার উনদি আদি বলেন, শনিবার এলাকাটির বেরোম গোষ্ঠীর গ্রামগুলোতে তল্লাশী চালানো হয়েছে। সেখানে ‘একসঙ্গে ৮৬ জনকে হত্যা করা হয়েছে।’
আদি সাংবাদিকদের বলেন, এই সহিংসতায় ছয় জন আহত ও ৫০টি বাড়িঘর ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। নিহতদের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
জমি ও সম্পদের দখল নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলা লড়াইয়ের সর্বশেষ ফলাফল এই মৃৃত্যু প্রেসিডেন্ট বুহারিকে আগামী বছর অনুষ্ঠেয় নির্বাচনের আগে চাপের মধ্যে ফেলে দিয়েছে।
জাতিগত, ধর্মীয় ও রাজনৈতিক কারণ এই সংঘাতকে আরো উস্কে দিয়েছে। কয়েক দশক ধরে উভয়পক্ষের মধ্যে চলা এই সংঘাতে হাজার হাজার লোক প্রাণ হারিয়েছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এটা নাইজেরিয়ার সবচেয়ে বড় নিরাপত্তা ঝুঁকি হতে পারে। ইতোমধ্যেই ২০০৯ সাল থেকে ইসলামিক উগ্রপন্থী সংগঠন বোকো হারামের জঙ্গি তৎপরতায় দেশটিতে অন্তত ২০ হাজারে লোকের মৃত্যু হয়েছে।
বুহারির কার্যালয় থেকে বলা হয়েছে, তিনি ‘সকলকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। এই ঘটনায় দায়ীদের শাস্তি এবং পরবর্তীতে যে কোন ধরনের হামলা ঠেকাতে সব ধরনের প্রচেষ্টা চালানো হবে বলে আশ্বস্ত করেছেন।’
এদিকে প্লাতেয়াউ রাজ্যের সরকার জানিয়েছে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঠেকাতে রিয়োম, বারিকিন লাদি ও জোস সাউথ এলাকার বাসিন্দাদের চলাচলের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।
সরকারের মুখপাত্র রুফুস বাতুরে বলেন, ‘অবিলম্বে কারফিউ কার্যকর করা হয়েছে। স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ছয়টা থেকে ভোর ছয়টা পর্যন্ত জরুরি দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তিরা ছাড়া সকলের চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।’
সহিংসতা থেকে যারা পালিয়ে এসেছে তারা জানায়, রোববার জোস-আবুজা মহাসড়কে জাতিগত বেরোম যুবকরা ব্যারিকেড দিয়েছে। তারা ‘ফুরানি ও মুসলিম’ মোটরসাইকেল আরোহীদের ওপর হামলা করছে।
প্লাতেয়াউ রাজ্য পুলিশের মুখপাত্র তিওপেভ তেরনা ও রাজ্যের রাজধানী জোজ এর মিলিটারি টাস্কফোর্সের মেজর আদম উমার এই রাস্তায় অবরোধ ও কয়েকটি গাড়ির ভাংচুড়ের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
আনুষ্ঠানিকভাবে কোন মৃত্যুর কথা বলা হয়নি। তবে সহিংসতা থেকে পালিয়ে আসা বাবা বালা জানান, ছয় জন নিহত হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমি আমার গাড়ি নিয়ে দ্রুত পালিয়ে আসি। আমি রাস্তায় ছয়টি লাশ ও কয়েকটি ধ্বংস হয়ে যাওয়া গাড়ি দেখতে পাই।’