সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে টাস্কফোর্স গঠন করা হবে : ওবায়দুল কাদের

471

ঢাকা, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ (বাসস) : সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে ও দুর্ঘটনা কমাতে টাস্কফোর্স গঠনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালকে প্রধান করে গঠিত এই টাস্কফোর্স আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে কাজ শুরু করবে।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর বনানীতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) কার্যালয়ে জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিলের সভা শেষে সাংবাদিকদের এই সিদ্ধান্তের কথা জানান জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিলের সভাপতি এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, ‘সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা ও দুর্ঘটনা কমাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের নেতৃত্বে একটি টাস্কফোর্স গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই টাস্কফোর্সে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি ছাড়াও মালিক-শ্রমিক সংগঠনের নেতা ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি থাকবেন। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এই টাস্কফোর্স কাজ শুরু করবে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, টাস্কফোর্সে সড়ক পরিবহন-মহাসড়ক বিভাগের সচিব সাচিবিক দায়িত্ব পালন করবেন। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এবং যে সমস্ত প্রয়োজনীয় সংস্থা রয়েছে, তাদেরকে নিয়ে আমরা শক্তিশালী টাস্কফোর্স গঠন করেছি।
বৈঠক শেষে জানানো হয়, পুলিশের আইজিপি, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর সচিব, ডিএমপি কমিশনার, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহীগণ, সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী, বিআরটিএ ও বিআরটিসির চেয়ারম্যান, ডিটিসিএর নির্বাহী পরিচালক, পরিবহন মালিক সমিতির প্রতিনিধি, পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের প্রতিনিধি, ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান মালিক সমিতির প্রতিনিধি, প্রাইম মুভারস অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধি, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের প্রতিনিধি ও হাইওয়ে পুলিশের ডিআইজি টাস্কফোর্সের সদস্য হবেন।
এছাড়াও গণপরিবহন বিশেষজ্ঞ বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক শামসুল হক, কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ, নিরাপদ সড়ক চাই-এর চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন ও ব্র্যাকের প্রতিনিধিকেও সদস্য রাখা হয়েছে।
জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিলের ১১১ দফা সুপারিশ বাস্তবায়নে টাস্কফোর্স গঠন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, শুধু উদ্যোগ নিলেই হবে না, বাস্তবায়ন করতে হবে। মহাসড়কে চালকের জন্য বিশ্রামাগার তৈরির প্রকল্প একনেকে পাস হয়েছে। এছাড়া বহুলপ্রতিক্ষীত ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক চারলেনে উন্নীত করতে এডিবি অর্থ দেবে।
সড়ক পরিবহন মন্ত্রী বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে আলাদা সার্ভিস লেন তৈরি করতে প্রকল্প হাতে নেওয়া হবে। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কসহ অন্য মহাসড়ক যেহেতু চারলেন নয়, তাই চারলেন করার সময় সার্ভিস লেনের পরিকল্পনা করেই তৈরি করা হবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে পারবো না, একথা ঠিক নয়। আমরা ইতোমধ্যে বহুক্ষেত্রে শৃঙ্খলা ও আইন বাস্তবায়ন করেছি। তাই, আমরা সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাবোই।
ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে সভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, রেলপথমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি একাব্বর হোসেন, বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশনের কার্যকরী সভাপতি শাজাহান খান, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি মসিউর রহমান রাঙ্গা, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) জাবেদ পাটোয়ারী, সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব নজরুল ইসলাম, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক শামসুল হক, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ, ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার (ডিএমপি) মো. আছাদুজ্জামান মিয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, পরিবহন মালিক ও শ্রমিক এবং সংশ্লিষ্ট কমিটির সবার মতামতের ভিত্তিতে সড়ক পরিবহন আইন বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। আগামী সপ্তাহে এ ব্যাপারে সবাইকে জানানো হবে।
জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ডাম্পিং স্টেশন নেই। গাড়ি জব্দ করে রাখারই জায়গা নেই। এটা নির্মাণ করলে নিয়ম না মানা গাড়িকে জব্দ করা গেলে বিশৃঙ্খলা কমে আসবে। ঢাকা শহরে বিশাল বিশাল ভবন, অথচ পার্কিংয়ের জায়গা নেই। পার্কিং ছাড়া ভবন নির্মাণের অনুমতি দেওয়া উচিত হবে না।
তিনি বলেন, ট্রাফিক আইন না মানার সংস্কৃতি পুলিশ দিয়ে কন্ট্রোল সম্ভব নয়। আইন মানতে হবে। মানুষকে আইন মানতে সচেতন করতে হবে। তাহলেই সব সমস্যা সমাধান হবে।