বাজিস-১ : ভোলায় বোরোর বাম্পার ফলন

200

বাজিস-১
ভোলা-বোরো-ধান
ভোলায় বোরোর বাম্পার ফলন
॥ হাসনাইন আহমেদ মুন্না ॥
ভোলা, ২৫ জুন, ২০১৮ (বাসস) : জেলায় চলতি মৌসুমে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। এখানে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে সাড়ে ২২ হাজার হেক্টর বেশি জমিতে বোরোর আবাদ হয়েছে। এছাড়া ১ লাখ ৭২ হাজার ৬৯৫ মে. টন চাল উৎপাদনের টার্গেটের বিপরীতে ২ লাখ ৯৫ হাজার ১৭৫ মে. টন চাল উৎপাদন হয়েছে। যা জেলায় বোরোর চাল উৎপাদনের মধ্যে সর্বোচ্চ পরিমাণ রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে লবণাক্ততা সহিন্সু ব্রি ধান ৪৭, ৬৭, ৭৪ এবং বিনা-৮ ও বিনা-১০ জাতের ব্যাপক ফলন হয়েছে। এবার ধানের দাম বেশি থাকায় হাসি ফুটেছে কৃষকের মুখে।
কৃষি বিভাগ জানায়, জেলার মোট ৪৪ হাজার ৬৬৫ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আবাদ সম্পন্ন হয়েছিলো ৬৫ হাজার ৮৩৫ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে হাইব্রিড আবাদ হয়েছে ৬ হাজার ৬০ হেক্টর জমিতে, উফশী ৫৮ হাজার ৫০ হেক্টর ও স্থানীয় জাত ১৮’শ ২৫ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। জানুয়ারি থেকে বোরো রোপণ শুরু হয়ে মার্চের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত চলে। আর মে মাসের প্রথম থেকে ধান কর্তন শুরু হয়ে জুনের প্রথম দিকে শেষ হয়। শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে ও কৃষি বিভাগের সব ধরনের পরামর্শ সেবা অব্যাহত থাকায় এখানে বাম্পার ফলন হয়েছে বলে কৃষি কর্মকর্তারা মনে করছেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক প্রসান্ত কুমার সাহা বাসস’কে জানান, গতবছর জেলায় ১ লাখ ৮৬ হাজার ১৩৫ মে. টন চাল উৎপাদন হয়েছিলো। আর এবছর প্রায় ৩ লাখ মে. টন চাল হয়েছে। যা এই জেলার ইতিহাসে সর্বোচ্চ পরিমাণ চাল উৎপাদনের রেকর্ড করেছে। সরকার কৃষকের মাঝে যথেষ্ট পরিমাণ বোরো ধানের উচ্চফলনশীল বীজ ও সার বিতরণের ফলে এবার প্রচুর ধান হয়েছে বলে মনে করেন তিনি।
প্রসান্ত কুমার সহা আরো বলেন, মূলত বোরো ধানে ব্লাষ্ট রোগ ও বাদামী গাছ ফরিং আক্রমণ করে। এবার রোগের লক্ষণ দেখা মাত্রই মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মীর সহায়তায় রোগ নির্মূল করতে সক্ষম হয়েছে কৃষকরা। ফলে রোগ-বালাই’র তেমন উপদ্রব ছিলো না বললেই চলে। এছাড়া এবছর লবণাক্ততা সহায়ক ধানের আবাদ বেশি হয়েছে। বিশেষ করে বিনা-১০ জাত হেক্টর প্রতি ৮ টন ও বিনা-৮ হেক্টরে হয়েছে সারে ৭টন করে উৎপাদন হয়েছে। আগামী দিনগুলোতে এ জেলায় বোরোর আবাদ আরো বাড়বে বলে জানান জেলার কৃষি বিভাগের প্রধান এই কর্মকর্তা।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মৃত্যুঞ্জয় তালুকদার বাসস’কে বলেন, গত কয়েক বছর ধরেই এখানে লবণাক্ততার মধ্যে ভালো হয় এমন জাতগুলোর আবাদ হচ্ছে। এবছর প্রচুর ফলন হওয়ায় চাল উৎপাদনে রেকর্ড হয়েছে। আর মোট চাল উৎপাদনের মধ্যে হাইব্রিডের উৎপাদন হয়েছে হেক্টর প্রতি ৫ মে. টন করে। উফশীর হেক্টর প্রতি সারে ৪ ও স্থানীয় ২ মে. টন করে চাল উৎপাদন হয়েছে।
উপজেলা সদরের ধনীয়া ইউনিয়নের তুলাতুলী এলাকার কৃষক বারেক মাঝি, সালামত আলী ও খালেক হাওলাদার তারা প্রত্যেকে ১ একর করে জমিতে বোরো ধানের বিনা-১০ জাতের আবাদ করছেন। ফলন ভালো হওয়ায় এবার লাভ বেশি হয়েছে তাদের। এছাড়া নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সংযোগ থাকায় সেচ কাজে সমস্যা পোহাতে হয়নি তাদের। কৃষি বিভাগের মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা নিয়মিত পরামর্শ সেবা দিয়েছেন বলেও জানান তারা।
বাসস/এইচএএম/আহো/১২৪৫/নূসী