জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে সফল অস্ত্রোপচারের পর নুপুর বাড়ি ফিরে গেছে

194

ঢাকা, ২৯ আগস্ট, ২০১৯ (বাসস) : জাতীয় হৃদরোগ ইনিস্টিটিউটে (এনআইসিভিডিতে) সফল অস্ত্রোপচারের পর ১২ বছরের কিশোরী নুপুর বাড়ি ফিরে গেছে। দেশে সরকারি কোন হাসপাতালে এ ধরনের অস্ত্রোপচার এটিই প্রথম।
পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলা থেকে আসা কিশোরী নুপুর তার হার্টের দুটি আপার চেম্বারের মধ্যে একটি ছিদ্র ছিল। এজন্য সে আটরিয়াল সেপটাল ডিপেক্ট (এএসডি) এ ভুগছিল। ডা. আশরাফুল হকের নেতৃত্বে দশ সদস্যের একটি চিকিৎসক দল গত ২৫ আগস্ট এনআইসিভিডিতে তার অস্ত্রোপচার করেন।
চিকিৎসক দল পূর্ণ অ্যানেস্থেশিয়া করে নুপুরের অস্ত্রোপচার করেন। অস্ত্রোপচারে সময় লাগে আড়াই ঘন্টা। এতে ব্যায় হয় মাত্র ৫ হাজার টাকা।
চিকিৎসক দলের সদস্য ডা. সিয়াম সফল অস্ত্রোপচরে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, আমি বাক রুদ্ধ। আমি এক সময় জনগনের জন্য বড় কিছু করার স্বপ্ন দেখেছিলাম। আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহায়তায় সেটি আজ বাস্তবায়ন করতে পেরেছি। এ ধরনের একটি স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে আমি সক্ষম হয়েছি। এ জন্য আমি খুব খুশি এবং সকলের প্রতি কৃতজ্ঞ। ওপেন হার্ট সার্জারির বিকল্প হিসেবে এই অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। অস্ত্রোপচারের সময় তার বুকের কোন হাড় কাটা হয়নি বরং তারা তার বুকের পাজরের মধ্যে অস্ত্রোপচার করেছে। এতে রোগির ব্যাথা কম হয় এবং খুব অল্প সময়ের মধ্যে অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়। অস্ত্রোপচারে এই টেকনিক ব্যবহার করে তাদের কাটা ছেড়া কম করতে হয়েছে। যে টুকু প্রয়োজন, শুধু সে টুকুই করা হয়েছে। চিরাচরিত অস্ত্রোপচারের চেয়ে এই পদ্ধতির অস্ত্রোপচারে শারীরিক কষ্ট কম এবং দ্রুত হয়।
এনআইসিভিডি’র সহকারি অধ্যাপক ডা. সিয়াম বলেন, জাতীয় হৃদরোগ ইনিষ্টিটিউটে এই অস্ত্রোপচারের আগে কেবলমাত্র রাজধানীর মিরপুরে বেসরকারি হাসপাতাল জাতীয় হার্ট ফাউন্ডেশনে এ ধরনের অস্ত্রোপচার হয়েছিল। এতে প্রতিটি অস্ত্রোপচারে ব্যায় হয়েছিল আড়াই লাখ টাকা থেকে তিন লাখ টাকা পযর্ন্ত। তিনি বলেন, এখন প্রতিনিয়ত এ ধরনের অস্ত্রোপচার করা হবে। হাসপাতালে প্রয়োজনীয় সকল যন্ত্রপাতি রয়েছে। এ ক্ষেত্রে আমরা অন্যান্য সার্জনদের প্রশিক্ষণ দিব।
ডা. সিয়াম গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্রোপচারের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ক্রয়ে পযার্প্ত অর্থ বরাদ্দ দেয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান। তিনি আরো বলেন, তারা প্রায় দেড় বছর আগে এ ধরনের অস্ত্রোপচার করার পরিকল্পনা করেছিলেন। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অর্থ বরাদ্দ এবং অনুমোদনসহ কয়েকটি বিষয় রয়েছে। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নিদের্শনা আমাদের জন্য সহজ করে দিয়েছে। তিনি আমাদেরকে এগিয়ে যেতে উৎসাহিত করেছেন এবং সব ধরনের সহায়তা দিয়েছেন।
ডা. সিয়াম এ ধরনের অস্ত্রোপচারে ঝুকি ও সফলতা সম্পর্কে বলেন, এটি খুবই জটিল অস্ত্রোপচার। এটি করতে রোগির শরীরের চামড়ায় ছোট ছোট করে কয়েকটি স্থানে কাটতে হয়। সার্জনকে খুবই সতর্ক থাকতে হয়। তিনি বলেন, এটি ওপেন হার্ট সার্জারির চেয়েও আরো আধুনিক অস্ত্রোপচার।
ডা. সিয়াম বলেন, নুপুরকে তার চেকআপ করানোর জন্য পুনরায় হাসপাতালে আসার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।