বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের নেপথ্যে যারা ছিল, তাদের চিহ্নিত করতে কমিশন গঠন করা হবে : আইনমন্ত্রী

597

ঢাকা, ২৭ আগস্ট, ২০১৯ (বাসস) : আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নৃশংসভাবে সপরিবারে হত্যাকান্ডের নেপথ্যে যারা ছিল, তাদের চিহ্নিত করে শাস্তি দিতে কমিশন গঠন করা হবে। আজ মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে সম্প্রীতি বাংলাদেশ আয়োজিত ‘শোকের মাস, ষড়যন্ত্রের মাস আগস্ট’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন।
তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান এমপি অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন । সম্প্রীতি বাংলাদেশের আহবায়ক পীযুষ বন্দোপাধ্যায়ের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, সংসদ সদস্য মুহাম্মদ শফিকুর রহমান, সাবেক রাষ্ট্রদূত আতিকুর রহমান, সাবেক সচিব নাসির উদ্দিন, মেজর জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ আলী শিকদার, সংগঠনের সদস্য সচিব অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব প্রমুখ আলোচনা করেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘৭৫-এর ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর তাঁর হত্যার বিচার হবে না, এমন ব্যবস্থা করা হয়েছিল। আগামী প্রজন্ম জানতে চায়, কেন বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছিল। তাঁর হত্যার বিচারের জন্য কেন ২১ বছর দেশকে অপেক্ষা করতে হয়েছে। কেন নেপথ্যের মানুষদের এখন পর্যন্ত বিচার হয়নি। এজন্য অবশ্যই একটি কমিশন গঠিত হবে।’
আনিসুল হক বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যাকা-ের নেপথ্যে যারা ছিল, তাদের চিহ্নিত করে শাস্তি দেওয়ার সুযোগ আমরা পেয়েছি। আমরা সেই সুযোগ ছেড়ে দেবো না। ইনশাল্লাহ আমরা এই কমিশন গঠন করবোই।’ কমিশন গঠন অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ উল্লেখ করে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘অনেকেই বলছেন যে, এই কমিশনকে দিয়ে অন্যান্য যে হত্যাকান্ড হয়েছে সেগুলোকেও তদন্ত করতে হবে। আমি মনে করি, এই কমিশনকে শুধুমাত্র বঙ্গবন্ধু হত্যার নেপথ্যের লোকজনকে চিহ্নিত করতে কাজ করার সুযোগ দেয়া উচিত হবে।’
আনিসুল হক বলেন, ‘বাংলাদেশকে ধ্বংস করে দিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছে। কারণ ঘাতকরা বুঝেছিল, এই বাংলাদেশকে ধ্বংস করতে হলে শুধু বঙ্গবন্ধু নয়, বঙ্গবন্ধু পরিবারের সকলকে মেরে ফেলতে হবে। এমনকি ১০ বছরের শিশু শেখ রাসেলকেও। তার কারণ হচ্ছে এঁরা বেঁচে থাকলে বাংলাদেশ বেঁচে থাকবে। বঙ্গবন্ধুর রক্তের ধারা শেখ হাসিনা ক্ষমতা গ্রহণ করে দেশকে বাঁচিয়ে দেয়ার মাধ্যমে এটি প্রমাণিত হয়েছে।’ তিনি বলেন, ২৬ সেপ্টেম্বর ১৯৭৫ সালে ইনডেমনিটি অর্ডিনেন্স জারী করা হয়। এই ইমডেমনিটি অর্ডিনেন্স জারীর অর্থই হলো বঙ্গবন্ধু হত্যার কোন বিচার হতে পারবে না।
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘জিয়াউর রহমান এই হত্যাকা-ের সঙ্গে জড়িত ছিল। বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার তদন্তের সময়ই তার জড়িত থাকার তথ্যটি পাওয়া গিয়েছিল। কিন্তু জিয়াউর রহমান তখন বেঁচে না থাকায় আইন অনুযায়ী তাকে অভিযোগ পত্রে আসামী হিসেবে দেখানো যায়নি। একারণে খন্দকার মোশতাককেও বাদ দেয়া হয়েছে।’
আইনমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পেছনে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রও ছিল। জিয়াউর রহমান সরকার গঠনের পর শাহ আজিজুর রহমানকে প্রধানমন্ত্রী করেছিলেন। তিনি পাকিস্তানের দোসরদের নিয়ে মন্ত্রিসভা গঠন করেছিলেন। এতেই প্রমাণিত হয়, জিয়াউর রহমান আর যাই হোক তিনি প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না। তিনি বাংলাদেশের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেন নি। এইসব কর্মকা- থেকে আমাদের বুঝে নিতে হবে যে, সেইদিন বঙ্গবন্ধুসহ তাঁর পরিবারের ১৭ জন সদস্যকে হত্যা করা হয়েছিল বাংলাদেশকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য।
তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান বলেন, বাঙালি জাতি বঙ্গবন্ধুকে হত্যার কলঙ্কমুক্ত হওয়ার দিন গুণছে। তাই যারা এ হত্যাকা-ের নেপথ্যে রয়েছে তাদের চিহ্নিত করতে হবে।