বাসস দেশ-১৬ : ভুল আসামি জাহালম : দুদকের সেই ১১ কর্মকর্তার বিবরণ চেয়েছে হাইকোর্ট

102

বাসস দেশ-১৬
হাইকোর্ট-আদেশ
ভুল আসামি জাহালম : দুদকের সেই ১১ কর্মকর্তার বিবরণ চেয়েছে হাইকোর্ট
ঢাকা, ২১ আগষ্ট ২০১৯ (বাসস): ভুল আসামি হয়ে ৩ বছর কারাগারে থাকা পাটকল শ্রমিক নিরীহ জাহালমকে আসামি করে ঋণ জালিয়াতির ২৬ মামলার ১১ তদন্ত কর্মকর্তার তালিকা চেয়েছে হাইকোর্ট।
তাদের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে বিভাগীয় মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন। কি কারণে এসব কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হয়েছে তা ২৮ আগস্ট জানাতে নির্দেশ দিয়েছে আজ আদালত। বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ আজ এ আদেশ দেয়।
আদালতে দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেডের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. আসাদুজ্জামান ও সোনালী ব্যাংকের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার শেখ মো. জাকির হোসেন।
গত ১৭ এপ্রিল জাহালম কান্ডে কে বা কারা দায়ী তা দেখার জন্য এ বিষয়ে দুদকের প্রতিবেদন চেয়েছিলো আদালত। সে অনুসারে দুদকের পরিচালক (লিগ্যাল) এবং এ সংক্রান্ত দুদকের তদন্ত কমিটির প্রধান আবুল হাসনাত মো. আব্দুল ওয়াদুদের দেয়া প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সার্বিক বিবেচনায় প্রতীয়মান হয়েছে যে, জাহালমকে আবু সালেকরূপে চিহ্নিত করার যে ভুলটি হয়েছে তা দুদকের তদন্তকারী কর্মকর্তাদের কারণেই ঘটেছে। এমন প্রতিবেদনের বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কী সিদ্ধান্ত নেবেন তা দেখতে চেয়েছিলেন হাইকোর্ট।
এ বিষয়ে আইনজীবী খুরশীদ আলম খান জানান, আদালতের এ নির্দেশনা মোতাবেক একটি প্রতিবেদন দিয়েছি। আদালতকে দেখিয়েছি ১১ জন তদন্ত কর্মকর্তাকে শোকজ করা হয়েছে। তারা এর জবাব দিয়েছে। দুদক তাদের জবাবে সন্তুষ্ট না হয়ে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রুজু করেছে। আর এই ঋণ জালিয়াতির ৩৩টি মামলা পুনরায় তদন্তের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আদালত জানতে চেয়েছে এই ১১ জন কারা, তাদের বিরুদ্ধে কী কারণে মামলা রুজু করা হয়েছে। তা আগামী বুধবারের মধ্যে আদালতে দাখিল করতে হবে।
এর আগে ভুল আসামি হয়ে ৩ বছর কারাগারে নিরীহ জাহালম সব মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়ে হাইকোর্টের নির্দেশে গত ৩ ফেব্রুয়ারি মুক্তি পান। আদালত এই ভুল তদন্তের সঙ্গে কারা জড়িত, তাঁদের চিহ্নিত করারও নির্দেশ দিয়েছিল। না হলে আদালত এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবে বলে ওইদিন আদেশে উল্লেখ করা হয়।
সোনালী ব্যাংকের প্রায় সাড়ে ১৮ কোটি টাকা জালিয়াতির অভিযোগে আবু সালেকের বিরুদ্ধে ৩৩টি মামলা হয়। এর মধ্যে ২৬টিতে জাহালমকে আসামি আবু সালেক হিসিবে চিহ্নিত করে অভিযোগপত্র (চার্জসিট) দেয় দুদক। চিঠি পাওয়ার পর দুদক কার্যালয়ে হাজির হয়ে পাঁচ বছর আগে জাহালম বলেছিলেন, তিনি সালেক নন। কিন্তু নিরীহ পাটকল শ্রমিক জাহালমের কথা সেদিন দুদকের কেউ বিশ্বাস করেনি। ২০১৬ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি দুদকের এসব মামলায় জাহালম গ্রেফতার হন। তিনি জেল খাটছেন, আদালতে হাজিরা দিয়ে চলেছেন।
গত ৩০ জানুয়ারি একটি জাতীয় দৈনিকে ‘স্যার, আমি জাহালম, সালেক না’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এ প্রতিবেদনটি ওইদিন এ হাইকোর্ট বেঞ্চের নজরে আনেন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী অমিত দাশ গুপ্ত। শুনানি নিয়ে আদালত জাহালমের আটকাদেশ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে স্বতঃপ্রণোদিত রুল জারি করে।
বাসস/এএসজি/ডিএ/১৭৪০/কেএমকে