শিমুলিয়া ঘাটে ঢাকামুখী মানুষের ঢল

153
;

মুন্সীগঞ্জ, ২৩ জুন, ২০১৮ (বাসস) : দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অন্যতম প্রবেশ দ্বার শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি ও মাঝিকান্দি নৌ-রুটের শিমুলিয়া ঘাটে শনিবার ঢাকামুখী হাজার হাজার যাত্রীর ঢল নেমেছে। শিমুলিয়া থেকে ঢাকামুখী বাসের জন্য যাত্রীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে যাত্রীদের । বিশেষ করে মহিলা, শিশু ও বৃদ্ধদের দুর্ভোগ ছিল চোখে পড়ার মত। অতিরিক্ত যাত্রীর চাপেই এমনটি হয়েছে। এ সুযোগে বাসগুলো যাত্রীদের নিকট থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ রুটের ৪টি রোরোসহ মোট ২০টি ফেরি দিয়ে যাত্রীসহ যানবাহন পারাপারে ব্যস্ত ছিল ফেরি কর্তৃপক্ষ। পদ্মার ওপার থেকে ফেরিতেও এসেছে অসংখ্য যানবাহন। ঘাটে যানজট না থাকলেও আছে ঈদের ছুটিতে যাওয়া ঘরমুখো যাত্রীদের কর্মস্থলে ফেরার জট ছিল চোখে পড়ার মত। যাত্রীরা লঞ্চ, সিবোট ও ফেরিতে করে নদী পার হয়ে এ ব্যাপারে ঢাকা-মাওয়া লোকাল বাসে করে ঢাকায় ফেরার কারণে অতিরিক্ত যাত্রীর চাপে এ জট দেখা দেয়। আর এ সুযোগে এক শ্রেণীর অসাধু পরিবহন ব্যবসায়ী এসব যাত্রীর ঢলকে কাজে লাগিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে অতিরিক্ত অর্থ। ঢাকা-মাওয়া রুটের লোকাল পরিবহনগুলো ৭০ টাকা নির্ধারিত ভাড়ার স্থলে নিচ্ছে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত। আর কাউন্টার থেকে যাত্রী প্রতি ভাড়া কাটা হচ্ছে ১০০ টাকা করে।
শনিবার সরেজমিনে শিমুলিয়া ঘাটে গিয়ে দেখা যায় লঞ্চ, সিবোট ও ফেরিতে করে অসংখ্য যাত্রী পদ্মা নদী পার হয়ে শিমুলিয়া ঘাটে এসে নামছে। এ সময়ে কাঁঠালবাড়ি ও মাঝিকান্দি থেকে প্রায় প্রতিটি লঞ্চ ধারণ ক্ষমতার চেয়ে ৩ থেকে ৪ গুণ যাত্রী নিয়ে পদ্মা পাড়ি দিয়ে ঘাটে এসে ভিড়ছে। শিমুলিয়া ঘাটে এসে এসব যাত্রী প্রচন্ড গরমের মধ্যে বাসের জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে রয়েছে। এ সময়ে কথা হয় শরীয়তপুরের জাজিরার গঙ্গানগর থেকে আসা ঢাকাগামী যাত্রী সায়লা আক্তারের সাথে।
তিনি বলেন, ১০০ টাকা দিয়ে টিকিট কেটে ১ ঘন্টা যাবত লাইনে দাঁড়িয়ে রয়েছি। প্রচন্ড গরমে আমার কোলে থাকা ৭ মাসের বাচ্চাটি প্রায় অসুস্থ হয়ে পড়েছে। ভাবছিলাম শনিবার ভিড় কম হবে, এসে দেখি ভিড় একটুও কমেনি। তাই বাধ্য হয়েই অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে ঢাকায় যেতে হচ্ছে। এ রকম ভাষ্য এ রুটে চলাচলরত অসংখ্য যাত্রীর। তার মত বহু যাত্রী শিমুলিয়া ঘাটে বাসের অপেক্ষায় চরম দুর্ভোগের শিকার হন।
অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের ব্যাপারে লৌহজং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মনির হোসেনের সাথে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, বৃহস্পতিবার বিকেলে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগে বেশ কয়েকটি পরিবহনকে জরিমানা করা হয়েছে এবং আপন পরিবহনের কাউন্টারটি সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে। এত কিছুর পরেও যখন অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধ হয়নি, আমি বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখছি।
বিআইডব্লিউটিএ’র শিমুলিয়া ঘাটের ট্রাফিক পরিদর্শক মোঃ সেলাইমান বলেন, ঢাকামুখী যাত্রীদের চাপ রয়েছে। তবে শিমুলিয়া ঘাট থেকে অল্প যাত্রী নিয়ে লঞ্চগুলো কাঁঠালবাড়ি যাচ্ছে এবং সেখান থেকে যাত্রী বোঝাই করে লঞ্চগুলো এ ঘাটে এসে যাত্রী নামিয়ে দিয়ে আবার চলে যাচ্ছে। অতিরিক্ত যাত্রী ওপার থেকেই আসছে। আমাদের এখানে কিছু করার নেই।