বাসস দেশ-২২ : রাবেয়া-রোকেয়ার পরবর্র্তী চিকিৎসা ক্রনিও প্লাষ্টি

285

বাসস দেশ-২২
অপারেশন-সাফল্য
রাবেয়া-রোকেয়ার পরবর্র্তী চিকিৎসা ক্রনিও প্লাষ্টি
ঢাকা, ১০ আগস্ট, ২০১৯ (বাসস) : জমজ মাথার রাবেয়া-রোকেয়ার প্রথম ধাপের সফল অপারেশনের পর পরবর্তী চিকিৎসা ক্রনিও প্লাষ্টি। এর সময় নির্ধারিত হয়েছে ২/৩ মাস পর।
আজ ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচ) কমান্ড্যান্ট কনফারেন্স রুমে রাবেয়া ও রোকেয়ার সফল অপারেশনের পর আয়োজিত এক সাংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠানে এ কথা জানানো হয়।
আজ আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আজকে তাদের পৃথকীকরণের ৮ম দিন অতিবাহিত হচ্ছে। অপারেশনের পর এখানে তারা কিছু ঝুঁকি সত্ত্বেও স্থিতিশীল রয়েছে। বর্তমানে রাবেয়া ও রোকেয়া সিএমএইচের পোষ্ট এ্যানেসথেটিক কেয়ার ইউনিট বা (পিএসিইউ)তে অবস্থান করছে এবং শিশু হাসপাতালের নিউরো ইনটেনসিভিস্টদের তত্ত্বাবধানের রয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রাবেয়া ও রোকেয়ার এই শল্য চিকিৎসাটি কয়েকটি ধাপে সম্পন্ন হয়। প্রথম ধাপে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং চলতি বছরের ৪ জানুয়ারি থেকে হাংগেরীতে ৪৮টি ছোট বড় সার্জারী সম্পন্ন হবার পর ২২ জুলাই তাদের অস্ত্রোপচারের সবচাইতে জটিল অংশ ‘জমজ মস্তিষ্ক’ আলাদাকরণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় হাংগেরী থেকে তাদেরকে ঢাকা সিএমএইচে নিয়ে আসা হয়। অন্যদিকে ১ আগস্ট মাথা পৃথকীকরণের জটিল অপারেশনটি শুরু হয়ে ৩৩ ঘন্টা ব্যাপী চলে এবং ২ আগস্ট সকাল সাড়ে ১০টায় সফলভাবে অপারেশনটি সম্পন্ন হয়।
এই অস্ত্রপচারে হাংগেরী বিশেষজ্ঞদের সাথে সিএমএইচ এর নিউরো এ্যানেসথেসিওলজিস্টদের তত্ত্বাবধানে নিউরো ও প্লাষ্টিক সার্জনগণ সহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ,শেখ হাসিনা বার্ণ ইনস্টিটিউট, হার্ট ফাউন্ডেশন, নিউরো সায়েন্স ইনস্টিটিউট, সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল ও শিশু হাসপাতালের শতাধিক সার্জনসহ সংশ্লিষ্টরা সম্পৃক্ত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে সামরিক চিকিৎসা সার্ভিস মহাপরিদপ্তরের মহাপরিচালক সংসদ সদস্য ডা: হাবিব ই মিল্লাত;ঢাকা সিএমএইচের কমান্ড্যান্ট মেজর জেনারেল মো: ফসিউর রহমান; শেখ হাসিনা বার্ণ এন্ড প্লাস্টিক সার্জারী ইনস্টিটিউটের প্রধান সমন্বয়কারী অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তৌফিকুল হাসান সিদ্দিকী;একশন ফর ডিফেন্সলেস পিপল এর ডা: গ্রেগ পাটাকি (প্লাস্টিক সার্জন); ডা: এনড্রুস চকে (নিউরো সার্জন); ডা: মার্সেল (পেডিয়াট্রিকস ইনটেন্সিভিস্ট) এবং রাবেয়া-রোকেয়ার বাবা ও মা উপস্থিত ছিলেন।
এসময় দেশী-বিদেশী প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা অংশগ্রহণ করেন।
সংশ্ল্ষ্টিরা এসময় রাবেয়া – রোকেয়ার সফল অপারেশন সম্পর্কে সাংবাদিকদের বিস্তারিত বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।
আইএসপিআর সূত্র জানায়,এটি একটি বিরল ধরনের অপারেশন।সারা বিশ্বেই খুব অল্প পরিমাণে হয়েছে।সাফল্যের হারও খুব বেশী নয়।বিশ্বে ২.৫ মিলিয়ন জীবিত জমজ বাচ্চাদের মধ্যে মাত্র একটি মাথা জোড়া লাগানো বাচ্চা জন্ম নেয়। প্রায় ৪০ শতাংশ মাথা জোড়া লাগানো শিশু মৃত অবস্থায় জন্ম নেয় এবং আরো এক তৃতীয়াংশ শিশু ২৪ ঘন্টার মধ্যেই মৃত্যুবরণ করে। তবে শতকরা ২৫ ভাগ শিশু বেঁচে থাকে জমজ মাথা নিয়ে যাদের শল্য চিকিৎসার মাধ্যমে আলাদা করবার সুযোগ থাকে।
উল্লেখ্য,পাবনা জেলার চাটমোহরের রফিকুল ইসলাম ও তাসলিমা বেগম দম্পতির সন্তান রাবেয়া ও রোকেয়া স্থানীয় একটি ক্লিনিকে জন্ম নেয়া। এই দুই শিশুর জন্মের পরই তাদের শিক্ষক মা-বাবা সমাজের নানা কুসংস্ককারের শিকার হয়।পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাদের নিয়ে আসা হয়।
বাসস/আইএসপিআর/এসএস/১৯৩০/-কেএমকে