ঈদের আগে সাংবাদিকদের বেতন-বোনাস মহার্ঘ্য ভাতা থেকে বঞ্চিত করতেই নোয়াবের রিট : বিএফইউজে-ডিইউজেসহ ১০ সাংবাদিক ইউনিয়ন

280

ঢাকা , ৭ আগস্ট, ২০১৯ (বাসস) : অবিলম্বে ৯ম ওয়েজবোর্ডের রোয়েদাদের গেজেট প্রকাশের জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন বিএফইউজে-বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)সহ ১০ সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ।
৯ম ওয়েজবোর্ডের রোয়েদাদের গেজেট প্রকাশের প্রাক্কালে নোয়াবের রিট আবেদনের ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করে আজ একযৌথ বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, “যখন সাংবাদিক সমাজ ৯ম ওয়েজবোর্ডের গেজেটের অপেক্ষায় তখন গোপনে হাইকোর্টে গিয়ে একটি মীমাংসিত বিষয়কে বিলম্বিত করার জন্য নোয়াব এই কাপুরুষোচিত কাজ করেছে।”
এ দিকে নোয়াবের রিটের প্রতিবাদে আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করেছে বিএফইউজে। একই সঙ্গে সারাদেশে অঙ্গ ইউনিয়নগুলোও বিক্ষোভ সমাবেশ করবে বলে বিবৃতিতে বলা হয়।
বিএফইউজে সভাপতি মোল্লা জালাল, ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব আবদুল মজিদ, ডিইউজের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি খন্দকার মোজাম্মেল হক ও সাধারণ সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরীসহ অন্যান্য সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘নোয়াবের এ ধরনের হঠকারী পদক্ষেপ সংবাদপত্র শিল্পে চরম নৈরাজ্যের সৃষ্টি করবে। যা মালিক ও সাংবাদিকদের মধ্যে বিভেদের দেয়াল তৈরি করবে। এর সূত্র ধরে পুরো সংবাদপত্র শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’ বিবৃতিতে নেতারা বলেন, ৯ম ওয়েজবোর্ড সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভাপতি আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে বিষয়টির নিষ্পত্তি হওয়ার পরও নোয়াবের হাইকোর্টে রিট করা উদ্দেশ্যমূলক। তারা বলেন, সেই বৈঠকে নোয়াবের সভাপতি ও প্রথম আলোর সম্পাদক-প্রকাশক মতিউর রহমান এবং সহ-সভাপতি ও সমকালের প্রকাশক একে আজাদ উপস্থিত ছিলেন। তারপরও এ ধরনের রিট করে নৈরাজ্য সৃষ্টির অপচেষ্টা দুই পক্ষের মধ্যে আস্থার সংকট তৈরি করবে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, ওয়েজবোর্ড শুধু সাংবাদিক-শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতার ভাউচার নয়, এটি সংবাদপত্র শিল্পের একমাত্র আইন। ভবিষ্যতে এই আইনকে ভিত্তি করেই গণমাধ্যম আইন পাস হবে। সুতরাং সংবাদপত্র প্রকাশ করতে হলে আইন মানতেই হবে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, কোরবানির ঈদের আগে সাংবাদিকরা স্বাভাবিকভাবেই আশা করেছিলেন ৯ম ওয়েজবোর্ড রোয়েদাদ অনুযায়ী বেতন ও বোনাস পাবেন। কিন্তু নোয়াব মামলা করে সাংবাদিক-শ্রমিক-কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতাও না দেয়ার হীন অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে।
বিদ্যমান পরিস্থিতিতে নেতৃবৃন্দ এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী এবং বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা ও দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, তাঁর (প্রধানমন্ত্রী) সদিচ্ছা ও নির্দেশে দীর্ঘদিন পর ৯ম ওয়েজবোর্ডের সুপারিশ মন্ত্রিসভায় উত্থাপিত হয়েছিল। তাঁর আন্তরিকতাতেই মহার্ঘ্য ভাতার প্রজ্ঞাপন জারি হয় উল্লেখ করে নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, তাঁরই নির্দেশে গণমাধ্যম কর্মী আইন চূড়ান্ত হয়ে সংসদে পাসের অপেক্ষায় রয়েছে। অথচ চিহ্নিত একটি মহল ইচ্ছাকৃতভাবে মিডিয়ায় নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে সরকারকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে হীনস্বার্থ হাসিল করতেই নবম ওয়েজ বোর্ড নিয়ে নানা ধরনের ঘৃণ্য কর্মকান্ডে লিপ্ত হয়েছে।
বিবৃতিতে আরও স্বাক্ষর করেন চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাঈনুদ্দিন দুলাল, সাধারণ সম্পাদক হাসান ফেরদৌস, খুলনা সাংবাদিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হুমায়ুন কবীর, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নেয়ামুল হোসেন কচি, যশোর সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সাজেদ রহমান বকুল, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রুবেল, বগুড়া সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আমজাদ হোসেন মিন্টু, সাধারণ সম্পাদক জিএম রউফ, ময়মনসিংহ সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আতাউল করীম খোকন, সাধারণ সম্পাদক মীর গোলাম মোস্তফা, রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কাজী শাহেদ, সাধারণ সম্পাদক তানজিমুল হক, কক্সবাজার সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আবু তাহের, সাধারণ সম্পাদক জাহেদ সরওয়ার সোহেল, নারায়ণগঞ্জ সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুস সালাম, সাধারণ সম্পাদক আফজাল হোসেন পন্টি, কুষ্টিয়া সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রাশেদুল ইসলাম বিপ্লব, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মিলন উল্লাহ।