বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠকুরের প্রয়াণ দিবস পালিত

359

ঢাকা, ৬ আগস্ট, ২০১৯ (বাসস) : আজ ছিল ২২ শ্রাবন । বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠকুরের ৭৮তম প্রয়াণ দিবস। এ উপলক্ষে বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচির আয়োজন করে।
বাংলা একাডেমি এ উপলক্ষে আজ বিকেল ৪টায় শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে এক সেমিনারের আয়োজন করে। এতে মূলপ্রবন্ধ পাঠ করেন অধ্যাপক সৈয়দ আজিজুল হক। সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির সভাপতি ড. আানিসুজ্জামান। এছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন কবির মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিস্তারিত কর্মসূচির আয়োজন করে।
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি বিজড়িত নওগাঁ’র পতিসরে আলোচনা সভা ও স্মৃতিচারনের মধ্যে দিয়ে কবির ৭৮তম মহাপ্রয়াণ দিবস পালিত হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুর ১টায় পতিসর রথীন্দ্রনাথ ইনষ্টিটিউশন মাঠে নওগাঁ-৬ রানীনগর-আত্রাই সংসদীয় আসনের সংসদ সদস্য মোঃ ইসরাফিল আলম এমপি রবীন্দ্রনাথের গ্রাম উন্নয়ন ও সমাজ ভাবনা বিষয়ে আয়োজিত সেমিনারের উদ্বোধন করেন।
অনুষ্ঠানে ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার সঞ্জীব কুমার ভাটী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। রথীন্দ্রনাথ ইনষ্টিটিউশনের সভাপতি ও রবীন্দ্র স্মৃতি সংগ্রাহক এম মতিউর রহমান মামুনের সভাপতিত্বে আয়োজিত সেমিনারে মুল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রবীন্দ্র গবেষক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান।
মহাকালের চেনা পথ ধরে প্রতিবছর বাইশে শ্রাবণ আসে। এই বাইশে শ্রাবণ বিশ্বব্যাপী রবিভক্তদের কাছে এদিনটি শোকের, শূন্যতার। রবীন্দ্র কাব্যসাহিত্যের বিশাল একটি অংশে যে পরমার্থের সন্ধান করেছিলেন সেই পরমার্থের সাথে তিনি লীন হয়েছিলেন এদিন।
রবীন্দ্রকাব্যে মৃত্যু এসেছে বিভিন্নভাবে। জীবদ্দশায় মৃত্যুকে তিনি জয় করেছেন বারবার। মৃত্যুবন্ধনা করেছেন তিনি এভাবে-‘মরণ রে, তুঁহু মম শ্যাম সমান। মেঘবরণ তুঝ, মেঘ জটাজুট! রক্ত কমলকর, রক্ত-অধরপুট, তাপ বিমোচন করুণ কোর তব মৃত্যু-অমৃত করে দান ॥’
আগস্টের প্রথম দিন দুপুরবেলা থেকেই রবীন্দ্রনাথের হিক্কা শুরু হয়। কবি কাতর স্বরে তখন উপস্থিত সবাইকে বলেছিলেন, ‘একটা কিছু করো, দেখতে পাচ্ছো না কী রকম কষ্ট পাচ্ছি।’ পরের দিন হিক্কা থামানোর জন্য ময়ূরের পালক পুড়িয়ে খাওয়ানো হলেও তাতে কিছুমাত্র লাঘব হল না। অগস্টের ৩ তারিখ থেকে কিডনিও নিঃসাড় হয়ে পড়ে। ৬ অগস্ট রাখিপূর্ণিমার দিন কবিকে পূবদিকে মাথা করে শোয়ানো হল। পরদিন ২২শে শ্রাবণ, ৭ আগস্ট রবীন্দ্রনাথের কানের কাছে জপ করা হলো ব্রাহ্মমন্ত্র ‘শান্তম, শিবম, অদ্বৈতম…’ ‘…তমসো মা জ্যোতির্গময়…’।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তখন মৃত্যুপথযাত্রী। জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ির ঘড়িতে তখন ২২শে শ্রাবণের বেলা ১২টা বেজে ১০ মিনিট। কবি চলে গেলেন অমৃতআলোকে।
রবীন্দ্র নাথ প্রথম নোবেল বিজয়ী বাঙ্গালী কবি । ১৯১৩ সালে গীতাঞ্জলী কাব্য গ্রন্থের জন্য তিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হন। কবির গান-কবিতা, বাণী এই অঞ্চলের মানুষের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তির ক্ষেত্রে প্রভূত সাহস যোগায়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধে শুধু নয়, চিরকালই কবির রচনাসমূহ প্রাণের সঞ্চার করে। আমাদের প্রতিটি সংগ্রামেই কবির চিরায়ত রচনাসমগ্র আজীবন স্বরণের র্র্শীষতায় আবিষ্ট হয়ে আছে।
তাঁর লেখা ‘আমার সোনার বাংলা/আমি তোমায় ভালোবাসি’ বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত। মুক্তিযুদ্ধের সময়ও প্রেরণা যুগিয়েছিল তাঁর অনেক গান।