বাজিস-১ : জয়পুরহাটের বিভিন্ন পশুরহাটে জমে উঠেছে বেচা-কেনা

267

বাজিস-১
জয়পুরহাট-কোরবানীর গরু
জয়পুরহাটের বিভিন্ন পশুরহাটে জমে উঠেছে বেচা-কেনা
জয়পুরহাট, ৪ আগস্ট, ২০১৯ (বাসস) : ঈদুল আজহা উপলক্ষে জেলায় কোরবানীর জন্য ১ লাখ ৫০ হাজার পশু মজুদ রয়েছে। পশুর হাটবাজারগুলোতে কেনা-বেচাও জমে উঠেছে।
জেলা প্রাণী সম্পদ দপ্তর সূত্র বাসস’কে জানায়, দেশীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করে মোটাতাজা করণ কর্মসূচির আওতায় খামারীদের নিকট বর্তমানে ১ লাখ ৫০ হাজার পশু মজুদ রয়েছে। যা দিয়ে জেলার কোরবানীর চাহিদা মিটিয়ে ২০ হাজার পশু থাকবে অতিরিক্ত। ছোট বড় মিলে জেলায় ১২ হাজার ২২৮টি পশুর খামারে বিক্রয় উপযোগী মজুদ পশুর সংখ্যা হচ্ছে ষাঁড় ২৬ হাজার ৮০৯ টি, বলদ ২৩ হাজার ১৯৬ টি, গাভী ১৭ হাজার ২৭৭ টি, ছাগল ৬৭ হাজার ৯০৮ টি ও ভেড়া রয়েছে ১৪ হাজার ৮১০ টি।
জেলা শহরের সবচেয়ে বড় পশুরহাট নতুনহাট ঘুরে ক্রেতা বিক্রেতা ও ইজাদারের সঙ্গে আলাপ কালে জানা যায়, সর্বনি¤œ ২১ হাজার থেকে শুরু করে ৪ লাখ ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত গরু কেনা বেচা হয়েছে । নতুনহাট পশুহাটের ইজারাদার কালীচরণ আগরওয়ালা ও জাহিদ ইকবাল একথা জানান। গ্রামীণ পর্যায়ে গরু-ছাগলের খামার তৈরিতে সরকারের নানামূখী আয় বর্ধনমূলক কর্মসূচি বাস্তবায়নের ফলে সাধারণ মানুষ এখন অভাবকে দূরে ঠেলে দিয়ে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন গরু-ছাগলের খামার করে। স্থানীয় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ’জাকস ফাউন্ডেশন’ দেশীয় পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজাকরণ কর্মসূচির আওতায় ৩৬ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করেছে। জেলার নতুনহাট, জামালগঞ্জ, পাঁচবিবি, দূর্গাদহ, বটতলী, ইটাখোলা, পুনট, আক্কেলপুর কোরবানীর পশুরহাট ঘুরে জানা যায়, সামর্থ্য অনুযায়ী ক্রেতারা তাদের গরু-ছাগল কিনছেন। জেলা শহরের বুলুপাড়া এলাকার শহিদুল আলম ৫৮ হাজার টাকায় ৭৫/৮০ কেজি ওজনের একটি গরু কিনেছেন। বাজারে ১১০ থেকে ১২০ কেজি মাংস হবে এমন গরু বিক্রি হয়েছে ৭০ থেকে ৭৫ হাজার টাকা। আগ্রাদিগুন এলাকার খামারী আব্দুস সালাম একটি গরুর দাম হাকছেন ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা। সাড়ে ১৪ মণ ওজনের বাজারের সেরা গরু এটি। শহরের নতুনহাটে শনিবার ওঠা ওই গরুটির ৩ লাখ ৯০ হাজার টাকা পর্যন্ত দাম করছেন ক্রেতারা। ভারতীয় গরু না আসলে খামারীরা এবার লাভবান হবেন এমন প্রত্যাশার কথা জানান কুঠিবাড়ি ব্রীজ এলাকার খামারী দুলু মিয়া ও বনখুর গ্রামের জয়। গরুর পাশাপাশি ছাগলও বিক্রি হচ্ছে। ১৫ থেকে ২৫ কেজি মাংস হবে এমন ছাগল ৩৫ হাজার থেকে ৪৫ হাজার পর্যন্ত বিক্রি করতে দেখা গেছে। জাল টাকা শনাক্ত করণের জন্য বিভিন্ন ব্যাংক থেকে মেশিন বসানো হয়েছে। প্রতিটি হাটে গরুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য প্রাণী সম্পদ বিভাগের ভ্যাটেনারী সার্জনের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের টিম সার্বক্ষণিক ভাবে দায়িত্ব পালন করছেন বলে জানান, জেলা প্রাণী সম্পদ রোগ অনুসন্ধান কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা: রুস্তম আলী । জেলা শহরের বড় পশুর হাট নামে খ্যাত নতুনহাটের এবারের ডাক হয়েছে ১ কোটি ৯৯ লাখ টাকা যা গত বছর ছিল ১ কোটি ৭২ লাখ টাকা। জয়পুরহাটের আশে পাশের জেলা গুলোতে বন্যার কারণে পশু বেচা কেনায় কিছুটা প্রভাব পড়েছে বলে জানান, ইজারাদার কালীচরণ আগরওয়ালা। ফলে লাভের অংকেও এর প্রভাব পড়বে বলে জানান তিনি। বাজারের আইন-শৃংখলা রক্ষায় পশুর হাট কমিটির পক্ষ থেকে মাইকে সতর্কতামূলক প্রচার চালানোর পাশাপাশি সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার উজ্জল কুমার রায় বলেন, আইন-শৃংখলা বাহিনীর কড়া নজরদারী রয়েছে হাটবাজারগুলোতে। হাটবাজারগুলোতে দেশীয় গরুর আমদানী বেশী হলেও ভারতীয় গরু কম দেখা যাচ্ছে। তবে দেশী গরুর চাহিদা বেশি বলে জানান বিক্রেতারা। দেশের অন্যান্য জেলা বিশেষ করে ঢাকা, সিলেট ও চট্টগ্রাম থেকে আগত ব্যবসায়ীরা গরু কিনে ট্রাকে করে নিয়ে যাচ্ছেন বলে জানান স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।
বাসস/সংবাদদাতা/১০০০/-নূসী