মায়ের দুধ খাওয়ানোর অগ্রগতির ধারা অব্যাহত রাখতে প্রধানমন্ত্রীর আহবান

211

ঢাকা, ৩১ জুলাই, ২০১৯ (বাসস) : শিশুকে মায়ের দুধ ও ঘরের তৈরি পরিপূরক খাবার খাওয়ানোর অগ্রগতির ধারাকে জোরদার করতে সংশ্লিষ্ট সকলকে আরো কার্যকরভাবে কাজ করার আহবান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা মাতৃ ও শিশু পুষ্টি বিষয়ে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে সক্ষম হব। এ জন্য সরকারি, বেসরকারি এবং সংশ্লিষ্ট সকল ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে আরো কার্যকরভাবে কাজ করতে হবে।’
বিশ্ব মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহ উপলক্ষে আজ এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার শিশুকে মায়ের দুধ খাওয়ানোর হার বৃদ্ধি এবং মাতৃ ও শিশু পুষ্টি উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। বর্তমানে ১ ঘণ্টার মধ্যে মায়ের দুধ খাওয়ানোর হার শতকরা ৬৯ এবং ৬ মাস পর্যন্ত শুধুমাত্র মায়ের দুধ খাওয়ানোর হার শতকরা ৬৫ এ উন্নতি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মাধ্যমে মা ও শিশু স্বাস্থ্যসেবাকে দোড়গোড়ায় পৌঁছে দিয়েছি।’
এইচপিএনএসপি ও দ্বিতীয় জাতীয় পুষ্টি কর্মপরিকল্পনার এনপিএএন২ এর আওতায় মাতৃ ও শিশু পুষ্টিসহ, স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়িত হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, গুড়া দুধ ও কৌটাজাত শিশু খাদ্যের ব্যবহারকে সর্বনিম্ন স্তরে নামিয়ে আনতে ‘মাতৃদুগ্ধ বিকল্প শিশুখাদ্য, বাণিজ্যিকভাবে প্রস্তুতকৃত শিশুর বাড়তি খাদ্য ও তা ব্যবহারের সরঞ্জামাদি (বিপণন), আইন, ২০১৩’ এবং এর বিধিমালা-২০১৭ প্রণয়ন করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশসহ বিশ্বের ১৫৫টি দেশে ‘মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহ-২০১৯’ উদ্যাপন করা হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। এবারের প্রতিপাদ্য ‘এ্যাম্পাওয়ার পেরেন্টস, আনএ্যাবল ব্রেস্টফিডিং : নাউ এন্ড ফর দ্য ফিউচার’ যা অত্যন্তসময়োপযোগী ও যথার্থ হয়েছে।’
সরকার মাতৃত্বকালীন ছুটি বেতনসহ ৬ মাসে উন্নীত করেছে, বেসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানেও এ ছুটির ব্যবস্থা করা প্রয়োজন উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ব্রেস্টফিডিং কর্নার স্থাপন করা হয়েছে। কর্মজীবী ল্যাকটেটিং মাদার সহায়তা তহবিল থেকে কর্মজীবী মায়েদের ভাতা দেয়া হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্রেস্টফিডিং ফাউন্ডেশনকে আরো শক্তিশালী করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, এ সকল কর্মসূচি বাস্তবায়নের ফলে- ‘ওয়ার্ল্ড ব্রেস্টফিডিং ট্রেন্ডস ইনেশিয়েটিভ (ডব্লিউবিটিআই) ২০১৫’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী বাংলাদেশ ১৫২টি দেশের মধ্যে ৩য় স্থান এবং ‘ইন্টারন্যাশনাল বেবি ফুড এ্যাকশন নেটওয়ার্ক (আইবিএফএএন) ২০১৮’ এর রিপোর্ট ‘স্টেট অব দ্য কোড বাই কান্ট্রি’ অনুযায়ী আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে প্রথম শ্রেণির কৃতিত্ব অর্জন করেছে।
তিনি বলেন, মাতৃত্বকালীন অধিকার সুরক্ষা নীতিমালা শিশুর পরিচর্যায় মা-বাবা উভয়েরই দায়িত্বকে গুরুত্বারোপ করে। বাবাকে শিশুর অন্যান্য পরিচর্যার দায়িত্ব পালনে উদ্বুদ্ধ হতে হবে। শিশুকে মায়ের দুধ ও ঘরের তৈরি পরিপূরক খাবার খাওয়ানোর সঠিক অভ্যাস গড়ে তুলতে মা বাবা উভয়কেই সচেতন হতে হবে।
তিনি ‘বিশ্ব মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহ ২০১৯’- এর সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।