স্বাধীনতার ঘোষণা দেয়ার দাবি জিয়াউর রহমান জীবদ্দশায় কখনো করেননি : তথ্যমন্ত্রী

422

চট্টগ্রাম, ৩০ জুলাই, ২০১৯ (বাসস) : তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, নিজে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন এমন দাবি জিয়াউর রহমান জীবদ্দশায় কখনো করেননি। ঘোষক নিয়ে বিএনপির এই মিথ্যাচার শুনতে পেলে নিজেই লজ্জা পেতেন।
তথ্যমন্ত্রী আজ দুপুরে চট্টগ্রাম শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা উপ- কমিটির উদ্যোগে ‘গৌরবের অভিযাত্রায় ৭০ বছর : ‘তারুণ্যের ভাবনায় আওয়ামী লীগ’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্যানেল আলোচকের বক্তব্য এসব কথা বলেন।
এর আগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তানভির অনিন্দ্য প্যানেল আলোচকদের কাছে বলেন বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে সুপ্রীম কোর্টের নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও কেউ কেউ বিভ্রান্তি ছড়ান। এ বিষয়ে সরকারের কোন পদক্ষেপ আছে কি-না তা তিনি জানতে চান।
হাছান মাহমুদ বলেন,‘স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয় মূলত জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর। নিজে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন এমন দাবী জিয়াউর রহমান জীবদ্দশায় কখনো করেননি। বিএনপি যেভাবে বলে, জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষক, আমার মনে হয় তিনি এমন মিথ্যাচার শুনতে পেতেন তা হলে লজ্জা পেতেন।’
প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী শাহ আলী ফরহাদের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে হাছান মাহমুদ ছাড়াও প্যানেল আলোচক ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, সাংসদ সাইমুম সরওয়ার কমল, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, সংসদ সদস্য ওয়াসিকা আয়েশা খাঁন, দক্ষিণ জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক মফিজুর রহমান প্রমূখ।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করা আর ঘোষণা দেয়ার মধ্যে পার্থক্য আছে। বঙ্গবন্ধু ঘোষণা দিয়েছিলেন, সে ঘোষণা বহুজন পাঠ করেছেন। বেতারের মাধ্যমে একাত্তরের ২৬ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা প্রথম পাঠ করেন তৎকালীন অবিভক্ত চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম. এ. হান্নান। এরপর চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগ নেতারা সিদ্ধান্ত নেন সেনাবাহিনীর অফিসার দিয়ে পাঠ করানোর, তখন জিয়াউর রহমানকে দিয়ে ২৭ মাচর্ পাঠ করানো হয়।
‘এ ছাড়া ২৬ মার্চ নিজের জীবন হাতের মুঠোয় নিয়ে চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগ কর্মী নূরুল হক শহরের বিভিন্ন স্থানে মাইকিং করে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা প্রচার করেন। নূরুল হকের মতো আরো অনেক মানুষ সারাদেশে মাইকিং করে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেছিলেন তখন’ বলেন হাছান মাহমুদ।
মন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে যারা এই বিতর্ক তৈরী করেছে তারা ইতিহাস বিকৃত করতে চায়। তবে মানুষ এখন প্রকৃত ইতিহাস জেনে গেছে। এরপর কেউ কেউ উচ্চ আদালতের আদেশ অমান্য করে জিয়াকে স্বাধীনতার ঘোষক বলার চেষ্টা করে। এ অবস্থায় পাঠচক্র করে নতুন প্রজন্মকে প্রকৃত ইতিহাস জানানোর জন্য ছাত্রলীগ উদ্যোগ নিতে পারে বলেও মন্তব্য করেন হাছান মাহমুদ।
এইচটি ইমাম বলেন, স্বাধীনতার পর বাংলাদেশকে আবারো পিছনে নিয়ে যাবার জন্য অনেক চক্রান্ত হয়েছে। জিয়াউর রহমান এবং এরশাদ দুজনে মুদ্রার এপিট ওপিট। তারা দ’ুজনেই ছিলেন পাকিস্তানের পক্ষে। এরশাদ দেশের কিছু উন্নয়ন করলেও তাদের মন ছিল অন্যদিকে।
বাংলাদেশকে সব সময় সঠিক পথে পরিচালিত করেছে আওয়ামী লীগ উল্লেখ করে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ১৯৮১ সালে দেশে আসার পর থেকে তৃণমূল পর্যায়ে সংগঠিত করেছেন আওয়ামীলীগকে। আমাদের সবকিছুর ঊর্ধ্বে বাংলাদেশ, সবকিছুর ঊর্ধ্বে থাকতে হবে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ।
চট্টগ্রামের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে আসা ছাত্রছাত্রী এবং তরুণ পেশাজীবীরা ভবিষ্যতে আওয়ামী লীগকে কীভাবে দেখতে চান, সে বিষয়ে অনেকে জানতে চাইলে মঞ্চ থেকে প্যানেল বক্তারা জবাব দেন।