মিল্ক ভিটার পাস্তুরিত দুধ বিক্রিতে বাধা নেই

177

ঢাকা, ২৯ জুলাই, ২০১৯ (বাসস) : মিল্কভিটার পাস্তুরিত দুধ উৎপাদন, সরবরাহ ও বিপননের ওপর হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা আট সপ্তাহের জন্য স্থগিত করে আদেশ দিয়েছেন সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের চেম্বার কোর্ট।
মিল্ক ভিটার পক্ষে আনা এক আবেদনের শুনানি করে আপিল বিভাগের চেম্বার কোর্ট বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান আজ এ আদেশ দেন। এর ফলে বাজারে মিল্কভিটার দুধ বিক্রিতে কোনো বাধা থাকছে না বলে জানায় আইনজীবীরা।
হাইকোর্ট আদেশ বহাল থাকায় মান নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসটিআইয়ের অনুমোদিত বাকি ১৩টি কোম্পানির পাস্তুরিত দুধ উৎপাদন, সরবরাহ ও বিপণন পাঁচ সপ্তাহ বন্ধই থাকছে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন মিল্কভিটার পক্ষের আইনজীবী মহিউদ্দিন মো. হানিফ ফরহাদ। চেম্বারকোর্টে আজ মিল্কভিটার পক্ষে শুনানি করেন এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। সঙ্গে ছিলেন ডিপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজি জিনাত হক ও আইনজীবী মহিউদ্দিন মো.হানিফ ফরহাদ।
এর আগে গতকাল হাইকোর্ট এক আদেশে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর উপাদান থাকায় বিএসটিআইয়ের লাইসেন্সধারী ১৪টি কোম্পানির পাস্তুরিত দুধ উৎপাদন, সরবরাহ ও বিক্রি পাঁচ সপ্তাহের জন্য বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে। লাইসেন্সধারী সব ব্র্যান্ডের পাস্তুরিত দুধে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর উপাদান আছে কি-না সে বিষয়ে চারটি প্রতিষ্ঠানের ল্যাবের পরীক্ষা প্রতিবেদন নিয়ে শুনানি শেষে এ আদেশ দেয় আদালত।
এক আদেশে বিএসটিআইয়ের লাইসেন্সধারী সব ব্র্যান্ডের পাস্তুরিত দুধে অ্যান্টিবায়োটিকসহ বিভিন্ন ক্ষতিকর উপাদান আছে কিনা, তা এক সপ্তাহের মধ্যে পরীক্ষা করতে গত ১৪ জুলাই চারটি ল্যাবকে নির্দেশ দেয়া হয়। চারটি ল্যাব হলো- ন্যাশনাল ফুড সেফটি ল্যাবরেটরি, বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ, ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ডায়রিয়াল ডিজিজ রিসার্চ, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআর,বি) ও সাভারের বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের গবেষণাগার। আদালতের আদেশ প্রতিপালন করে সংশ্লিষ্টরা আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন।
বাণিজ্যিকভাবে পাস্তুরিত দুধ সম্পর্কে ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ডায়রিয়াল ডিজিস রিসার্চ, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআর,বি) একটি গবেষণা গত বছরের ১৬ মে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। গণমাধ্যমে প্রকাশিত ওইসব প্রতিবেদন যুক্ত করে জনস্বার্থে হাইকোর্টে রিট করেন আইনজীবী ব্যারিস্টার মো. তানভীর আহমেদ। এ রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে গত বছর ২১ মে এক আদেশে বিশেষজ্ঞ ও গবেষকদের নিয়ে কমিটি গঠন করে বাজারে থাকা পাস্তুরিত দুধ পরীক্ষা করে প্রতিবেদন দিতে খাদ্য ও স্বাস্থ্যসচিব এবং বিএসটিআইয়ের মহাপরিচালককে নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট।
মিল্ক ভিটা ছাড়া অন্য কোম্পানি হলো- ১. আফতাব মিল্ক অ্যান্ড মিল্ক প্রোডাক্ট লিমিটেডের ‘আফতাব মিল্ক’; ২. আকিজ ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের ‘ফার্মফ্রেশ মিল্ক’; ৩. আমেরিকান ডেইরি লিমিটেডের ‘মো’; ৪. বারো আউলিয়া ডেইরি মিল্ক অ্যান্ড ফুডস লিমিটেডের ‘ডেইরি ফ্রেশ’; ৫. ব্র্যাক ডেইরি অ্যান্ড ফুড প্রজেক্টের ‘আড়ং ডেইরি’; ৬. ড্যানিশ ডেইরি ফার্ম লিমিটেডের ‘আয়রান’; ৭. ইছামতি ডেইরি অ্যান্ড ফুড প্রোডাক্টসের ‘পিউরা’; ৮. ইগলু ডেইরি লিমিটেডের ‘ঈগলু’; ৯. প্রাণ ডেইরি লিমিটেডের ‘প্রাণ মিল্ক’; ১০. উত্তরবঙ্গ ডেইরির ‘মিল্ক ফ্রেশ’; ১১. শিলাইদহ ডেইরির ‘আল্ট্রা’; ১২. পূর্ব বাংলা ডেইরি ফুড ইন্ডাস্ট্রিজের ‘আরওয়া’ এবং ১৩. তানিয়া ডেইরি অ্যান্ড ফুড প্রোডাক্টসের ‘সেইফ’।