ডেঙ্গু মহামারি রূপ নেয়ায় হন্ডুরাসের হাসপাতালগুলোতে রোগীর ঠাঁই নেই

205

লা পাজ, (হন্ডুরাস), ২৬ জুলাই, ২০১৯ (বাসস) : হন্ডুরাসের ৩২টি সরকারি হাসপাতালের ২৬ টিতে জায়গা মিলছে না রোগীর। কারণ, সেখানে ডেঙ্গু মহামারি আকারে রূপ নিয়েছে। দেশটির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিগত অর্ধ-শতকে ডেঙ্গু ভয়াবহতম রূপ নিয়েছে। খবর এএফপি’র।
চলতি বছর ২৮ হাজার লোক এ রোগে আক্রান্ত হয়। এদের মধ্যে ৫৪ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের অধিকাংশই শিশু।
এ মতাবস্থায় সেখানে জরুরী অবস্থা জারি করা হয়েছে। বাসাবাড়ি ও গণবসতিপূর্ণ এলাকায় এ রোগ সৃষ্টিকারি এডিস মশা নিধণ ও এ রোগ নির্মূলের বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে সেখানে।
পশ্চিমাঞ্চলীয় নগরী লা পাজে স্থানীয় চ্যাপেল হাসপাতালে দু’টি টেবিলে রোগী ভর্তির উঁচু ও স্তূপাকার ফোল্ডার এই রোগীর সংখ্যাধিক্যতার প্রমাণ।
হাসপাতালের এক কক্ষের ভেতর সারি সারি লাল, নীল মশারি বেষ্টিত বিছানাগুলোয় ডেঙ্গুর লক্ষণ সম্পন্ন যেমন, হার ও সংযোগ স্থলে ব্যাথা, উচ্চ তাপমাত্রা, বমি ও ডায়রিয়া এ ধরনের সমস্যায় ভোগা ১০ নারীর চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
হাসপাতালের সবচেয়ে সুবিধাজনক আটটি কক্ষের ছয়টিতে রয়েছে ডেঙ্গু রোগী। এমনকি করিডোরেও কয়েকটি বিছানা রয়েছে।
তিনটি কক্ষে মোট ২৬ জন শিশু ভর্তি রয়েছে। যাদের বয়স দুই থেকে ১৪ বছর। এই বয়সীদের মধ্যেই এ রোগের আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এদের শরীরে স্যালাইন দেয়া এবং পিতামাতা তাদের দেখাশোনা করছে।
কর্তব্যরত একজন নার্স জানান, এদের প্রত্যেকে শঙ্কামুক্ত নয়।
ক্রিসটা অ্যালেক্সজানড্রা পিনেডা নামে ৭ বছরের এক শিশুর শরীরের অবস্থা সবচেয়ে উদ্বেগ্নজনক।
হাসপাতালের মুখপাত্র মার্কো অ্যান্টেনিও রোদাস এএফপি’কে বলেন, ‘আমরা রোগীর সংকুলান করতে পাছিনা’।
তিনি বলেন, ‘ গত ২০ বছর ধরে এখানে কাজ করছি, এমন পরিস্থিতি কখনোই দেখিনি।’
গত সপ্তাহে ৫৩ থেকে ৭৮ জন রোগী এখানে ভর্তি হয়। গুরুতর রোগীদের অ্যাম্বুলেন্সে রাজধানী টেগুসিগালপা’র ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে। সেখানে ইতোমধ্যেই দুইজনের মৃত্যু হয়েছে বলে রোদাস উল্লেখ করেন।
প্রেসিডেন্ট জোয়ান ওরল্যান্ডো হারনেন্দেজ সোমবার রাজধানীতে ২৯৮ জন পৌর মেয়রকে প্রাদুর্ভাব দূর করায় বিশেষ তহবিল গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন।
হারনেন্দেজ বলেন, ‘এই মহামারি থেকে রক্ষার একমাত্র কার্যকরি উপায় হলো মশার প্রজনন বৃদ্ধির কারণগুলোর ধ্বংস সাধন এবং এর জন্যে আমাদের প্রতিটি ঘরে, কর্মস্থল ও প্রতিটি গণবসতিপূর্ণ এলাকায় এর জন্যে কিছু করা যেতে পারে।’
তিনি এই রোগ দূরীকরণ ও এর কারণ নির্মূলে সহযোগিতায় গীর্জা, সংবাদ প্রতিষ্ঠান ও ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের বড় ধরনের সমন্বয় ও সংহতির ঘোষণা দেন।
তিন মাসব্যাপি অব্যাহত বর্ষায় মশার বংশ বিস্তার ও বেশ কিছু সংখ্যক মশা উড়তে শুরু করায় এ ধরনের জটিল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।