বাজিস-১ : ভোলায় ১০১টি গৃহহীন পরিবার দুর্যোগ সহনীয় গৃহ পাচ্ছে

246

বাজিস-১
ভোলা-গৃহ-নির্মাণ
ভোলায় ১০১টি গৃহহীন পরিবার দুর্যোগ সহনীয় গৃহ পাচ্ছে
॥ হাসনাইন আহমেদ মুন্না ॥
ভোলা, ২২ জুলাই, ২০১৯ (বাসস) : জেলায় যাদের জমি আছে ঘর নেই এমন ১০১টি অসহায় পরিবারকে সরকারিভাবে দুর্যোগ সহনীয় গৃহ নির্মাণ করে দেয়া হচ্ছে।
দুূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে চলতি মাসের ১ তারিখ থেকে এসব ঘরের নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। ২ লাখ ৫৮ হাজার ৫৩১ টাকা করে ব্যয়ে এ মাসের মধ্যেই প্রত্যেকটি ঘরের কাজ সম্পন্ন করা হবে। ইতোমধ্যে গৃহ নির্মাণের কাজ ৭০ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। ৩’শ স্কায়ার ফিট জমির উপর নির্মিত এসব ঘর ২ কক্ষ বিশিষ্ট। সামনে খোলা বারান্দা থাকছে। এছাড়া পিছনে লবিসহ বাথরুম, টয়লেট ও রান্না ঘরের ব্যবস্থা রয়েছে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা এবি এম আকরাম হোসেন বাসস’কে বলেন, আমাদের সমাজে অনেক অসচ্ছল ও অসহায় পরিবার আছে, যাদের সামান্য জমি থাকলেও ভালো গৃহ নির্মাণের সামর্থ নেই। সেই সব পরিবারের জন্যই প্রধানমন্ত্রী উদ্যোগ নিয়ে এসব ঘর করে দিচ্ছেন। প্রতিটি ঘরের সামনের দিকে ১০ ফিট করে ২টি কক্ষ রয়েছে। চারদিকে পাকা দেয়াল এবং উপরে সবুজ রঙের টিন রয়েছে।
তিনি বলেন, এসব ঘর দুূর্যোগে প্রচন্ড সহনশীল। ২২০ কিলোমিটার বেগে বতাসের মধ্যে এসব ঘরের টিকে থাকার সক্ষমতা রয়েছে। ফলে মানুষের দুর্ভোগ কমে গিয়ে জান-মাল রক্ষা পাবে। এর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর সেই উদ্যোগ কেউ গৃহহীণ থাকবেনা, সেটা বাস্তবায়ন হচ্ছে। অন্যদিকে সাধারণ গরিব মানুষ উপকৃত হচ্ছেন। একই সাথে গৃহ প্রাপ্তির ফলে সমাজের অবহেলিত এসব মানুষের সামাজিক মর্যাদাও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জেলার মোট ১০১ টি ঘরের মধ্যে সদর উপজেলায় নির্মিত হচ্ছে ২৩টি, বোরহানউদ্দিনে ১৩টি, দৌলতখানে ১৪টি, লালমোহনে ১২টি, তজুমোদ্দিনে ১০টি, চরফ্যাশনে ১৪টি ও মনপুরায় ১৫টি ঘর নির্মাণ হচ্ছে।
সদর উপজেলার দক্ষিণ দিঘলদী ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের হর্নি কোড়ালীয়া গ্রামের বাসিন্দা তফুরা খাতুন (৭০)। গত ১৪ বছর আগে তার স্বামী মারা গেছেন। স্বামীর অসুস্থতার সময় অধিকাংশ সম্পতিই বিক্রি করেছেন। গৃহহীণ অসহায় বিধবা এ নারী সেই থেকে ছেলেদের সংসারে থাকছেন। এবার সরকারিভাবে উন্নত ঘর পেয়েছেন। তিনি প্রচন্ড খুশি।
তফুরা বাসস’কে বলেন, বহু আগেই স্বামীর রেখে যাওয়া ঘর ভেঙ্গে গেছে। ঘর আর মেরামত করার সামর্থ ছিলোনা। এতদিন ছেলেদের সংসারে থেকেছেন। এখন ঘর পেয়ে ছেলে, ছেলেদের বৌ ও নাতী-নাতনীদের কাছে তার মর্যাদা ও বেড়েছে। এজন্য তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান।
একই এলাকার গৃহ পেয়েছেন আরেক বিধবা তাহেরা খাতুন। তিনি দীর্ঘদিন ভাঙ্গাচোড়া একটি টিনের ছাপড়ার (আংশিক ঘর) মধ্যে এক ছেলে নিয়ে থাকতেন। এতে করে বর্ষা ও শীতে সবচে বেশি কষ্ট পেতেন। এখন সরকারি ঘর পাওয়াতে তার সেই কষ্ট থাকবেনা ভাবতেই আনন্দ লাগছে বলেন তিনি।
এ ব্যাপারে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মহমুদুর রহমান বাসস’কে জানান, দুূর্যোগ সহনীয় গৃহ নির্মাণ প্রকল্প প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি কর্মসূচি। কারণ ভোলা উপকূলীয় এলাকা হওয়ায় এখানে প্রায় সময় প্রাকৃতিক দুূর্যোগ দেখা দেয়। আর দুূর্যোগে এসব ঘর খুবই কাজে লাগবে। ভবিষ্যতে এ জেলায় দুূর্যোগ সহনীয় আরো গৃহ নির্মাণ করা হবে বলে জানান তিনি।
বাসস/এইচ এ এম/১০-৫৩/নূসী