বরগুনার রিফাত হত্যা তদন্তে হস্তক্ষেপ করবে না হাইকোর্ট

655

ঢাকা, ১৮ জুলাই, ২০১৯ (বাসস) : বরগুনায় প্রকাশ্যে কুপিয়ে রিফাত শরীফ হত্যা মামলার তদন্তে হস্তক্ষেপ করবে না হাইকোর্ট।
রিফাত শরীফের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিকে জিজ্ঞাসাবাদ, গ্রেফতার ও রিমান্ডে নেয়ার বিষয়টি আদালতের নজরে আনার পর বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ এ মন্তব্য করে।
নিহতের স্ত্রী মিন্নির বিষয়ে দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন উপস্থাপন করে আইনজীবী ফারুক হোসেন আদালতে বলেন, বাদীর সবচেয়ে আস্থাভাজন হিসেবে মিন্নিকে এক নম্বর সাক্ষী করা হয়েছে। অথচ তাকে ১২ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করে আদালতে তোলা হয়। আদালত পাঁচ দিনের রিমান্ড দিয়েছেন। এ বিষয়ে উচ্চ আদালতের দেখা উচিত। তার পক্ষে কোনো আইনজীবীও দাঁড়াচ্ছেন না। তখন আদালত বলেন, পুলিশ তদন্ত করছে। এটাতে আমরা ইন্টারফেয়ার করতে পারি না। আইনজীবী বলেন, তদন্ত হবে। কিন্তু সে তো সাক্ষী। তাকে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। আদালত বলেন, সে তো এখন অ্যারেস্ট। পুলিশ বলছে তার বিরুদ্ধে স্পিসিফিক অ্যালিগেশন আছে। এখন আপনি কিছু করতে হলে ফৌজদারি নিয়ম মেনে করুন। প্রোপার চ্যানেলে আসুন। আমরা তদন্তে ইন্টারফেয়ার করতে পারি না।
গত মঙ্গলবার দিনভর জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাত ৯টার দিকে মিন্নিকে গ্রেফতার দেখানো হয়। পরে গতকাল বুধবার ১৭ জুলাই মিন্নিকে বরগুনার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সিরাজুল ইসলাম গাজীর আদালতে হাজির করে ৭ দিনের রিমান্ড চায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। আদালত ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদেশ দেয় । মিন্নির পক্ষে কোনো আইনজীবী আদালতে উপস্থিত ছিলেন না।
২৬ জুন সকাল সাড়ে দশটার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের মূল ফটকের পাশে রিফাতকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে স্ত্রীর সামনে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে কয়েকজন যুবক। সে সময় নানাভাবে নিজেকে রক্ষার চেষ্টা করেও শেষ পর্যন্ত বাঁচতে পারেনি রিফাত। ওই ঘটনার একটি ভিডিও পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হলে তা ব্যাপক ভাইরাল হয়। সেখানে দেখা যায়, কয়েকজন যুবক রিফাতকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে একের পর আঘাত করছে। আর তাদের হাত থেকে স্বামীকে রক্ষার চেষ্টা করছেন রিফাতের স্ত্রী মিন্নি। ঘটনাস্থলে অনেকে উপস্থিত থাকলেও কেউ এগিয়ে আসেনি।
নৃশংস এ ঘটনায় নিহত রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বাদী হয়ে বরগুনা সদর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। তাতে বরগুনা শহরে চিহ্নিত সন্ত্রাসী সাব্বির আহম্মেদ ওরফে নয়ন বন্ড এবং তার সহযোগী রিফাত ফরাজী ও তার ছোট ভাই রিশান ফরাজীসহ ১২ জনকে আসামি এবং আরও চার-পাঁচজনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়।
হত্যাকান্ডে প্রধান আসামী নয়ন বন্ড পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়। গ্রেফতার হয়েছেন বেশ ক’জন আসামি।