বাসস দেশ-১৬ : পা হারানো রাসেলকে ক্ষতিপূরণের মাসিক কিস্তির টাকা দেয়নি গ্রিনলাইন

168

বাসস দেশ-১৬
হাইকোর্ট-আদেশ
পা হারানো রাসেলকে ক্ষতিপূরণের মাসিক কিস্তির টাকা দেয়নি গ্রিনলাইন
ঢাকা, ১৬ জুলাই, ২০১৯ (বাসস): রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে বাসচাপায় পা হারানো প্রাইভেটকার চালক রাসেল সরকারকে মাসিক পাঁচ লাখ টাকা কিস্তিতে ক্ষতিপূরণ শোধ করার আদেশ পালন করেনি গ্রিনলাইন কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে আগামী ২১ জুলাই পরবর্তী আদেশের জন্য দিন ঠিক করেছেন বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট বেঞ্চ।
হাইকোর্টের এ বেঞ্চ গত ২৫ জুন এক আদেশে ৫০ লাখ টাকার মধ্যে ক্ষতিপূরণের বাকি ৪৫ লাখ টাকা মাসিক ৫ লাখ টাকা পরিশোধ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। প্রতি মাসের ৭ তারিখের মধ্যে ওই অর্থ রাসেলকে দিয়ে ১৫ তারিখের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছিলো।
আইনজীবী খোন্দকার শামসুল হক রেজা সাংবাদিকদের বলেন, মাসে ৫ লাখ টাকা করে দেয়ার আদেশটিও পালন করেনি গ্রিনলাইন। এমনকি কোনো যোগাযোগও করেনি। তাদের যদি সমস্যা থাকে তাহলে সেটা আদালতকে জানাতে পারতো। কিন্তু তারা কিছুই করেনি। গ্রিনলাইনের আইনজীবী অজি উল্লাহ বলেন, গ্রিনলাইন কর্তৃপক্ষ আদেশ পালন না করায় আমি তাদের আইনজীবী থেকে প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
উল্লেখ্য-গত ১০ এপ্রিল রাসেল সরকারকে ৫০ লাখের মধ্যে পাঁচ লাখ দেয়া হয় টাকার চেক দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। একইসঙ্গে বাকি ৪৫ লাখ টাকা দিতে গ্রিনলাইন কর্তৃপক্ষ এক মাস সময় দিয়েছিলো হাইকোর্ট। সময় অনুযায়ি গ্রিনলাইন কর্তৃপক্ষ টাকা পরিশোধ না করায় আদালত ক্ষোভ প্রকাশ করে এবং কিস্তিতে টাকা পরিষোধে আদেশ দেয়।
গত বছরের ২৮ এপ্রিল মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভারে কথা কাটাকাটির জেরে গ্রিনলাইন পরিবহনের বাসচালক ক্ষিপ্ত হয়ে প্রাইভেটকার চালকের ওপর দিয়েই বাস চালিয়ে দেন। এতে ঘটনা¯’লেই প্রাইভেটকার চালক রাসেল সরকারের (২৩) বাম পা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এ ঘটনায় হাইকোর্টে রিট আবেদন দায়ের করেন সংরক্ষিত আসনের তৎকালীন সংসদ সদস্য উম্মে কুলসুম স্মৃতি। এ রিটের প্রেক্ষিতে ২০১৮ সালের ১৪ মে রাসেলকে কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ কেন দেয়া হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করে হাইকোর্ট। সম্প্রতি রাসেলের পক্ষ থেকে আদালতে জানানো হয়, বাস কর্তৃপক্ষ তার কোনো খোঁজ-খবর নেয়নি। পরে গত ১২ মার্চ এ হাইকোর্ট বেঞ্চ রাসেল সরকারকে ৫০ লাখ টাকা দেয়ার আদেশের পাশাপাশি রাসেলের অন্য পায়ে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হলে এবং কাটাপড়া বাম পায়ে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে কৃত্রিম পা লাগানোর খরচও গ্রিনলাইন পরিবহন কর্তৃপক্ষকে দিতে আদেশ দেয়। এ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করে এ পরিবহন কর্তৃপক্ষ। গত ৩১ মার্চ আবেদনটি নাকচ হলে হাইকোর্ট আদেশই বহাল থাকে। এপর হাইকোর্ট ৩ এপ্রিলের মধ্যে টাকা পরিশোধ করে ৪ এপ্রিলের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলে। এর আগে নির্ধারিত সময়ে টাকা না দেয়ায় গত ৪ এপ্রিল গ্রিন লাইন পরিবহনের ম্যানেজারকে হাইকোর্টে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেয় আদালত। ম্যানেজার আব্দুস সাত্তার হাজির হয়ে গ্রিনলাইনের মালিক দেশের বাইরে চিকিৎসার জন্য রয়েছেন বলে আদালতকে অবহিত করেন। একইসঙ্গে মালিক ৯ এপ্রিল ফিরবেন বলে জানান। মালিক দেশে ফিরলে জরিমানার টাকা চেকে ৫ লাখ দিয়ে বাকীটার জন্য সময় নেন। সময় নিয়ে আদঅলতের আদেশ বাস্তবায়নে কোন পদক্ষেপ নেয়টি পরিবহনটির কর্তপক্ষ।
আদালতে বিআরটিএ’র পক্ষে আইনজীবী এম. রাফিউল ইসলাম হলফনামা আকারে একটি বক্তব্য দাখিল করেন। এ সময় আদালত সড়ক ব্যবস্থাপনায় বিসৃংখলা এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদানে বিদ্যমান বাস্তবতায় অসন্তোষ প্রকাশ করে।
বাসস/এএসজি/ডিএ/১৭০৫/কেএমকে