দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে যুব সমাজকে জনশক্তিতে রূপান্তর করতে হবে : শেখ হাসিনা

426

ঢাকা, ১৪ জুলাই, ২০১৯ (বাসস) : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে যুব সমাজকে জনশক্তিতে রূপান্তরের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন।
তিনি বলেন,‘কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা এবং দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মহীন যুব সমাজকে জনশক্তিতে রূপান্তর ও কর্মসংস্থানই এখন আমাদের অগ্রাধিকার।’
শেখ হাসিনা বিশ্ব যুব দক্ষতা দিবস উপলক্ষ্যে আজ এক বাণীতে এ কথা বলেন।
প্রতিবছরের মতো এবছরও আগামীকাল সোমবার বাংলাদেশে বিশ্ব যুব দক্ষতা দিবস পালিত হতে যাচ্ছে জেনে সন্তোষ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রত্যেক বছর জাতিসংঘের আহ্বানে ১৫ জুলাই পালিত হয় বিশ্ব যুব দক্ষতা দিবস। বাংলাদেশ দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করে আসছে।
তিনি বলেন,‘কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা এবং দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মহীন যুব সমাজকে জনশক্তিতে রূপান্তর ও কর্মসংস্থানই এ দিবসের চেতনা।’
শেখ হাসিনা বলেন,‘২০৪১ সালে উন্নত দেশের মর্যাদায় অধিষ্ঠিত হওয়ার অভিযাত্রায় অর্থনৈতিক উন্নয়নে বাংলাদেশ এখন একটি রোল মডেল। এই যাত্রায় এখনও অনেক দূর যেতে হবে। যে রূপকল্প এখন আমাদের উন্নয়নের যাত্রাপথের নির্দেশক তা হচ্ছে ২০২১ সালের মধ্যে দেশকে টেকসই মধ্যম আয়ের পর্যায়ে উন্নীত করা, ২০৩০-এর মধ্যে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জন এবং ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে একটি উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করা।’
টেকসই উন্নয়নের অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জনে বিশ্ব সমাজের রয়েছে এক বিশাল এজেন্ডা এ কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন,এই এজেন্ডায় রয়েছে একটি সমন্বিত উন্নয়ন পথ নির্দেশ। যাতে রয়েছে সব ধরনের দারিদ্র্য বিমোচন, দেশে ও দেশের অভ্যন্তরে অসমতা দূরীকরণ, পৃথিবীর সুরক্ষা, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়ন, সকল নারী পুরুষের জন্য যথোপযুক্ত কর্মসংস্থান ও পূর্ণ লিঙ্গ সমতা অর্জন এবং সামাজিক সম্পৃক্তি।
তিনি বলেন,এ সকল লক্ষ্য একটি অপরটির ওপর নির্ভরশীল। তবে চ্যালেঞ্জ হচ্ছে এ সকল লক্ষ্য কিভাবে অর্জিত হবে। জাতিসংঘের মতে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ হচ্ছে অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জনের মূল কার্যক্রম, তাই ২০৩০ এজেন্ডা কারিগরি শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করবে।
শেখ হাসিনা অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নের আলোচনায় তরুণদের কাছে দক্ষতা, কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার বার্তা পৌঁছানোর ব্যাপারেও গুরুত্ব দেন।
তিনি বলেন, এ সকল উদ্যোগের পাশাপাশি দক্ষতার ক্ষেত্রে অভিন্নমান সম্পন্ন সনদ প্রবর্তন ও সনদের পারস্পরিক স্বীকৃতি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বাংলাদেশের দক্ষ জনগোষ্ঠীকে দেশে ও বহিঃবিশ্বের বাজারে গ্রহণযোগ্য করার উদ্যোগ হিসেবে গঠন করা হয়েছে জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। এ কর্তৃপক্ষ দক্ষতা প্রশিক্ষণকে সমন্বয়, সহজতর, মান নিশ্চয়তা ও পরিবীক্ষণ করবে এবং জাতীয় পর্যায়ের সনদ প্রদান করবে।
শেখ হাসিনা বলেন, ৪র্থ শিল্পবিপ্লবসহ অন্যান্য পরিবর্তনের নিরিখে দক্ষতার চাহিদা নিরুপণ, তার ভিত্তিতে কারিকুলাম ও পেশাগত মান তৈরি এবং মূল্যায়নের ক্ষেত্রে দেশের শিল্পদক্ষতা পরিষদসমূহ ও শিল্প সংঘগুলো দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কাজ করছে।
বাংলাদেশ ইতোমধ্যে ওয়ার্ল্ড স্কিল ইন্টারন্যাশনাল এবং ওয়ার্ল্ড স্কিল এশিয়ার সদস্যপদ লাভ করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন,আন্তর্জাতিক দক্ষতা প্রতিযোগিতাসমূহে বাংলাদেশের দক্ষ তরুণরা অংশ নিচ্ছে। এ বছর বাংলাদেশ রাশিয়ার কাজানে অনুষ্ঠিতব্য ওয়ার্ল্ড স্কিল প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে যাচ্ছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দক্ষতার ক্ষেত্রে সক্ষমতার স্বাক্ষর রাখতে যাচ্ছে। এ রকম একটি প্রেক্ষাপটে এই দিবসটি পালন বেশ তাৎপর্যপূর্ণ।
শেখ হাসিনা এ দিবসের সর্বময় সাফল্য কামনা করেন।