বাসস ক্রীড়া-১১ : নিউজিল্যান্ড রোড টু ফাইনাল

114

বাসস ক্রীড়া-১১
ক্রিকেট-বিশ্বকাপ
নিউজিল্যান্ড রোড টু ফাইনাল
ঢাকা, ১৩ জুলাই, ২০১৯ (বাসস) : গত ৩০ মে ইংল্যান্ড এন্ড ওয়েলসে শুরু হওয়া আইসিসি দ্বাদশ ক্রিকেট বিশ্বকাপের পর্দা নামছে আগামীকাল ১৪ জুলাই লর্ডসে অনুষ্ঠিতব্য ফাইনালের মাধ্যমে।
গত ৯ জুলাই বুধবার ওল্ডট্রাফোর্ডে অনুষ্ঠিত প্রথম সেমিফাইনালে ভারতকে হারিয়ে ২০১৯ বিশ্বকাপের প্রথম দল হিসেবে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে কেন উইলিয়ামসনের নেতৃত্বাধীন নিউজিল্যান্ড।
টানা দ্বিতীয়বার বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলা কিউইরা আগামীকাল রোববার লর্ডসে স্বাগতিক ইংল্যান্ডের মোকাবেলা করবে।
রোড টু ফাইনাল:
ম্যাচ ১: কার্ডিফে শ্রীলংকার বিপক্ষে ১০ উইকেটে জয়
চার বছর আগে সর্বশেষ আসরের ন্যায় এবারও ১ জুন শ্রীলংকার বিপক্ষে সহজ দিয়ে টুর্নামেন্টে শুরু করে নিউজিল্যান্ড। লোকি ফার্গুসন ও ম্যাট হেনরির নেতৃত্বাধীন পেস আক্রমনে ২৯.২ ওভাওে মাত্র ১৩৬ রানে গুটিয়ে যায় লংকানরা। এরপর মার্টিন গাপটিল (৫১ বলে ৭৩*) এবং কলিন মুনরোর (৪৭ বলে ৫৮*) ব্যাটিং কারিশমায় কোন উইকেট না হারিয়ে ১৬.১ ওভানে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় নিউজিল্যান্ড।
ম্যাচ-২: ওভালে বাংলাদেশের বিপক্ষে দুই উইকেটে জয়
ছোট ব্যবধানের জয়। ৭ রানে থাকা উইলিয়ামসনকে রান আউট করতে বাংলাদেশ উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিম ভুল না করলে ফল ভিন্ন হতে পারত। হেনরির ৪ উইকেট শিকারের পরও ২৪৫ রানের লক্ষ্যমাত্রা চেজ করতে হিমশিম খেতে হয়েছে নিউজিল্যান্ডকে। টেইলরের ৮২ এবং জীবন পাওয়া উইলিয়ামসনের ৪০ রানে শেষ পর্যন্ত কোন রকমে জয়ের দেখা পায় কিউইরা।
ম্যাচ-৩: টনটনে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৭ উইকেটের জয়
ওয়ানডে ক্যারিয়ারে জিমি নিশামের প্রথম পাঁচ উইকেট এবং ফার্গুসনের চার উইকেট শিকারে আফগানরা ৪১.১ ওভারে মাত্র ১৭২ রানে গুটিয়ে যায়। এরপর ৯৯ বলে উইলিয়ামসনের অপরাজিত ৭৯ ও ৫২ বলে টেইলরের অপরাজিত ৪৮ রানে সহজ জয় নিশ্চিত হয় কিউইদের।
ম্যাচ-৪: পরিত্যক্ত প্রতিপক্ষ ভারত
বৃষ্টির কারণে আরো একটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হলে উভয় দলই একটি করে পয়েন্ট লাভ করে। এ ম্যাচ পরিত্যক্ত হওয়ায় সাত পয়েন্ট নিয়ে তালিকার শীর্ষে থাকে নিউজিল্যান্ড। পক্ষান্তরে পাঁচ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার তৃতীয় স্থানে নেমে যায় ভারত।
ম্যাচ-৫: এজবাস্টনের দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে চার উইকেটের জয়
টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালের আশা বাঁচিয়ে রাখতে নিউজিল্যান্ডকে পরাজিত করতে হবে-এমন সমীকরন নিয়ে বার্মিংহামে আসে দক্ষিণ আফ্রিকা। কিন্তু ১৯৯৯ আসরের ন্যায় এবার আর কিউইদের পরাজিত করতে সক্ষম হয়নি প্রোটিয়ারা।
প্রথমে ব্যাট করে দক্ষিণ আফ্রিকা ২৪২ রানের মাঝারি মানের সংগ্রহ দাঁড় করায়। জবাবে উইলিয়ামসনের অপরাজিত ১০৩ এবং কলিন ডি গ্র্যান্ডহোমের ৬০ বলে ৪৭ রানের সুবাদে এজবাস্টনে চার উইকেটে জয়ী হয়ে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে ওঠে ব্ল্যাকক্যাপসরা।
ম্যাচ-৬ : ওল্ডট্রাফোর্ডে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে পাঁচ রানের জয়
উইলিয়ামসনের টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরিতে ২৯২ রান করে নিউজিল্যান্ড। টুর্নামেন্টে টিকে থাকতে এ বিশাল রার তাড়া করতে নেমে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১৬৪ রানেই ৭ উইকেট হারিয়ে ফেলে। তবে ওয়ানডে ক্যারিয়ারে কার্লোস ব্র্যাথওয়েটের প্রথম সেঞ্চুরিতে জয়ের আশা টিকে থাকে ক্যারিবিয়দের। তিনি একাই দলকে জয়ের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যান। এক সময় জয়ের জন্য ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাত বলে ছয় রান দরকার। তবে শেষবার বাউন্ডারি পার করতে ব্যর্থ হন ব্র্যাথওয়েট। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে তিনি লং অনে নিশামের বলে বোল্টের হাতে ক্যাচ দিলে থেমে যায় ক্যারিবিয় ইনিংস। অপরাজিত থাকে কিউইরা। চতুর্থ পরাজয়ের মুখ দেখতে হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজকে।
ম্যাচ ৭ : এজবাস্টনে পাকিস্তানের কাছে ছয় উইকেটে পরাজয়
বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ড দলের প্রথম পরাজয় মানতে হয় পাকিস্তানের কাছি। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৪৬ রানেই ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলে কিউইরা। তবে নিশামের অপরাজিত ৯৭ এবং ডি গ্র্যান্ডহোমের ৬৪ রানের সুবাদে শেষ পর্যন্ত ৬ উইকেট হারিয়ে ২৩৭ রান করে নিউজিল্যান্ড। ব্যাট হাতে নেমে পাকিস্তানও ৪৪ রানে ২ উইকেট হারিয়ে ফেলে। তবে বাবর আজমের অপরাজিত ১০১ এবং হারিস সোহেলের ৬৮ রানের সুবাদে পাঁচ বল হাতে রেখে ছয় উইকেটে জয় পায় পাকিস্তান।
ম্যাচ-৮ : লর্ডসে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৮৬ রানের হার
লর্ডসে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার কাছে টানা দ্বিতীয় পরাজয়ে টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে ওঠা অনেকটা অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে যায়। বোল্টের হ্যাটট্রিক সত্বেও অস্ট্রেলিয়া ৯ উইকেট হারিয়ে ২৪৩ রান করে। তবে এ হ্যাটট্রিক কাজে আসেনি মিচেল স্টার্কের ২৬ রানের বিনিময়ে ৫ উইকেট শিকারে। উইলিয়ামসন ৪০ রানে স্টার্কের শিকার হলে ১৫৭ রানে গুটিয়ে যায় নিউজিল্যান্ড।
ম্যাচ-৯ : ডারহামে ইংল্যান্ডের কাছে ১১৯ রানে পরাজত
টুর্নামেন্টের শেষ চার নিশ্চিত করার এ ম্যাচে জনি বেয়ারস্টোর সেঞ্চুরি ও জেসন রয়ের ৬০ রানে ভর করে ইংল্যান্ড ৩০৫ রান করে। জবাবে নিউজিল্যান্ড কখনোই ম্যাচে নিজেদের ধরে রাখতে পারেনি। উইলিয়ামসন ও টেইলরের ওপর অত্যধিক নির্ভরশীলতা আবারো বুমেরাং হয় কিউইদের জন্য। এ জুটির ৪৭ রানের পার্টনারশীপ এবং টম লথামের ৫৭ রানের সুবাদে শেষ পর্যন্ত পাঁচ ওভার বাকি থাকতেই ১৮৬ রানে গুটিয়ে যায় কিউইরা।
সেমিফাইনাল- ওল্ড ট্রাফোর্ডে ভারতের বিপক্ষে ১৮ রানের জয়
মেঘলা আকাশে টস জিতে আগে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন উইলিয়ামসন। ওপেনার আবারো মার্টিন গাপটিল ব্যর্থ হলে উইলিয়ামসনের ৯৫ বলের ৭৬ এবং টেইলরের ৭৪ রানের সুবাদে রিজার্ভ ডেতে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৩৯ রানে শেষ হয় নিউজিল্যান্ড ইনিংস।
অসাধারন বোলিং এবং ফিল্ডিংয়ের মাধ্যমে ভারতকে ১৮ রানে হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বার ফাইনালে ওঠে নিউজিল্যান্ড। বোল্ট এবং হেনরির বোলিং তোপে ৫ রানেই তিন উইকেটের পর ২৪ রানে চার উইকেট হারিয়ে ফেলে ভারত। অসাধারন বোলিং দিয়ে বাঁ-হাতি স্পিনার স্যান্টনার শিকার করেন ২ উইকেট। তবে চারটি চার ও চারটি ছয় মেরে নিউজিল্যান্ডের বুকে কাপন ধরিয়ে দেন ৭৭ রান করা রবীন্দ্র জাদেজা। তবে সে আউট হলে ৫০ রান করা এমএস ধোনিকে গাটিল সরাসরি থ্রো থেকে রান আউট করলে উৎসবে মেতে ওঠে নিউজিল্যান্ড সমর্থকরা। টানা দ্বিতীয়বার ফাইনালে না লেখায় কিউইরা।
বাসস/স্বব/১৭৩০/মোজা/নীহা