বাসস দেশ-১৪ (প্রথম কিস্তি) : বিদেশী সরাসরি বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশের পরিবেশ অত্যন্ত অনুকূল

122

বাসস দেশ-১৪ (প্রথম কিস্তি)
বাংলাদেশ-এফডিআই
বিদেশী সরাসরি বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশের পরিবেশ অত্যন্ত অনুকূল
ঢাকা, ১৩ জুলাই, ২০১৯ (বাসস): দেশের ক্রমবর্ধমান অর্থনীতিতে বিদেশী সরাসরি বিনিয়োগ অবদান রাখছে। বহুজাতিক কোম্পানিগুলো অভ্যন্তরীণ বাজারের ব্যাপক চাহিদার বিষয়টি বিবেচনায় রেখেছে।
গতকাল নিক্কেই এশিয়ান রিভিওয়ের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৬ কোটি ৮০ লাখ জনসংখ্যা অধ্যুষিত বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার একটি অত্যন্ত কৌশলগত স্থানে। এ দেশের এক তৃতীয়াংশ লোকের বয়স ২৫ বছরের কম।
বিদেশী বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশকে একটি শক্তিশালী ক্রমবর্ধমান বাজার হিসেবে দেখছে।
ইউনাইটেড নেশনস কনফারেন্স অন ট্রেড অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ইউএনসিটিএডি) জানিয়েছে,গত বছর বাংলাদেশে সরাসরি বিদেশী বিনিয়োগের (এফডিআই) পরিমাণ ৬৮ শতাংশ বেড়ে রেকর্ড ৩ দশমিক ৬১ বিলিয়নে দাঁড়িয়েছে। ২০১১ সালের চেয়ে এটা তিনগুণ বেশি।
জাপান টোবাকো বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সিগারেট নির্মাতা আকিজ গ্রুপের কোম্পানি ঢাকা টোবাকোকে ১ দশমিক ৫ বিলিয়ান মার্কিন ডলারের বিনিময় ক্রয় করেছে। এর ফলে দেশে বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ অনেক বেড়ে গেছে।
অন্যান্য প্রধান বিনিয়োগের মধ্যে চীনের সাংহাই ও শেনজেন স্টক এক্সচেঞ্চ ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ২৫ শতাংশ স্টেক কিনেছে। এটি বেইজিংয়ের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের একটি অংশ। এছাড়া চীনের আলিবাবা গ্রুপ হোল্ডিং এর কোম্পানি আলিপে মোবাইল আর্থিক সেবাদানকারী কোম্পানি বিকাশের ২০ শতাংশ স্টেক কিনেছে।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের বাংলাদেশ শাখার প্রতিনিধি র‌্যাগনার গুডমুন্ডসন নিক্কেই এশিয়ান রিভিউকে বলেন, ‘এটা ব্যবসা ও বিনিয়োগ পরিবেশ বাড়াতে চলমান সংস্কারের গুরুত্বের পাশাপাশি দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নের গুরুত্বকে তুলে ধরেছে।’
তিনি আশা করেন যে ২০১৯ সালের জুন মাসের শেষ নাগাদ চলতি অর্থবছরের এফডিআই গত বছরের তুলনায় ২৫ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে।
বাংলাদেশ সরকার বর্তমানে মেট্রোরেল, সেতু, সুড়ঙ্গ, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও অন্যান্য প্রকল্প নির্মাণ করছে। এতে শত শত কোটি মার্কিন ডলারের বিদেশী বিনিয়োগ রয়েছে। এর অধিকাংশই এসেছে চীন ও জাপান থেকে।
দেশজুড়ে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন ও বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরি বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণের অন্যতম প্রধান কৌশল।
এর কারণে বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই জাপানের সুমিতোতো, সোজিৎজ, নিপ্পন স্টিল, শিনওয়া ও মারুহিসার মতো কোম্পানিগুলোর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে।
বাংলাদেশে ইকোনোমিক জোনস অথোরিটি (বেজা) জানিয়েছে, সোজিৎজ একাই বন্দর নগরী চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ে একটি বেসরকারি বন্দর ও শিল্প পার্ক নির্মাণে ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করবে।
ইতোমধ্যে অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোর বিপরীতে ১৭.৯ বিলিয়ান বিদেশী বিনিয়োগের প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)’র নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশ সুযোগ সুবিধার দেশ। আপনি চাইলে এখানে বিনিয়োগ করতে পারেন।’
বিডা প্রধানমন্ত্রীর অফিসের একটি শাখা। এটি বিদেশী বিনিয়োগের ব্যাপারে প্রচারণা চালায়।
ইউএনসিটিএডি জানায়, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে এফডিআই এর ক্ষেত্রে ভারতের পরেই বাংলাদেশের অবস্থান।
তৈরি পোশাক শিল্পে বাংলাদেশের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ভিয়েতনামের চেয়ে এফডিআই এ পিছিয়ে আছে। দেশটির এফডিআই’র পরিমাণ ১৫.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। তবে বাংলাদেশ মিয়ানমার, ইথিওপিয়া ও কম্বোডিয়ার চেয়ে এগিয়ে আছে। মিয়ানমার, ইথিওপিয়া ও কম্বোডিয়ার এফডিআই’র যথাক্রমে ৩.৫৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, ৩.৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ও ৩.১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
চলবে-বাসস/জিএম/অনু-কেএআর-অমি/১৭৩০/-আসচৌ