শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলে ১৫ গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

220

শেরপুর, ১৩ জুলাই, ২০১৯ (বাসস) : গত চার দিনের প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলে শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের ১৫টি গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে পানি বন্দী রয়েছে ৫ হাজার পরিবার। প্লাবিত গ্রাম গুলোর কাঁচা ঘর-বাড়ি, রাস্তাঘাট, রোপা আমন ধানের বীজতলা, সবজি, পুকুরের মাছ পানিতে তলিয়ে গেছে। উপজেলা প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা বলছেন আবহাওয়া অপরিবর্তিত থাকলে পানি বন্দীদের জন্য ত্রাণের ব্যবস্থা করা হবে।
সোমবার থেকে শুরু হওয়া অবিরাম বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে ঝিনাইগাতী সদর, ধানশাইল, মালিঝিকান্দা, হাতিবান্দা ও গৌরিপুর ইউনিয়নের ১৫টি গ্রামের প্রায় ৫ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। প্লাবিত গ্রামের রাস্তাঘাট, আমন ধানের বীজতলা ও সবজি পানিতে তলিয়ে গেছে। ভেসে গেছে শতাধিক পুকুরের মাছ। এতে গৃহপালিত পশু নিয়ে কৃষক পড়েছেন চরম বিপাকে।
বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে পরিস্থিতি আরো অবনতি হওয়ার আশংকা উপজেলা প্রশাসনের। তবে যেকোন পরিস্থিতি সামাল দিতে উপজেলা প্রশাসন প্রস্তুত আছে বলে জানান ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
সদর ইউপি চেয়ারম্যান মোফাজ্জল হোসেন চাঁন বলেন, তাঁর ইউনিয়নের অনেক মানুষ পানিবিন্দী অবস্থায় আছেন। আমন বীজতলা ও সবজি আবাদ পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে।
ধানশাইল ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম বলেন, সোমেশ্বরী নদীর পানি বেড়ে তাঁর ইউনিয়নের নয়াপাড়া, দাড়িয়ারপাড়, কান্দুলী, মাঝাপাড়া ও বাগেরভিটা গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে রোপা আমন ধানের বীজতলা পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। অর্ধশত পুকুরের মাছ ভেসে গেছে এবং গ্রামীণ কাঁচা সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
মালিঝিকান্দা ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বলেন, তাঁর ইউনিয়নের হাঁসলিবাতিয়া, রাঙ্গামাটিয়া, দেবোত্তরপাড়া, বানিয়াপাড়া ও জুলগাঁওয়ের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির বলেন, ৬৮ হেক্টর জমির রোপা আমন বীজতলা আংশিক ও ৪৪ হেক্টর জমির সম্পূর্ণ এবং ১১ হেক্টর জমির সবজি আবাদ আংশিক ও ৮ হেক্টর জমির সম্পূর্ণ আবাদ ঢলের পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুবেল মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, পাহাড়ি ঢলে উপজেলার পাঁচ ইউনিয়নের ১৫টি গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে এবং প্রায় ৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় আছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাঁদের দ্রুত সহায়তা প্রদান করা হবে। বৃষ্টি না হলে আগামি ২-১ দিনের মধ্যে পানি নেমে যাবে বলে তিনি জানান।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নবকুমার চৌধুরী জানান, ভোগাই নদী ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি এখনও বিপদ সীমার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে ভারতে অতিবৃষ্টি হচ্ছে। যার ফলে পানি বাড়ার আশংকা রয়েছে।
ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক এটিএম জিয়াউল হক বাসস কে বলেন, বন্য পরিস্থিতি এখনও অবনতি হয়নি। তবে কিছু নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলায় আমরা প্রস্তুত রয়েছি। এজন্য একটি বন্যা কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে।