বাজিস-৭ : পাঁচ দিন ধরে সারা দেশের সাথে বান্দরবানের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ

157

বাজিস-৭
বান্দরবান – সড়ক যোগাযোগ
পাঁচ দিন ধরে সারা দেশের সাথে বান্দরবানের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ
বান্দরবান, ১৩ জুলাই, ২০১৯ (বাসস): টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে চট্টগ্রাম-বান্দরবান সড়কের সাতকানিয়া উপজেলার বাজালিয়া এলাকায় তলিয়ে যাওয়ায় সারা দেশের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ পাঁচ দিন ধরে বন্ধ রয়েছে।
চালকরা জানিয়েছেন, ওই ডুবন্ত সড়কে ভ্যানে করে গত কয়েকদিন মানুষ এপার ওপার হয়ে গন্তব্যে পৌঁছালেও এখন তা একেবারেই বন্ধ হয়ে গেছে । এক গলার সমান পানি ওই সড়কে ।
বান্দরবান বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুব্রত দাশ ঝুন্টু জানান, গতকালের চেয়ে বান্দরবান কেরাণীহাট সড়কে পানি অনেক বেশি। কোন ধরণের বাস চলাচল করতে পারছে না। তবে রাস্তায় পানি কমে গেলে বাস চলাচল স্বাভাবিক হবে।
এদিকে বান্দরবান-রাঙামাটি সড়কের বালাঘাটা এলাকায় পাহাড়ি ঢলে সড়ক ডুবে থাকায় রাঙামাটির সাথে বান্দরবানের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে বলে জানা গেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বান্দরবান সদরের আর্মিপাড়া, শেরে বাংলা নগর, বালাঘাটা, আমবাগানসহ আশপাশের কয়েকটি এলাকায় এখনো ডুবে আছে । ডুবন্ত সড়কের উপর দিয়ে চলছে নৌকা । কেউ কেউ বন্যার পানিতে জাল ফেলে মাছ ধরছেন ।
এদিকে কয়েকজন জনপ্রতিনিধি জানিয়েছেন, সাঙ্গু নদীর পানি এখনও বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বান্দরবান-কেরানিরহাট সংযোগ সড়ক এবং অভ্যন্তরীণ রুটগুলো পাঁচ দিন ধরে বন্ধ থাকায় খাদ্যপণ্যের উপর উপর প্রভাব পড়েছে । সবজি ক্ষেত ডুবে যাওয়া বাজারে দেখা দিয়েছে সবজির সংকট ।
বান্দরবানের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শামীম হোসেন জানিয়েছেন, বান্দরবান পার্বত্য জেলায় ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছে। বরাদ্দ পাওয়া গেছে ৪৫০ মে. টন। তবে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় এলাকাগুলোতে ত্রাণ পৌঁছাতে বেগ পেতে হচ্ছে ।
তিনি আরো জানান, বন্যা পরিস্থিতির কোন উন্নতি নাই। গত কাল ভারী বৃষ্টিপাত হওয়াতে বন্যা পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে গেছে। ১৩১ টি আশ্রয় কেন্দ্রে গত কাল রাত থেকে ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়েরর পাদদেশে থাকা ও বন্যায় প্লাবিত বাসিন্দাদের মধ্যে ২ হাজার ৫ শত পরিবারেরও অধিক আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন। তাদেরকে শুকনো খাবার দেওয়া হচ্ছে বলে জানান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ।
এদিকে বান্দরবানে সিভিল সার্জন ডা: অংসুই প্রু জানান, বন্যা দুর্গতদের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে জেলায় ৪১টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে । সাইক্লোন সেন্টার এবং বিদ্যালয়গুলোতে আশ্রয় নেওয়াদের এ স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হচ্ছে। ডায়রিয়া সহ বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা দিচ্ছে মেডিকেল টিম । আর জরুরি হলেই সদর হাসপাতালে এনে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে ।
জেলার ১৮টি আশ্রয় কেন্দ্রের প্রায় আড়াই হাজার মানুষকে দুই বেলা করে রান্না করা খিচুরি ও মাংস দেয়া হচ্ছে। আর পানি বিশুদ্ধকরণের জন্য দেওয়া হচ্ছে ট্যাবলেট জানিয়েছেন বান্দরবানের পৌরসভার মেয়র ইসলাম বেবী।
এদিকে, থানচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফুল হক মৃদুল জানিয়েছেন, সাঙ্গু নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে । সাঙ্গু নদীর পানি বৃদ্ধিতে নৌ পথে দুর্গম এলাকার মানুষ থানচি সদরে আসতে পারছেন না । এছাড়াও তিন্দু রেমাক্রি সহ দুর্গম এলাকা ভ্রমণে উপজেলা প্রশাসন থেকে পর্যটকদের নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে ।
বাসস/সংবাদদাতা/১৪১০/নূসী