গান্ধী আশ্রমকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন করার উদ্যোগ নিলে সরকার সঙ্গে থাকবে : মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী

261

নোয়াখালী, ১২ জুলাই, ২০১৯ (বাসস) : মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, গান্ধী আশ্রমকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন করার উদ্যোগ নিলে সরকার এ শুভ পদক্ষেপের সঙ্গে থাকবে।
তিনি আজ দুপুরে নোয়াখালী সোনাইমুড়ি উপজেলার জয়াগ গ্রামে গান্ধী আশ্রম ট্রাস্ট এর প্রয়াত সেক্রেটারি ঝর্ণা ধারা চৌধুরীর স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা কথা বলেন।
গান্ধী আশ্রম ট্রাস্ট এর সভাপতি স্বদেশ রায়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অন্যানের মধ্যে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনার রীভা গাঙ্গুলি দাশও বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের শান্তি, সামাজিক, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি এবং বন্ধুত্বের প্রতি ঝর্ণা ধারা চৌধুরীর তার অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
গান্ধী আশ্রম ট্রাস্ট এর পরিচালক রাহা নব কুমার এর পরিচালনায় অস্মরণসভায় আরো বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক ড. মুনতাসির মামুন, চাটখিল ও সোনাইমুড়ি আসনের সংসদ সদস্য এ এইচ এম ইব্রাহিম, বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য ডা: কামরুল আহসান, বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক ড. জামাল উদ্দিন এফ.সি.এ, বিশিষ্ট গবেষক ড. শাখাওয়াত হোসেন, নোয়াখালী নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে আবদুল আউয়াল এবং ঝর্ণা ধারা চৌধুরীর পরিবারের সদস্য পার্থ সারথি চৌধুরী।
মোজাম্মেল হক বলেন, শান্তির দূত মহাত্মাগান্ধীর আদর্শের অনুসারী মানুষ আর সমাজের সেবায় জীবন উৎসর্গকারী ঝর্ণা ধারা চৌধুরী ত্যাগের যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন, তা আমাদেরকে উদ্বুদ্ধ করবে এবং আগামী প্রজন্মের কাছে শিক্ষণীয় হয়ে থাকবে।
তিনি বলেন, নিজকে নিয়ে ভাবার জন্য আমাদের জন্ম হয়নি, সবার জন্য এবং সৃষ্টির ভাবনার জন্য আমাদের সৃষ্টি হয়েছে। ঝর্ণা ধারা চৌধুরী সবার মধ্যে এ বোধটিই জাগিয়ে দিয়েছেন। কোন সীমার মধ্যে এদের ত্যাগ সীমাবদ্ধ নয় উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, বিশাল গন্ডিতে না হলেও, এ অঞ্চলে তিনি তাঁর কীর্তি রেখে গেছেন। তিনি আগামী প্রজন্মের অনুপ্রেরণা।
রীভা গাঙ্গুলি দাশ বলেন,আজকের এ স্বার্থপর বিশ্বে শ্রীমতি ঝর্ণা ধারা চৌধুরী ছিলেন অন্যের জন্য নিবেদিত। শৈশবে দেখা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার স্মৃতি তাঁকে মহাত্মা গান্ধীর আদর্শের পথে কাজ করতে অনুপ্রাণিত করে। সেই থেকে তিনি বিশ্বের কল্যাণে তাঁর জীবন উৎসর্গ করেছিলেন।
ভারত ও বাংলাদেশের শান্তি, সামাজিক, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি এবং বন্ধুত্বের প্রতি ঝর্ণা ধারার অবদানের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী গান্ধী আশ্রমকে সাহায্য করার চেষ্টা করেছি এবং এ সাহায্য-সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।’
পরে, তিনি ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এস জয় শঙ্কর এর পাঠানো একটি শোকবার্তা পরে শোনান।
গত ২ জুন মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ জনিত কারণে মহাত্মাগান্ধির আদর্শের অনুসারী জয়াগ গান্ধী আশ্রম ট্রাস্টের সচিব ঝর্ণাধারা চৌধুরীকে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ৩ জুন থেকে তিনি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা (আইসিইউ) কেন্দ্রে ছিলেন। ৬ জুন বৃহস্পতিবার সকাল ৬ টা ৩৪ মিনিটে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৮০ বছর বয়সে তিনি পরলোকগমন করেন।