দ্বিতীয় সেমিফাইনালে ২২৩ রানে অলআউট অস্ট্রেলিয়া

770

বার্মিংহাম, ১১ জুলাই ২০১৯ (বাসস) : বার্মিংহামের এডজবাস্টনে দ্বাদশ বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথমে ব্যাট করে ৪৯ ওভারে ২২৩ রানে অলআউট হয়েছে অস্ট্রেলিয়া। ফাইনালে যেতে হলে ২২৪ রান করতে হবে ইংল্যান্ডকে।
ম্যাচে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং বেছে নেয় অস্ট্রেলিয়া। ব্যাট হাতে নেমে মহাবিপদে পড়ে অসিরা। ৬ দশমিক ১ ওভারে ১৪ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে বসে তারা। ১০ রানের মধ্যে দুই ওপেনার অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ ও ডেভিড ওয়ার্নারকে তুলে নেন ইংল্যান্ডের দুই ডান-হাতি পেসার জোফরা আর্চার ও ক্রিস ওকস। অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চকে শুন্য হাতে আর্চার ও ওয়ার্নারকে ৯ রানে বিদায় দেন ওকস।
দুই ওপেনারের বিদায়ের কিছুক্ষণ পর প্যাভিলিয়নে ফিরেন মিডল-অর্ডার ব্যাটসম্যান পিটার হ্যান্ডসকম্ব। ৪ রান করে ওকসের দ্বিতীয় শিকার হন হ্যান্ডসকম্ব।
দ্রুত ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যাওয়া অস্ট্রেলিয়াকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন সাবেক অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ ও ক্যারি। তবে অষ্টম ওভারের শেষ বলে আর্চারের দ্রুত গতির এক বাউন্সার ক্যারির হেলমেটের নিচে থুতনিতে গিয়ে আঘাত করে। সাথে সাথে হেলমেট মাথা থেকে খুলে যায় এবং থুতনিতে বল লাগায় সেখান থেকে রক্ত পড়া শুরু করে। এরপর ২২ গজে প্রাথমিক চিকিৎসা চলে। রক্তক্ষরন বন্ধ করার জন্য সেখানেই তার মুখে ব্যান্ডেজ বেধে দেয়া। ব্যান্ডেজ পরেও ব্যাটিং করেছেন ক্যারি।
তাই স্মিথকে নিয়ে প্রাথমিক বিপর্যয় সামাল দিয়ে দলকে খেলায় ফিরিয়ে আনেন ক্যারি। চতুর্থ উইকেটে ১০৩ রানের জুটি গড়েন স্মিথ-ক্যারি। দলীয় ১১৭ রানে আউট হয়ে যান ক্যারি। ৪টি চারে ৭০ বলে ৪৬ রান করেন ক্যারি।
২৮তম ওভারের দ্বিতীয় বলে ক্যারিকে তুলে নিয়ে এই জুটি ভাঙ্গেন ইংল্যান্ডের ডান-হাতি লেগ স্পিনার আদিল রশিদ। ক্যারির বিদায়ে উইকেটে গিয়ে রশিদের ঘুর্ণি সামলাতে পারেননি অলরাউন্ডারদ মার্কাস স্টোয়িনিস। ২ বল মোকাবেলা করে ঐ ওভারেই রশিদের বলে লেগ বিফোর ফাঁেদ পড়েন তিনি। তাই শুন্য হাতে ফিরে যেতে হয় স্টোয়িনিসকে। ফলে ১১৭ রানে চতুর্থ ও ১১৮ রানে পঞ্চম উইকেট হারিয়ে আবারো চাপে পড়ে যায় অস্ট্রেলিয়া।
এ অবস্থায় উইকেটে গিয়ে ইংল্যান্ডের বোলারদের উপর পাল্টা আক্রমন করার চেষ্টা করেন হার্ড-হিটার গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। ২টি চার ও ১টি ছক্কায় দ্রুতই রান তুলতে থাকেন ম্যাক্স। তাকে স্ট্রাইক দেয়ার চেষ্টায় ছিলেন অন্যপ্রান্তে ব্যাট হাতে উইকেটের সাথে সেট হয়ে যাওয়া স্মিথ। ততক্ষণে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ২৩তম ও এবারের বিশ্বকাপে চতুর্থ হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নিয়ে নেন স্মিথ। তবে নিজের ইনিংসটা বড় করতে পারেননি ম্যাক্সওয়েল। দ্বিতীয় স্পেলে আক্রমনে এসে নিজের তৃতীয় ওভারে উইকেট তুলে নেন আর্চার। ২৩ বলে ২২ রান করা ম্যাক্সওয়েলকে নিজের দ্বিতীয় শিকার বানান আর্চার।
ম্যাক্সওয়েলকে হারানোর স্মৃতি ভুলতে না ভুলতে লোয়ার-অর্ডারের ব্যাটসম্যান প্যাট কামিন্সকে হারায় অস্ট্রেলিয়া। ১০ বলে ৬ রান করে রশিদের বলে রুটকে ক্যাচ দিয়ে আউট হহন কামিন্স। কামিন্স ব্যর্থ হলেও, স্মিথকে নিয়ে বড় জুটি গড়ার চেষ্টা করেন বাঁ-হাতি পেসার মিচেল স্টার্ক। বেশ ভালোভাবেই ইংল্যাান্ডের বোলারদের সামলাচ্ছিলেন স্টার্ক। অন্যপ্রান্তে উইকেট আগলে রাখার পরিকল্পনায় ছিলেন স্মিথ। তাই এই জুটির কল্যাণে দু’শ রানের কোটা পেরিয়ে যেতে সমর্থ হয় অস্ট্রেলিয়া।
৪৭ ওভার শেষে ৭ উইকেটে ২১৭ রানে পৌছায় অস্ট্রেলিয়া। এ অবস্থায় শেষ ৩ ওভারে আড়াই’শ রান স্পর্শ করার স্বপ্ন দেখছিলো অসিরা। কারন তখন উইকেটে সেট ব্যাটসম্যান স্মিথ। কিন্তু ৪৮তম ওভারের প্রথম বলেই স্মিথ বিদায় নিশ্চিত হয়। নিজেদের ভুলে রান আউটের ফাঁেদ পড়েন স্মিথ। ৬টি চারে ১১৯ বলে ৮৫ রান করেন স্মিথ।
অষ্টম ব্যাটসম্যান হিসেবে স্মিথের আউটের পর, অস্ট্রেলিয়ার বাকী ২ উইকেটের পতন হয় মাত্র ৬ রানে। ফলে ১ ওভার বাকী থাকতে ২২৩ রানে গুটিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস। ৩৬ বলে ২৯ রান করা স্টার্ককে ওকস ও জেসন বেহনড্রফকে ১ রানে বোল্ড করেন মার্ক উড। ইংল্যান্ডের ওকস ২০ রানে ও রশিদ ৫৪ রানে ৩টি করে উইকেট নেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর : (টস- অস্ট্রেলিয়া)
অস্ট্রেলিয়া : ২২৩/১০, ৪৯ ওভার (স্মিথ ৮৫, ক্যারি ৪৬, স্টার্ক ২৯, ওকস ৩/২০, রশিদ ৩/৫৪)।