নেইমারকে ছাড়া কোপার রাজত্ব ছিনিয়ে নিতে কোন সমস্যা হয়নি ব্রাজিলের

212

রিও ডি জেনিরো, ৯ জুলাই ২০১৯ (বাসস) : গত মাসে কোপা আমেরিকার প্রস্তুতি যখন প্রায় শেষ পর্যায়ে তখনই দলের মূল তারকা নেইমারের ইনজুরি কিছুটা হলেও স্বাগতিকদের শিরোপা মিশনে দু:শ্চিন্তা নিয়ে এসেছিল। স্বাগতিক হিসেবে বাড়তি চাপতো ছিলই, তার উপর নেইমারকে হারিয়ে দলের সাফল্য নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলে।
টুর্ণামেন্ট শুরুর প্রাক্কালে অনুশীলন ম্যাচে গোঁড়ালির ইনজুরি নেইমারকে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে দেয়। ঘরের মাঠে ২০১৪ সালের সেমিফাইনালে জার্মানীর কাছে ৭-১ গোলে বিধ্বস্ত হবার তিক্ত স্মৃতি যেন আবারো ব্রাজিল শিবিরে ফিরে আসে। ঐ আসরেও আগের ম্যাচে ইনজুরি পুরো টুর্নামেন্ট থেকে নেইমারকে ছিটকে দিয়েছিল।
তবে কোপা আমেরিকা শুরুর দিন থেকেই মূলত স্বাগতিক ব্রাজিল প্রমানের চেষ্টা করেছে ‘নেইমার-নির্ভরশীলতা’র তকমা কাটানোর এর থেকে ভাল সুযোগ আর কিছুই হতে পারেনা। যদিও গ্রুপ পর্বে ভেনেজুয়েলার সাথে গোলশুন্য ড্র কিছুটা হলেও নেইমারের অনুপস্থিতি অনুভূত হয়েছে। তবে টুর্ণামেন্টের সময় যত গড়িয়েছে ব্রাজিল ততই পরিণত পারফরমেন্স উপহার দিয়েছে।
মারাকানা স্টেডিয়ামে রোববার পেরুকে ৩-১ গোলে পরাজিত করে ১২ বছর পর বড় কোন টুর্ণামেন্টের শিরোপা তুলে ধরার কৃতিত্ব অর্জণ করেছেন অধিনায়ক দানি আলভেস। আর এই সাফল্যে শেষ পর্যন্ত নেইমারকে নিয়ে আলোচনার আর কিছুই ছিলনা। শুধুমাত্র শিরোপাই নয়, পুরো টুর্নামেন্টে ব্রাজিল ব্যক্তিগত সাফল্যও প্রমান করেছে। টুর্ণামেন্টর সেরা আক্রমনভাগ, সেরা রক্ষনভাগ, শীর্ষ খেলোয়াড় আলভেস, সর্বোচ্চ গোলদাতা এভারটন, সেরা গোলরক্ষক এ্যালিসন-এসবই একটি দলকে প্রমানের জন্য যথেষ্ঠ। আর এসব আলোচনায় উঠে আসায় স্বাভাবিক ভাবেই নেইমার ইস্যু চাপা পড়ে গেছে।
লিভারপুল তারকা এ্যালিসন অবশ্য বলেছেন, ‘নেইমারকে ছাড়া সবকিছুই কঠিন ছিল। কারন সে অসাধারন প্রতিভাবান একজন খেলোয়াড় এবং দলের জন্য অনেক কিছু। তবে পুরো দলের শক্তি প্রমান করাটাও জরুরী ছিল। অনেক সময় সব দৃষ্টি নেইমারই কেড়ে নেয়, আর সে কারনে আমরা পিছিয়ে পড়ি। তবে আমরা সবাই তাকে ভালবাসি।’
নেইমারের অনুপস্থিতিতে বিশেষ করে দু’জন খেলোয়াড়ের নিজেদের প্রমানের বিষয়টি সামনে চলে আসে। মে মাসে নেইমারের পরিবর্তে আলভেসকে যখন অধিনায়কের দায়িত্ব দেয়া হয়েছির তখন থেকেই তার উপর বাড়তি চাপ আসে। আলভেস পুরো টুর্ণামেন্টে সামনে থেকেই দলকে নেতৃত্ব দিয়ে হয়েছেন টুর্ণামেন্ট সেরা। আর্জেন্টিনার বিপক্ষে সেমিফাইনালে ২-০ গোলের জয়ের ম্যাচটিতে প্রথম গোলটি তার অসাধারন সহযোগিতায় এসেছিল। আরেকজন খেলোয়াড় হচ্ছেন এভারটন। সর্বোচ্চ গোলদাতা হিসেবে কোপা শেষ করে তিনি ভবিষ্যতের ইঙ্গিত দিয়েছেন। নেইমার দলে থাকলে হয়ত এভারটনের মূল একাদশে খেলার অপেক্ষাটা আরো দীর্ঘায়িত হতো। ২৩ বছর বয়সী এই উইঙ্গারকে দলে নিতে ইতোমধ্যেই আগ্রহী হয়ে উঠেছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও পিএসজি।