জেসুসের লাল কার্ড সত্ত্বেও কোপা আমেরিকার শিরোপা জিতলো ব্রাজিল

208

রিও ডি জেনিরো, ৮ জুলাই, ২০১৯ (বাসস) : লাল কার্ড পেয়ে ৭০ মিনিটে গাব্রিয়েল জেসুসের মাঠ ত্যাগ ব্রাজিলের শিরোপা জয়ে একটুও বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। রোববার ঐতিহাসিক মারাকানা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ফাইনালে পেরুকে ৩-১ গোলে পরাজিত করে কোপা আমেরিকার শিরোপা জিতেছে স্বাগতিক ব্রাজিল।
এভারটনের গোলে ১৫ মিনিটে ব্রাজিল এগিয়ে যাবার পর অধিনায়ক পাওলো গুয়েরেরোর গোলে বিরতির ঠিক আগে সমতায় ফিরে পেরু। প্রথমার্ধের ইনজুরি টাইমে আবারো স্বাগতিকদের এগিয়ে দেন জেসুস। শেষ মুহূর্তের পেনাল্টিতে বদলী খেলোয়াড় রিচারলিসনের গোলে ২০০৭ সালের পর প্রথম কোপা আমেরিকার শিরোপার স্বাদ পায় সেলেসাওরা। দক্ষিণ আমেরিকান জায়ান্টদের এটি নবম কোপা শিরোপা।
দ্বিতীয় হলুদ কার্ডের কারনে ম্যাচ শেষের ২০ মিনিট আগে জেসুস মাঠ ত্যাগে বাধ্য হন। যে কারনে বাকি সময়টা ব্রাজিলকে ১০জন নিয়েই খেলতে হয়েছে। মাঠ ত্যাগের সময় অনেকটাই আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলেন ম্যানচেস্টার সিটির এই স্ট্রাইকার। রেফারির এই সিদ্ধান্তে পুরো ব্রাজিলিয়ান শিবির বেশ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখায়।
ম্যাচ শেষে উচ্ছ্বসিত অধিনায়ক দানি আলভেস বলেছেন, ‘এটা সত্যিই বিশেষ এক শিরোপা। কারণ একসাথে আমরা সবাই মিলে কিছু একটা করে দেখাতে পেরেছি।’
ব্রাজিলের বোসা নোভা সঙ্গীতের জনক হুয়াও গিলবার্তোর মৃত্যুতে ম্যাচের শুরুতে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। ম্যাচের শুরু থেকেই আন্ডারডগ পেরুকে বেশ আত্মবিশ্বাসী দেখা গেছে। তাদের দেখে মনেই হয়নি ব্রাজিলের মত একটি প্রতিপক্ষের বিপক্ষে কোন টুর্নামেন্টের ফাইনালে খেলতে নেমেছে তারা। পেরুর মিডফিল্ডার এডিনসন ফ্লোরেস বলেছেন, ‘এটা এমন একটি ম্যাচ ছিল যেখানে ব্রাজিল আমাদের ভুলের সুযোগ কাজে লাগিয়ে গোল আদায় করে নিয়েছে।’
এর আগে শনিবার পেরুর কোচ রিকার্ডো গার্সিয়া বলেছিলেন তার দল ব্রাজিলকে দাপট দেখাতে দিবে না। কিন্তু বাস্তবে তার প্রতিফলন দেখা যায়নি। শুরু থেকেই ব্রাজিলের আধিপত্য সুস্পষ্টভাবে চোখে পড়েছে। জেসুসের একক দক্ষতায় ব্রাজিল প্রথম গোল পায়। দু’জন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে অনেকটা ফাঁকায় দাঁড়ানো এভারটনের দিকে বল বাড়িয়ে দেন জেুসস। সেই বলে ১৫ মিনিটে দলকে এগিয়ে দিতে ভুল করেননি এভারটন। এরপর থেকে ব্রাজিলের দাপট আরো বেড়ে যায়। বামদিক থেকে রবার্তো ফিরমিনোর ক্রসে ফিলিপ কুটিনহো অল্পের জন্য গোল পাননি। লেফট-উইঙ্গার এভারটনের পর গোলের সুযোগ হাতছাড়া করেন ফিরমিনো। তবে এর মধ্যে পেরুও বেশ কয়েকটি আক্রমন করার চেষ্টা করেছে। ক্রিস্টিয়ান কুয়েভার ক্রস ডি বক্সের মধ্যে থিয়াগো সিলভার হাতে লাগলে চিলির রেফারি রবার্তো টবার ভারগাস পেনাল্টির নির্দেশ দেন। অবশ্য পেনাল্টিটি ভিএআর’র সহায়তায় নিশ্চিত করা হয়েছে। বিরতির ঠিক আগে গুয়েরেরো ব্রাজিল গোলরক্ষক এ্যালিসনকে উল্টো দিকে পাঠিয়ে বল জালে জড়ালে দারুনভাবে ম্যাচে ফিরে আসে পেরু। ইনজুরি টাইমে আর্থারের সহায়তায় জেসুস কোন ভুল করেননি।
দ্বিতীয়ার্ধেও ব্রাজিল গোলের ব্যবধান বাড়ানোর জন্য মরিয়া হয়ে উঠে। কিন্তু সিলভা, আলভেস ও কুটিনহোদের ব্যর্থতায় কাঙ্খিত গোল আসেনি। এ্যালেক্স সান্দ্রোর ক্রসে ফিরমিনোর হেড ক্রসবার দিয়ে বাইরে চলে যায়। এই সময়ে পুরো ম্যাচের নিয়ন্ত্রন ছিল ব্রাজিলের দখলে। তবে কুয়েভাকে বাজে একটি চ্যালেঞ্জের অপরাধে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড পেয়ে জেসুস মাঠ ত্যাগ করলে কিছুটা হলেও চাপে পড়ে স্বাগতিকরা। পেরু এই সময় বেশ কয়েকটি আক্রমনের সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেনি। ইনজুরি টাইমে রিচারলিসন স্পট কিক থেকে গোল করলে ব্রাজিলের জয় নিশ্চিত হয়।