হরতাল এখন আর গণআন্দোলনের অস্ত্র নয় : ওবায়দুল কাদের

555

ঢাকা, ৭ জুলাই, ২০১৯ (বাসস) : আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বর্তমানে হরতালকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে গণআন্দোলন করার দিন শেষ হয়ে গেছে। এটি এখন আর গণআন্দোলনের অস্ত্র নয়।
‘এটা আন্দোলনের এখন আর কার্যকর কোন অস্ত্র নয়। কারণ, দেশের মানুষ বাস্তবতা বুঝে’ উল্লেখ করে কাদের বলেন, গ্যাসের দাম সমন্বয় করার জন্য মূল্য বৃদ্ধি করা হয়েছে। তারপর এখনও ভর্তুকি দিতে হবে। সেজন্যই গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি করা হয়েছে।
ওবায়দুল কাদের আজ রাজধানীর ধানমন্ডির আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সম্পাদকমন্ডলীর সভা শেষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে একটি জোটের ডাকা হরতাল প্রসঙ্গে একথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ এমপি, ডা. দীপুমনি এমপি, এডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি, একেএম এনামুল হক শামীম, এমপি, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এডভোকেট আফজাল হোসেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন ও কেন্দ্রীয় কার্য নির্বাহী সংসদের সদস্য মারুফা আক্তার পপি প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বাম দলগুলার ডাকা হরতালের বিষয়ে বলেন, রাজধানীসহ সারাদেশে হরতালের কোন চিহ্ন নেই। রাজধানীর সর্বত্রই হরতালের চিরাচরিত চিত্র বহাল ছিল।
কতিপয় এনএলজি ব্যবসায়ীদের সুবিধা দিতেই গ্যাসের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন দাবির বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, এটা বিরোধীদলের গতানুগতিক বক্তব্য, নতুন কিছু নেই।
গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি সম্পর্কে অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা ভোটের রাজনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে তা ভেবে রাজনীতি করি না। সঠিক, বাস্তবসম্মত ও জনস্বার্থের কথা ভেবে আমরা রাজনীতি করি।
তিনি বলেন, দেশের অর্থনীতিতে ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থার বিষয়টি দেখতে হয়। আর সেজন্যই সব কিছু মিলিয়ে দেশে সুষম অর্থনৈতিক অবস্থা বিরাজ করছে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের আন্দোলনের মাধ্যমে বেগম জিয়াকে মুক্ত করা হবে বলে দেয়া বক্তব্যের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপির আন্দোলনের ডাক আষাঢ়ের তর্জন-গর্জন ছাড়া আর কিছুই নয়।
তিনি বলেন, ‘আমরাও চাই, বিএনপির নেতারা আন্দোলন করে তাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে আনুক। তাদের নেত্রীর মুক্তির জন্য তারা রাজপথে দশ মিনিটের জন্যও আন্দোলন করতে পারেননি।’
কাদের আরো বলেন, দেশের বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে কর্তৃত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। আদালতের রায় তাদের বিরুদ্ধে গেলেই তারা বিচার, আইন ও সালিশ কিছুই মানে না।
আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, যথাসময়ে আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সে লক্ষ্য নিয়েই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। আমাদের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি রয়েছে।
অতীতে এক মাসের প্রস্তুতিতে আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন করার অভিজ্ঞতা রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠানে দলের কর্মকান্ড, প্রস্তুতি ও উদ্যোগের কোন ঘাটতি নেই।
দলের সদস্য সংগ্রহ অভিযানের বিষয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, আগামী ২১ জুলাই সদস্য সংগ্রহের বই বিতরণ করার তারিখ নির্ধারিত রয়েছে। আমরা যাতে সফলভাবে সদস্য সংগ্রহ অভিযান শেষ করতে পারি সে লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি।
এ বিষয়ে তিনি আরো বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী, নিষ্কলুষ, নির্বাচনে নৌকা মার্কার পক্ষে যারা কাজ করেছে দলে তাদের অন্তভূক্ত করাই সদস্য সংগ্রহ অভিযানের মুল লক্ষ্য।
সভায় আলোচনার বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, সভায় শোকের মাস আগস্ট মাসব্যাপী কর্মসূচি গ্রহণ, মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি বাতিল করে সম্মেলন অনুষ্ঠান ও জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী ও তাদের মদতদাতাদের বিরুদ্ধে শাস্তি দেয়ার বিষয় নিয়েও আলোচনা করা হয়েছে।