বাজিস-৭ : নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে কৃষকদের উদ্বুদ্ধকরণ প্রশিক্ষণ

166

বাজিস-৭
শেরপুর-প্রশিক্ষণ
নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে কৃষকদের উদ্বুদ্ধকরণ প্রশিক্ষণ
শেরপুর, ৪ জুলাই, ২০১৯ (বাসস) : জেলার চরাঞ্চলে বিষমুক্ত সবজি চাষে কৃষক মাঠ স্কুল আশার আলো ছড়াচ্ছে। সবজি ফসলের সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার (আইপিএম) মাধ্যমে এসব কৃষক মাঠ স্কুল পরিবেশবান্ধব কৃষি ও নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করণসহ হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ প্রদান করছে। এর ফলে সবজি ভান্ডার খ্যাত শেরপুর সদর উপজেলার চরাঞ্চলে দিন দিন বিষমুক্ত সবজির আবাদ বাড়ছে। এতে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা।
৪ জুলাই সকালে শেরপুর সদর উপজেলার বলাইরচর ইউনিয়নের চরজঙ্গলদী গ্রামের কুমড়া জাতীয় ফসলের একটি কৃষক মাঠ স্কুলের মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত হয়। স্থানীয় এক কৃষকের বাড়ীর আঙিনায় চলে এ কৃষক মাঠ স্কুল। সেখানে তিন মাসে ১৪ টি সেশনে ১৫ জন কৃষাণী ও ১০ কৃষক একাযোগ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। প্রশিক্ষণে কৃষক-কৃষাণীরা কীটনাশকের পরিবর্তে সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার ৫টি কার্যকরি দক্ষতা সম্পর্কে বাস্তব জ্ঞানলাভ করেন। এগুলো হলো-জৈবিক ব্যবস্থাপনা, বালাই সহনশীল জাত চাষ, আধুনিক চাষাবাদ পদ্ধতি, যান্ত্রিক ব্যবস্থাপনা এবং বালাইনাশকের যুক্তিসংগত ব্যবহার। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরিবেশবান্ধব কৌশলের মাধ্যমে নিরাপদ ফসল উৎপাদন প্রকল্পের আওতায় এ কৃষক মাঠ স্কুলটি পরিচালিত হয়।এ কৃষক মাঠ স্কুলটিকে কেন্দ্র করে ওই এলাকায় গড়ে ওঠেছে একটি আইপিএম ক্লাব।
কৃষক মাঠ স্কুলের মাঠ দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শেরপুর খামারবাড়ীর উদ্ভিদ সংরক্ষণ বিশেষজ্ঞ অতিরিক্ত উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. আক্তারুজ্জামান। স্থানীয় কৃষক মো. শাহজাহান মিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিশেষ অতিথি উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শামীম আরা শামীমা, সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা পিকন কুমার সাহা।এতে প্রচুরসংখ্যক কৃষক-কৃষাণী অংশগ্রহণ করেন।
কৃষক মাঠ স্কুলের সদস্য কৃষাণী তাছলিমা বেগম বলেন, আমরা এ মাঠ স্কুলে শিখেছি কোনটা উপকারী আর কোনটা ফসলের অপকারী পোকা। তাছাড়া সঠিক দূরত্বে চারা কিংবা বীজ রোপণ করতে হবে। ক্ষেতে সুষ্ঠু পানি ব্যবস্থাপনা করতে হবে। আরেক কৃষক হামিদ বাচ্চু বলেন, আমরা জেনেছি-শিখেছি ফসলের পাকামাকড় দমনে কীটনাশকের পরিবর্তে কিভাবে ফেরোমন ফাঁদ, বিষটোপ ফাঁদ ব্যবহার করে পোকা দমন করা যায়। তাছাড়া ক্ষেতে ডাল পোতা, হাত জাল দিয়ে পোকা ধরার বিষয়ে জেনেছি। নিয়মিত ক্ষেত পরিদর্শন, উদ্বিভদজাত জৈব বালাই নাশকের প্রতি অধিক গুরুত্ব দেওয়ার বিষয়ে আমাদের শেখানো হয়েছে। আমাদের ফসলের উৎপাদন খরচ অনেক কমে গেছে এবং আবাদও ভালো থাকছে।
শেরপুর সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ পিকন কুমার সাহা বলেন, সদর উপজেলার ৩ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে সবজির আবাদ করা হয়েছে। তন্মধ্যে প্রায় আড়াই হাজার হেক্টর জমিই হলো চরাঞ্চলের। নিরাপদ পরিবেশ এবং বিষুমক্ত সবজি উৎপাদনে কৃষকদের নানাভাবে উৎসাহিত ও উদ্ধুদ্বকরণ করা হচ্ছে। সেজন্য বিভিন্ন সময়ে সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার জন্য বিভিন্ন এলাকায় আইপিএম-আইসিএম কৃষক মাঠ স্কুল করা হয়ে থাকে। এসব মাঠ স্কুলের কার্যক্রম শেষ হলে ওই এলাকায় কৃষকদের সংগঠিত করে আইপিএম-আইসিএম ক্লাব গঠন হয়ে থাকে। যাতে কৃষকরা নিজেদের লব্ধ জ্ঞান ও প্রযুক্তি অন্য কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে পারেন।
বাসস/সংবাদদাতা/১৪৫৫/নূসী