জেসুস, ফিরমিনোর গোলে আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে কোপা আমেরিকার ফাইনালে ব্রাজিল

228

বেলো হরিজন্টে, ৩ জুলাই, ২০১৯ (বাসস) : গ্যাব্রিয়েল জেসুস ও রবার্তো ফিরমিনোর গোলে চির প্রতিদ্বন্দ্বি আর্জেন্টিনাকে ২-০ গোলে পরাজিত করে কোপা আমেরিকার ফাইনালে উঠেছে স্বাগতিক ব্রাজিল।
দুই অর্ধে জেসুস ও ফিরমনোর একটি করে গোলে একদিকে যেমন ব্রাজিলের জয় নিশ্চিত হয়েছে অন্যদিকে লিওনেল মেসির জাতীয় দলের জার্সি গায়ে বড় কোন আসরে আর্জেন্টিনার হয়ে শিরোপা জেতার অপেক্ষা আরো দীর্ঘায়িত হলো। ২০০৭ সালের কোপা ফাইনালে আর্জেন্টিনাকে ৩-০ গোলে পরাজিত করে শিরোপা জিতেছিল ব্রাজিল। তারপর বড় কোন টুর্নামেন্টে এই দুই বিশ্বসেরা প্রতিদ্বন্দ্বীর লড়াই দেখলো সমর্থকরা।
বেলো হরিজন্টের কালকের ম্যাচের নায়ক ছিলেন ইংল্যান্ড-ভিত্তিক দুই ফুটবলার জেসুস ও ফিরমিনো। মজার বিষয় হচ্ছে উভয়ই উভয়ের গোলে সহযোগিতা করেছেন। যদিও প্রথম গোলটিতে অধিনায়ক দানি আলভেসেরও সমান অবদান রয়েছে।
ম্যাচ শেষে আলভেস বলেছেন, ‘লক্ষ্যে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে এটি আরেকটি ধাপ। এবারের আসরে যে ধরনের লক্ষ্যস্থির করা হয়েছে তার সবকিছুই আমরা অর্জন করতে পারছি। অনেকেই আমাদের নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছিল। কিন্তু আমাদের নিজেদের ওপর, নিজেদের পরিকল্পনা ও কঠোর পরিশ্রমের উপর বিশ্বাস ছিল।দিনে দিনে আমরা যে স্বপ্নের বীজ বুনছি এখন সময় এসেছে তার ফল ভোগ করার।’
ব্রাজিলের এমন একটি জয়ের দিনে পুরোপুরি ব্যর্থ ছিলেন আর্জেন্টাইন সুপারস্টার মেসি। আরো একবার আন্তর্জাতিক অঙ্গনে হতাশ হতে হলো বার্সার এই তারকাকে, সাথে হতাশ করেছেন পুরো দলকে। আগামী বছর আর্জেন্টিনা ও কলম্বিয়ায় যৌথভাবে আয়োজিত কোপা আমেরিকা আসরে আরো একবার খেলার সুযোগ পাচ্ছেন মেসি।
আর্জেন্টাইন কোচ লিওনেল স্কালোনি অভিযোগ করে বলেছেন, ‘আমরা এমন একটি দল যাদের অবশ্যই ফাইনালে যাওয়া উচিত ছিল। কারন নি:সন্দেহে সেটা আমাদের প্রাপ্য। কিন্তু কখনো কখনো ফুটবলে খুবই অনায্য কিছু ঘটনা ঘটে।’
এই ধরনের ম্যাচে দুটি দলের থেকেই আগ্রাসী মনোভাব প্রত্যাশিত ছিল। তারই ধারাবাহিকতায় ম্যাচের শুরুতেই বেশ কয়েকটি বাজে চ্যালেঞ্জে ম্যাচের গতি নষ্ট হয়েছে। ৯ মিনিটে জেসুসকে হঠাৎ করেই ট্যাকেল করার কারনে আর্জেন্টাইন ডিফেন্ডার নিকোলাস টাগলিয়াফিকোকে হলুদ কার্ড দেখানো হয়েছে। মাঠের কারনে ম্যাচে দুই দলের কেউই যে খুব একটা স্বস্তিতে থাকবে না তা অনুমেয় ছিল।
প্রথম সুযোগটি পেয়েছিলেন আর্জেইন্টান মিডফিল্ডার লিওনার্দো পারেডেস। ৩০ গজ দুর থেকে তার দুর্দান্ত শট ব্রাজিলিয়ান গোলরক্ষক এলিসনের মাথার উপর দিয়ে বাইরে চলে যায়। ১৯ মিনিটে আলভেসের দুর্দান্ত প্রচেষ্টায় এগিয়ে যায় ব্রাজিল। ফিরমিনোর দিকে বল বাড়িয়ে দেবার আগে আলভেস তিনজন আর্জেন্টাইন খেলোয়াড়কে পরাস্ত করেন। লিভারপুল ফরোয়ার্ড ফিরমিনোর ডানদিকের নিখুঁত ক্রসে অনেকটা ফাঁকায় দাঁড়ানো জেসুস আলতো ছোঁয়ায় বল জালে জড়ান। ৩০ মিনিটে মেসির ফ্রি-কিক থেকে সার্জিও এগুয়েরোর হেড অল্পের জন্য জালে জড়ায়নি। মেসির পাস থেকে এগুয়েরো শট মারকুইনহোস ব্লক না করলে আর্জেন্টিনা তখনই সমতা ফেরাতে পারতো। পরমুহূর্তে মেসি ডানদিকে দু’জনকে পরাস্ত করে গোলে শট নিলেও তা ব্যর্থ হয়। অন্যদিকে আর্থারের শক্তিশালী শট আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক ফ্র্যাংকো আরমানির হাতে সরাসরি ধরা পড়ে।
দ্বিতীয়ার্ধে আর্জেন্টিনা ব্রাজিলের ওপর প্রথম থেকেই চাপ সৃষ্টি করতে থাকে। এগুয়েরোর পাস থেকে লটারো মার্টিনেজের বাম পায়ের ভলি সহজেই আটকে দেন এলিসন। ৬৬ মিনিটে মেসির ফ্রি-কিক ধরতে এলিসনকে বেশ সতর্ক থাকতে হয়েছে। এর মধ্যেই অবশ্য স্কালোনি মিডফিল্ডার মার্কোস এ্যাকুনার পরিবর্তে গতিময় উইঙ্গার এ্যাঙ্গেল ডি মারিয়াকে মাঠে নামান। কিন্তু তাতেও কাঙ্খিত ফল আসেনি। ৭১ মিনিটে কাউন্টান এ্যাটাক থেকে দুজন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে জেসুস বল বাড়িয়ে দেন ফিরমিনোকে। নিখুঁত এই পাস থেকে ঠান্ডা মাথায় বল জালে জড়াতে একটু ভুল করেননি এই লিভারপুল তারকা।