বাজিস-৪ : বগুড়ার শেরপুরে প্রায় পাঁচশ’ দেশি মুরগির খামার গড়ে উঠেছে

160

বাজিস-৪
বগুড়া- মুরগির খামার
বগুড়ার শেরপুরে প্রায় পাঁচশ’ দেশি মুরগির খামার গড়ে উঠেছে
বগুড়া, ২৯ জুন, ২০১৯ (বাসস) : জেলার শেরপুর উপজেলায় দেশি মুরগির খামার করে বিকল্প কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে বহু বেকার ও শিক্ষিত নারী-পুরুষের। এপর্যন্ত মুরগির খামার করে অর্ধসহস্রাধিক উদ্যোক্তা বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্তি পেয়ে স্বাবলম্বি হয়েছেন। পাশাপাশি, এলাকায় কর্মসংস্থান হয়েছে বহু মানষের।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শেরপুর উপজেলার প্রানীসম্পদ বিভাগের ভেটেরিনারী সার্জন ডা. মো. রায়হানের অনুপ্রেরনায় ২০১৫ সালে দুইটি ‘বানিজ্যিক ভিত্তিক মুরগির (অরগ্যানিক) খামার’ দিয়ে যাত্রা শুরু। পর্যায়ক্রমে তার বিস্তৃতি ঘটেছে।
স্বল্প পুঁজিতে স্বালম্বি হওয়ার গল্পশুনে ও দেশি মুরগির খামার দেখে জাকারিয়া হোসেন, সুমাইয়া আখতার, হারুন অর রশিদ প্রমুখ আগ্রহি হন। পরে তাদেরকে দেখে অন্যরাও এগিয়ে আসেন।
স্নাতক (সম্মান) পাশ করে কোথাও চাকরি না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়া জাকারিয়া মাত্র ১০টি মুরগির বাচ্চা দিয়ে খামার শুরু করেন। এরপর জাকারিয়াকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। এখন তার খামারে ৫টি শেডে ৮শ’ মুরগি। প্রতিমাসে তার আয় ৩০ হাজার থেকে ৪০ হাজার টাকা।
জাকারিয়ার মতো পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি শেরপুর উপজেলার ধড় মোকামতলার সুমাইয়া আখতারকে। মাত্র একটি মুরগির বাচ্চা দিয়ে তার খামারের যাত্রা শুরু। এখন তার খামারে পাঁচ শতাধিক মুরগি।
সুমাইয়া জানান, এক সময় তার ঘরে খাবারের খরচ জোগাড় করতে হিমশিম খেতে হতো। প্রাণীসম্পদ বিভাগের ভেটেরিনারী সার্জণ ডা. মো. রায়হানের কাছে প্রশিক্ষন নিয়ে এখন তিনি সফল খামারি। তার খামারে ৫ জনকে চাকরি দিয়েছেন। পাল্টে গেছে তার জীবনমান।
শেরপুর টাউন কলেনীর হারুন অর রশিদ ১০ হাজার টাকা দিয়ে খামার শুরু করেন। এখন তার খামারে দেড়লাখ টাকার মুরগি আছে। প্রতিমাসে তিনি ৩০ হাজার থেকে ৪০ হাজার টাকা আয় করেন।
সম্প্রতি, বাজারে দেশী মুরগির চাহিদা ও দাম বেশি হওয়ায় মানুষ বিকল্প খুঁজছেন। বাজারে দেশি মুরগী প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকা থেকে ৫৩০ টাকায়। আর বানিজ্যিক ভিত্তিতে দেশি (অরগ্যানিক) খামারের মুরগি বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ৩৫০ টাকায়।
খামারিরা জানান, সম্পূর্ণ এন্টিবায়টিক ও স্টেরয়েড মুক্ত ভাকে চাষ হচ্ছে এই দেশি (অরগ্যানিক) মুরগি। তাই এই মুরগির চাহিদা বাড়ছে। তারা আরও জানান, তাদের অনেকেই বাচ্চা ফোটানো, কেউ মাংস অথবা ডিম উৎপাদনের ব্যবসা করেন। একসঙ্গে একাধিক কার্যক্রমও চলে কিছু খামারে।
শেরপুর উপজেলা প্রানীসম্পদ অধিদপ্তরের ভেটেরিনারী সার্জন ডা. মো. রায়হান বলেন, দেশি মুরগির (অরগ্যানিক) খামার সম্ভাবনাময় খাত। স্বল্প বিনিয়োগে বেকারদের বিকল্প কর্মসংস্থান হচ্ছে এই খাতে।
তিনি আরও বলেন, সম্পূর্ণ বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে দেশি (অরগ্যানিক) মুরগি পালন পদ্ধতির প্রশিক্ষন নিয়ে উপজেলায় প্রায় পাঁচশ’ খামার গড়ে উঠেছে। কর্মসংস্থান হয়েছে সহস্রাধিক মানুষের। পাশাপাশি নিরাপদ মাংস ও ডিমের চাহিদাও পূরন হচ্ছে।
বাসস/সংবাদদাতা/১৫৩৩/এমকে