বাসস দেশ-১৩ : সিলেটের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে গুণগত পরিবর্তন এসেছে

214

বাসস দেশ-১৩
দশ-উদ্যোগ-পরিবেশ
সিলেটের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে গুণগত পরিবর্তন এসেছে
॥ শুয়াইবুল ইসলাম ॥
ঢাকা, ২৮ জুন, ২০১৯ (বাসস) : জলবায়ু সহিষ্ণু বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে প্রতিবেশ ও পরিবেশের ঝুঁকি মোকাবেলায় নানামুখী উদ্যোগের ফলে সিলেটে বায়ুদূষণের মাত্রা কমেছে। একই সঙ্গে জীববৈচিত্র্যের জন্য সিলেটে গড়ে উঠছে প্রাণীবান্ধব পরিবেশ।
ক্লিন এয়ার এ্যান্ড সাস্টেইনেবল এনভায়রনমেন্ট প্রজেক্ট থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী সিলেট শহর ও আশপাশে বিগত ২ বছরে বায়ুদূষণের মাত্রা উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে।
ক্লিন এয়ার এ্যান্ড সাস্টেইনেবল এনভায়রনমেন্ট প্রজেক্ট কর্তৃপক্ষ জানায়, ২০১৭ সালের জানুয়ারি মাসে সিলেট নগরীতে বাতাসে বৃহত্তর বস্তুকণা দ্বারা (এমপি১০) বায়ুদূষণের মাত্রা ছিল ২৫৭.৪, যা ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে ১৫০.৩-এ দাঁড়ায়। একইভাবে বাতাসে ছোট্ট বস্তুকণার পরিমাণ (পিএম২.৫) ২০১৭ সালে ছিল ১৭৭.৩ এবং ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে অর্ধেকের বেশি হ্রাস পেয়ে ৮৩.৬ এ দাঁড়িয়েছে।
সিলেট সিটি কর্পোরেশন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের উদ্যোগে বিগত ১০ বছরে সিলেট সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। এছাড়া, পরিবেশ উন্নয়নে সবচেয়ে বেশি মনোযোগ দেয়া হয়েছে।
সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান বাসসকে বলেন, ‘ছড়া ও খাল উদ্ধার, প্রতিদিন বাসাবাড়ির বর্জ্য সংগ্রহ এবং বিশেষ করে বিষাক্ত মেডিকেল বর্জ্যরে ক্ষতি থেকে নগরবাসীকে রক্ষায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি গ্রহণ করা হয়েছে। ফলে সিলেট হয়ে উঠছে গ্রিন ও ক্লিন সিটি।’
পরিবেশ সুরক্ষায় সিলেট সিটি কর্পোরেশন এলাকায় বিগত ১০ বছরে অন্তত ৪শ’ কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। নূর আজিজুর রহমান বলেন, ‘সিলেট নগরীতে ১৭টি জলাশয় বা পুকুর এখনও টিকে আছে। এগুলোকে রিটেইনিং ওয়াল দিয়ে সংরক্ষণ করা হয়েছে। ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়নের মাধ্যমে জলাবদ্ধতা নিরসনে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
তিনি জানান, ‘পরিবেশ সুরক্ষায় গাছ লাগানো ও সচেতনতামূলক কার্যক্রমে গুরুত্ব দিচ্ছে সিটি কর্পোরেশন। আগামী অর্থবছরে নগরীতে পাঁচ হাজার গাছ লাগানোর পরিকল্পনা রয়েছে। চলতি বছর স্কুল-কলেজগুলোতে সেমিনার, র‌্যালি আয়োজনের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের সচেতন করতে নানামুখী উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।’
বিগত ২০১৪-২০১৮ পাঁচবছরে সিলেট সিটি কর্পোরেশন এলাকার ছড়া ও খাল উদ্ধার ও পরিচ্ছন্নতায় ২৩৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয় সরকার। ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন ও পুকুর জলাশয় রক্ষায় রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণসহ পরিবেশ বিষয়ক কর্মসূচিতে গত পাঁচ বছরে আরো প্রায় দুইশ’ কোটি টাকার বরাদ্দ দেয়া হয়।
এ বিষয়ে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘সিলেট নগরীতে পরিবেশ দূষণের বেশ কিছু কারণ চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের ফলে সিলেটের পরিবেশে গুণগত পরিবর্তন এসেছে। সরকারের আর্থিক সহায়তা ও নগরবাসীর আন্তরিক সহযোগিতায় এটা সম্ভব হচ্ছে।’ গ্রিন ও ক্লিন সিটি গড়তে তিনি ছড়া ও খালের প্রবাহ নিশ্চিতকরণে উদ্ধার অভিযান, ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি প্রয়োগের উল্লেখ করেন।
মেয়র বলেন, ‘সিলেট নগরীতে অন্তত ২শ’ টন গৃহস্থালীর বর্জ্য উৎপাদন হয় যা সিটি কর্পোরেশনের তত্ত্বাবধানে যথাযথ প্রক্রিয়ায় সংগ্রহ করে রাতের মধ্যে ডাম্পিং গ্রাউন্ডে নিয়ে ফেলা হয়।’ বর্জ্য ব্যবস্থাপনার আধুনিকায়নে ৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে স্যানেটারী ল্যান্ডফিল্ড নির্মাণ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
সিলেট নগরীতে ২১৭টি ক্লিনিক ও হাসপাতাল রয়েছে যাদের প্রায় অধিকাংশেরই বার্ণ ব্যবস্থা নেই। ক্লিনিক্যাল ও মেডিকেল বর্জ্যগুলো বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে ডাম্পিং করার জন্য ইতোমধ্যে অটোক্লেপ প্রযুক্তি চালু করা হয়েছে।
আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, “সিলেট নগরীর মেডিকেল ও ক্লিনিকগুলোতে আলাদা কোন ধরণের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ছিল না। মেডিকেলের বিষাক্ত বর্জ্য পানি প্রবাহের সঙ্গে নদী ও হাওরের পানিতে মিশে গেলে স্বাস্থ্যঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। তাই, সিটি কর্পোরেশন ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উদ্যোগ নিয়েছে।”
তবে, এ কর্মসূচির শতভাগ সাফল্য পেতে নিয়মিত পর্যবেক্ষণের পরামর্শ দিয়েছেন সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ ও পুরকৌশল বিভাগের বিভাগীয় প্রধান জহির বিন আলম। তিনি বলেন, “সিলেটের সব ক্লিনিকে এখনো বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সুযোগ নেই। ফেলে দেয়া বর্জ্য থেকে শিশুরা ব্যবহৃত সিরিঞ্জ কুড়িয়ে নেয়, যা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। তাছাড়া প্যাথলজিক্যাল জীবাণু সহজে নষ্ট হয় না। তাই, মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় আরও সতর্কতা জরুরি। ফেলে দেয়া বর্জ্য থেকে কেউ যেনো ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে।”
পরিবেশ সুরক্ষায় টিলা ও পাহাড় কাটা বন্ধ, স্টোন ক্রাশারের মাধ্যমে পাথর ভাঙা নিয়ন্ত্রণ এবং জীববৈচিত্র্য সুরক্ষায় ফলজ বনায়নে গুরুত্বারোপ করে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়ুবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. শরফ উদ্দিন বাসসকে বলেন, ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সিলেটসহ সারাদেশে বনায়নের ক্ষেত্রে ফলজ বৃক্ষ রোপনে গুরুত্ব দিতে হবে। কারণ, টেকসই উন্নয়ন অভিষ্ট লক্ষ্যমাত্রায় উল্লেখ করা হয়েছে- কোন মানুষ ক্ষুধার্ত থাকবে না।
অধ্যাপক শরফ বলেন, ‘সরকারের নানামুখী উদ্যোগ ও পরিকল্পনায় সিলেটে বায়ুদূষণের মাত্রা অনেকটা হ্রাস পেয়েছে। তবুও, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সরকারী প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোগ বাড়ানো জরুরী।’
সিলেট বনবিভাগ জানায়, সামাজিক বনায়ন, সচেতনতা কর্মসূচির পাশাপাশি সিলেটে প্রাণী সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এর ফলে সিলেটের মানুষ এখন আগের চেয়ে বেশী প্রাণীবান্ধব।
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আরেফিন খান জানান, ‘সিলেটের একজন ফটোগ্রাফার হবিগঞ্জের রেমাকালেঙ্গা বনে বিলুপ্তপ্রায় কয়েকটি মালয়ান বড় কাঠবিড়ালী (বৈজ্ঞানিক নাম- রাটুফা বিকালার) দেখতে পান। কয়েক বছর আগেও যার সংখ্যা ছিল হাতেগোনা।’
সম্প্রতি সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার লোভাছড়া চা বাগান এলাকায় বাঘ ধরার জন্য খেওড় (বাঘ ধরার কৌশল) স্থাপন করা হয়। এ খবর জানার সঙ্গে সঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে সঙ্গে নিয়ে বনবিভাগের কর্মকর্তারা সেখানে যান এবং উৎসুক জনগণকে যন্ত্রপাতিসহ সেখান থেকে সরিয়ে দেন।
সিলেটের উপ-বন সংরক্ষক এসএম সাজ্জাদ হোসেন বাসসকে বলেন, ‘সিলেটে একটি বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে। কোথাও পাখি শিকার, পশুপাখি আক্রান্ত হওয়ার খবর পেলেই বনবিভাগের কর্মীরা ছুটে যান, কখনো পরিবেশ বিষয়ক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্মীদের নিয়ে উদ্ধার করে নিয়ে এসে নিজস্ব সংরক্ষণ কেন্দ্রে চিকিৎসা দেয়া হয়। প্রাণীগুলো সুস্থ হয়ে উঠলে এগুলো যথাযথ স্থানে অবমুক্ত করা হয়।’
বন সংরক্ষক আরো বলেন, “সিলেটে সংরক্ষিত বনাঞ্চলে নানা প্রজাতির প্রাণী রয়েছে, তারা কোনভাবে যেনো ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে বিষয়ে আমরা সচেষ্ট রয়েছি।” তিনি রাতারগুল বনের কথা উল্লেখ করে বলেন, “এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বন। পর্যটকদের ভিড়ে রাতারগুলের বন্যপ্রাণী যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেজন্য পর্যটকদের প্রবেশ সীমিত করার পরিকল্পনা নেয়া হচ্ছে।”
২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে সিলেট শহরতলীতে বনবিড়াল ধরে পিটিয়ে আহত করে একদল যুবক। এ বিষয়টি জানার পর পরিবেশ বিষয়ক একটি সংগঠনের কর্মীদের নিয়ে সেখানে উপস্থিত হন বন কর্মকর্তা। যুবকদের বুঝিয়ে বিড়ালটি নিয়ে যান টিলাগড় বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কেন্দ্রে এবং সেখানে চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে উঠলে ১২দিন পর বনে ছেড়ে দেয়া হয় বিড়ালটি।
সিলেট বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কেন্দ্রের প্রাণী চিকিৎসক ডা. মঞ্জুর কাদের চৌধুরী বাসসকে বলেন, ‘সিলেট বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কেন্দ্রে গত এক বছরে ৪টি গন্ধগোকুল, ৬টি বাদামি পেঁচা, ৮টি নিম পেঁচা, ৪টি লক্ষীপেঁচা, ২টি বনবিড়াল, ৪টি অজগর, ৯টি ভূবনচিলকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।’
সিলেটে কয়েকটি পরিবেশ বিষয়ক সংগঠন রয়েছে যারা বনবিভাগের কার্যক্রমে সহায়তা করে। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), ভূমিসন্তান বাংলাদেশ, সিলেট কৃষি বিশ^বিদ্যালয়ের প্রাণি অধিকার সংরক্ষণ বিষয়ক সংগঠন প্রাধিকার ও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের গ্রীণ এক্সপ্লোর সোসাইটি এগুলোর মধ্যে অন্যতম।
ভূমিসন্তান বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়ক আশরাফুল কবীর বাসসকে বলেন, ‘সিলেট অঞ্চলের পরিবেশ ও প্রতিবেশ সুরক্ষায় নানামুখী প্রতিবন্ধকতা থাকা সত্ত্বেও সরকার এবং অন্যান্য সকলের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা ও কার্যক্রমের ফলে মানুষ এখন আগের চেয়ে অনেক সচেতন হয়েছে। কোথাও পশুপাখি আক্রান্ত হলে আমরা আহত হই। পরিবেশের জন্য সরকারের ইতিবাচক সকল কর্মসূচিতে আমরা একাত্ম।’
সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি এন্ড এনিমেল সায়েন্স বিভাগের প্রধান ড. একেএম মাহবুব-ই-এলাহী বলেন, “সরকার জীববৈচিত্র্য সুরক্ষায় নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছে। স্বেচ্ছাসেবীরা কাজে সহযোগিতা করছে। এর ফলে সিলেটে প্রাণীবান্ধব মানবিক পরিবেশ গড়ে উঠছে। এভাবে বণ্যপ্রাণীর নিরাপদ আবাস হয়ে উঠবে এ অঞ্চল।”
পরিবেশ অধিদপ্তর সিলেটের পরিচালক ইশরাত জাহান পান্না বলেন, “আইনগত কঠোরতার পাশাপাশি বৃক্ষরোপন ও সচেতনতা কার্যক্রমের মাধ্যমে সিলেট অঞ্চলের পরিবেশের ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। ইটভাটায় পরিবেশবান্ধব চিমনী ব্যবহার হচ্ছে, টিলাকাটা হ্রাস পেয়েছে এবং পলিথিনের ব্যবহার অনেকাংশে কমেছে।”
সিলেটের জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছেন যে, পরিবেশ সংরক্ষণ করেই উন্নয়ন করতে হবে। বিপর্যয় ঘটিয়ে টেকসই উন্নয়ন হবে না। প্রাকৃতিক ও নৈসর্গিক সৌন্দর্য্য রক্ষা করতে হবে। পরিবেশ সুরক্ষায় সামাজিক বনায়ন ও জলাশয় সংরক্ষণসহ পরিবেশের ক্ষতি হয় এমন কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে সিলেটের প্রশাসন অনেক বেশি কঠোর। তিনি বলেন, সিলেটে পাথর কোয়ারী বেশি তাই বিচ্ছিন্নভাবে ছড়িয়ে থাকা স্টোন ক্রাশারের কারণে পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে। এজন্য সিলেটের গোয়াইনঘাটে একটি স্টোন ক্রাশার জোন গড়ে তোলার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
বাসস/দশ/এসআই/১৭৪২/শআ