শীর্ষে চোখ বাবরের

283

বার্মিংহ্যাম (ইউকে), ২৮ জুন, ২০১৯ (বাসস/এএফপি) : কোচের কাছ থেকে পাকিস্তানের বাবর আজম প্রথম যে শিক্ষাটা পেয়েছেন, তা হচ্ছে প্রথম হবার জন্য খেলবে এবং একটি ম্যাচের শেষ বলটি পর্যন্ত। তিনি যে সেই উপদেশ ভোলেননি তার প্রমান দিয়েছেন নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে অসাধারণ একটি সেঞ্চুরি হাকিয়ে।
বুধবার এজবাস্টনের সেঞ্চুরিটি একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাবরের দশম। পাকিস্তানের ব্যাটিং কোচ গ্রান্ট ফ্লাওয়ার মনে করেন বাবরের মধ্যে রয়েছে ‘এক্স-ফ্যাক্টর’। তিনি বলেন, ‘সে খুবই স্পেশাল।’ বাবরের সেঞ্চুরিতে ভর করেই বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে নিউজিল্যান্ডের ছুঁড়ে দেয়া ২৩৮ রানের লক্ষ্য তাড়া করে জয়লাভ করেছে পাকিস্তান। এটি ছিল আসরে পাকিস্তানের তৃতীয় জয়।
ফ্লাওয়ার বলেন, ‘আমার বিশ্বাস, পাকিস্তানে যে সব সেরা ক্রিকেটারদের জন্ম দিয়েছে বাবর তাদের মধ্যে একজন। সে রানের জন্য সত্যি ক্ষুধার্ত থাকে। শারিরিকভাবে সুস্থ এবং বয়স এখনো কম, মাত্র ২৪ বছর। নিজের সামর্থ্য ধরে রাখতে পারলে আমার মনে হয় তার জন্য সত্যিকারের একটি ভাল ক্যারিয়ার অপেক্ষা করছে। আশা করি সে এটা করতে পারবে। তার মধ্যে কোহলির মত কিছু প্রবনতা রয়েছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে আমার মনে হয় সে কোহলির মত একজন হতে পারবে।’
অবশ্য এই মুহুর্তে পাকিস্তানী এই ক্রিকেটারের চেয়ে যোজন যোজন দূরত্বে এগিয়ে রয়েছেন কোহলি। ৪১টি ওডিআই সেঞ্চুরির মালিক এই ভারতীয় অধিনায়কের ব্যাটিং গড় ৬০। অথচ বাবর এখনো পর্যন্ত ৫৩ রানে অবস্থান করছে। তবে বাবর যেভাবে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার শুরু করেছেন, তাতে তার মধ্যে ভারতীয় সুপার স্টারের প্রতিচ্ছবি দেখা যাচ্ছে। কোহলির চেয়ে দ্রুতই ওয়ানডে ক্রিকেটের এক হাজার, দুই হাজার ও তিন হাজার রানের মাইলফলক ছুঁইয়েছেন বাবর।
তবে কোহলির সঙ্গে মেলানোকে চাটুকারিতা বলে মনে করেন বাবর। তিনি বলেন, ‘আমি তার ব্যাটিংয়ের ভিডিও দেখেছি। তিনি খুবই ধারাবাহিক এবং তার মনোসংযোগও খুব ভাল। যখনই তিনি ব্যাট হাতে নেন তখনই শতভাগ উজাড় করে দেন। আমার লক্ষ্য হচ্ছে পাকিস্তানকে প্রতিটি ম্যাচে জয় এনে দিয়ে বিশ্ব সেরা ব্যাটসম্যান হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা।’
সাফল্য পেতে কঠোর পরিশ্রম করেন বাবর। লাহোরের নিজ বাড়িতে তিনি নিয়মিতভাবে চার মাইল হাটেন। রোদ, বৃষ্টি বা যে কোন বৈরী আবহাওয়াই তার এই নিয়মিত অভ্যাসের ব্যাঘাত ঘটাতে পারেনা। অনুশীলনেও তিনি সবার শেষে মাঠ ছাড়েন।
পাকিস্তানের সাবেক ব্যাটসম্যান ও বর্তমানে ক্রিকেট কর্মকর্তা হারুন রশিদ বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘২০০৭ সালের অনূর্ধ্ব-১৬ ট্যালেন্ট হান্ট থেকে বেরিয়ে এসেছে বাবর। ২০০৭ সালেই পাকিস্তান অনূর্ধ্ব-১৫ দলের হয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর করেন তিনি। তার প্রজ্ঞা, আসক্তি এবং পেশার প্রতি সততা দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। তিনি কখনো কঠিন পরিশ্রমকে পাশ কাটিয়ে যাননি এবং ব্যাটিংকে দারুণ ভালবাসেন।’