রিফাত হত্যার আসামীরা যাতে দেশত্যাগ করতে না পারে : হাইকোর্ট

276

ঢাকা, ২৭ জুন, ২০১৯ (বাসস) : বরগুনায় স্ত্রীর সামনে স্বামী রিফাতকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনাটিকে খুবই দুঃখজনক উল্লেখ করে আসামীরা যেন দেশত্যাগ করতে না পারে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলেছে হাইকোর্ট।
এ বিষয়ে পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনার পর এ আদেশ দেয় বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট বেঞ্চ। বিষয়টি নিয়ে কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে তা জানাতে ডেপুটি এটর্নি জেনারেলকে বলেন আদালত। আদালতের নির্দেশে বরগুনার ঘটনায় প্রশাসনের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ হাইকোর্টকে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষ। পরে আদালত আসামিরা যেন দেশত্যাগ না করতে পারে সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেন।
ডেপুটি এটর্নি জেনারেল আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার আদালতে বলেন, ইতোমধ্যে মামলার পর একজন আসামি গ্রেফতার হয়েছেন। বাকিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। যত দ্রুত সম্ভব প্রত্যেক আসামিকে গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনা হবে। জেলার ডিসি-এসপি ও সংশ্লিষ্ট থানার ওসির সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য দেন ডেপুটি এটর্নি জেনারেল।
আদালত রাষ্ট্রপক্ষের উদ্দেশে বলেন, আইজি সাহেবকে বলেন আসামিরা যেন দেশত্যাগ করতে না পারে, বর্ডার ক্রস করতে না পারে। এজন্য সীমান্তে অ্যালার্ট জারি করতে বলবেন। আদালত বলেছেন, প্রকাশ্য রাস্তায় মানুষটাকে মারলো। একজন ছাড়া কেউ এগিয়ে আসলো না। ভিডিও করলো, কিন্তু কেউ এগিয়ে আসলো না। এটি জনগণের ব্যর্থতা! এই সামাজিক সচেতনতা তৈরি করবে কে ? দাঁড়িয়ে দেখেছে, কেউ প্রতিবাদ করলো না। পাঁচজন মানুষ অন্তত এগিয়ে আসলে হয়তো তারা সাহস পেত না।
বর্বরোচিত নির্মম এ ঘটনায় প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলো আদালতের নজরে এনে আইনজীবী ব্যারিষ্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, এমন অপরাধের ঘটনার বিচার যদি কোনো কারণে বিলম্ব হয় ও বিচারহীন হয়, তাহলে আরও এমন ঘটনা ঘটার আশঙ্কা থাকে। তবে বিচার হবে আশা করছি।
গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে প্রকাশ্যে স্ত্রীর সামনে রিফাত শরীফ (২২) নামে এক যুবককে কুপিয়ে জখম করে সাবেক স্বামী নয়ন ও তার সহযোগীরা। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে বরগুনা সদর হাসপাতাল ও পরে বরিশাল শেরে-ই বাংলা মেডিকেল (শেবাচিম) কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে বিকেল ৪টার দিকে চিকিৎসাধীন রিফাতের মৃত্যু হয়।
রিফাত বরগুনা সদর উপজেলার ৬ নম্বর বুড়িরচর ইউনিয়নের মাইঠা লবনগোলা এলাকার দুলাল শরীফের ছেলে। এদিকে ঘটনাটির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
রাতে রিফাতের বাবা ১২ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত পাঁচ থেকে ছয়জনকে আসামি করে বরগুনা সদর থানায় হত্যা মামলা করেন। এ ঘটনায় আজ সকাল ৯ টার দিকে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার করা ব্যক্তির নাম চন্দন। তিনি এ মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন বরিশাল বিভাগের পুলিশের উপ মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) শফিকুল ইসলাম। এ সময় তিনি বরগুনা কলেজের অধ্যক্ষর সঙ্গে কথা বলেন। তিনি বলেন, হামলার সঙ্গে জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে। এ ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। এ সময় বরগুনা জেলা পুলিশ সুপার মারুফ হোসেনসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।