বিএসএমএমইউ হাসপাতালে সফলভাবে লিভার প্রতিস্থাপন সম্পন্ন হয়েছে

240

ঢাকা, ২৫ জুন, ২০১৯ (বাসস): বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে প্রথমবারের মতো সফলভাবে লিভার ট্রান্সপ্লান্ট (প্রতিস্থাপন) সম্পন্ন হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের মিল্টন হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া সফলভাবে লিভার প্রতিস্থাপনের কথা জানান।
তিনি বলেন, সোমবার সিরাজুল ইসলাম নামের এক ২০ বছর বয়সী যুবকের দেহে বিনামূল্যে লিভার (যকৃত অথবা বহুল প্রচলিত কলিজা) প্রতিস্থাপন করা হয়েছে সে এখন ভাল আছে। তার জ্ঞান ফিরেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের হেপাটোবিলিয়ারি, প্যানক্রিয়েটিক ও লিভার ট্রান্সপ্লান্ট সার্জারি বিভাগের সার্জনরা এই সফল অস্ত্রোপচার সম্পন্ন করেছেন জানিয়ে কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন, বিভাগের চেয়ারম্যান ডা. জুলফিকার রহমান খানের নেতৃত্বে একটি মেডিকেল টিম দেশে সরকারি হাসপাতালে এই প্রথম এ ট্রান্সপ্লান্ট সম্পন্ন করেছেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া বিএমএ সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আতিকুর রহমান, হেপাটোবিলিয়ারি প্যানক্রিয়াটিক ও লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট সার্জারি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. জুলফিকার রহমান খান প্রমুখ এ সময়ে উপস্থিত ছিলেন।
লিভার প্রতিস্থাপনে সহযোগিতা করেছেন ভারতের খ্যাতনামা লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট সার্জন ডা. বালাচান্দ্র মেননসহ তার চিকিৎসক দল।
সংবাদ সম্মেলনে জাহিদ মালেক বলেন, লিভার ট্রান্সপ্লান্ট (প্রতিস্থাপন) স্বাস্থ্যসেবায় এটি একটি নতুন মাইলফলক। এরআগে বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট (অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন) হয়েছে।
তিনি বলেন, আগে হার্টের চিকিৎসা করতেও দেশের বাইরে যেতে হতো। এখন তা অনেক কমেছে। সব মিলিয়ে স্বাস্থ্যখাত উন্নত হওয়ায় আমাদের গড় আয়ু ৭৩ বছরে উন্নীত হয়েছে। দেশের প্রয়োজনে ৯৮ শতাংশ ওষুধ দেশেই উৎপাদন করা হয় ও রপ্তানী করা হয়।
কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উৎসাহ ও অনুপ্রেরণায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় বিএসএমএমইউ হাসপাতালের হেপাটোবিলিয়ারি, প্যানক্রিয়েটিক ও লিভার ট্রান্সপ্লান্ট সার্জারি বিভাগের মাধ্যমে মাল্টি ডিসিপ্লিনারি অ্যাপ্রোচ অর্থাৎ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিভাগের সহায়তা নিয়ে দেশেই সাশ্রয়ী ব্যয়ে বা স্বল্প খরচে দেশের রোগীদের লিভার ট্রান্সপ্লান্ট সেবা দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে এবং সফলভাবে সোমবার থেকে এ চিকিৎসাসেবার কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, দেশের লিভারের বিভিন্ন রোগের সমস্যা একটি দুশ্চিন্তার বিষয়। যদি কোনো রোগীর লিভার সিরোসিস হয়ে যায়, তাহলে তার একমাত্র চিকিৎসা লিভার ট্রান্সপ্লান্ট। এ চিকিৎসাটি বাংলাদেশে করতে কমপক্ষে ৫০ লাখ টাকা ব্যয় হয়, বিদেশে কোটি টাকা খরচ হয়।