বাসস ক্রীড়া-৭ : নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জয়ের বিকল্প নেই পাকিস্তানের

151

বাসস ক্রীড়া-৭
ক্রিকেট-বিশ্বকাপ-প্রিভিউ
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জয়ের বিকল্প নেই পাকিস্তানের
বার্মিংহাম, ২৫ জুন, ২০১৯ (বাসস) : এখন পর্যন্ত ছয় ম্যাচে অপরাজিত নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে কাল বিশ্বকাপের ৩৩তম ম্যাচে মাঠে নামছে ‘আনপ্রেডিকটেবল’ পাকিস্তান। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জয় ইতোমধ্যেই সেমিফাইনালের পথে এক পা দিয়ে রাখা নিউজিল্যান্ডের জয়যাত্রাকে এগিয়ে নিয়ে গেলেও পাকিস্তানের জন্য বিষয়টা ভিন্ন। সেমিফাইনালের আশা টিকিয়ে রাখতে এই ম্যাচে জয়ের বিকল্প নেই। প্রথম পাঁচ ম্যাচের তিনটিতেই পরাজিত হওয়া ১৯৯২ বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা খাদের একেবারে কিনারায় চলে গিয়েছিল। এর মধ্যে চির প্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের বিপক্ষে দাঁড়াতেই পারেনি পাকিস্তান। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে রোববার ৪৯ রানের রানের জয় শেষ চারে পাকিস্তানের স্বপ্ন আবারো নতুন করে জাগিয়ে তুলেছে। নিউজিল্যান্ড, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশের বিপক্ষে বাকি তিনটি ম্যাচে জিততে পারলেই সেমিফাইনাল পথ অনেকটাই নিশ্চিত হবে।
বিশ্বকাপের শুরুটা মোটেই ভাল না হলেও সেমিফাইনালে লড়াইয়ে এখনো পাকিস্তানের আশা দেখছেন কোচ মিকি আর্থার। ১০ জাতির এবারের আসরে ফেবারিট অস্ট্রেলিয়া, ভারত ও ইংল্যান্ডকে পিছনে ফেলে এখনো টেবিলের শীর্ষে অবস্থান করছে নিউজিল্যান্ড। বাংলাদেশ ও শ্রীলংকার পরে পাকিস্তানের অবস্থান সপ্তম। সব সম্ভাবনাকে এখনো টিকিয়ে রেখে আর্থার বলেছেন, ‘নি:সন্দেহে আমরা বাঁচা-মরার লড়াইয়ে আছি। অবশ্যই আমাদের ভাগ্য অনেকটাই অন্য ম্যাচগুলোর ফলাফলের উপর নির্ভর করছে। তবে আমাদেরও বাকি তিনটি ম্যাচই জিততে হবে।’
ইংল্যান্ডকে টুর্নামেন্টের শুরুতে পরাজিত করে বিস্ময় সৃষ্টি করা পাকিস্তান নিজেদের দিনে যেকোন দলকেই পরাজিত করার ক্ষমতা রাখে বলে মনে করেন আর্থার। এ সম্পর্কে আর্থার বলেছেন, ‘আমরা যখন নিজেদের সেরা খেলাটা খেলি তখন যেকোন দলকেই পরাজিত করার ক্ষমতা রাখি। নিউজিল্যান্ড, আফগানিস্তান কিংবা বাংলাদেশের বিপক্ষে বাকি তিনটি ম্যাচের জন্যই এটা প্রযোজ্য। বিশ্বকাপে অন্য দলগুলোর মতই আমাদেরও যোগ্যতা আছে।’
গত সপ্তাহে ম্যানচেস্টারে ভারতের বিপক্ষে পরাজয়ের পর পাকিস্তান লড়াইয়ে ফিরেছে বলে মনে করেন আর্থার। তিনি বলেন, ‘ঐ পরাজয়ে আমরা সবাই অত্যন্ত হতাশ হয়েছি। ছেলেরা রাতে ঘুমাতে পারেনি। কিন্তু এরপর প্রতিদিনই তারা অনুশীলনে কঠোর পরিশ্রম করেছে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জয়ী হয়ে আমরা তার পুরস্কার পেয়েছি।’
তবে ফিল্ডিংয়ে পাকিস্তানের এখনো অনেক উন্নতির প্রয়োজন রয়েছে। প্রোটিয়াদের বিপক্ষে পাঁচটি ক্যাচ ফেলেছে ফিল্ডাররা, এর মধ্যে তিনটি ছিল মোহাম্মদ আমিরের বোলিংয়ে। এ প্রসঙ্গে আর্থার বলেন, ‘আমাদের সমস্যা হচ্ছে কোন ম্যাচেই তিনটি বিভাগে আমরা একসাথে ভাল করতে পারছিনা। বোলিং-ব্যাটিং ভাল হলেও ফিল্ডিংয়ে সমস্যা হচ্ছে। সে কারনে যখন তিনটিতেই ভাল করতে পারবো আমাদের পারফরমেন্সেরও উন্নতি হবে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জয়টা এভাবেই এসেছিল।’
দুর্দান্ত ফর্মে থাকা নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন সামনে থেকেই দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। উইলিয়ামসনের দলের বিরুদ্ধে জয়টাও যে তাই মোটেই সহজ নয় তা অনুমেয়। তারপরেও বাঁ-হাতি পেসার মোহাম্মহদ আমিরের ফর্ম নিয়ে পাকিস্তান আত্মবিশ্বাসী হতেই পারে। এ পর্যন্ত ১৫ উইকেট নিয়ে ইতোমধ্যেই উইকটে শিকারীর তালিকায় শীর্ষে রয়েছেন আমির। তবে আমিরকে সেভাবে সহযোগিতা করতে পারছেন না সতীর্থ বোলাররা, আর এটাই মূলত পাকিস্তানের সামনে এখন বড় দু:শ্চিন্তা।
পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইন-আপও নিজেদের যোগ্যতার প্রমান সেভাবে দিতে পারেনি। বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যান হারিস সোহেল প্রথম ম্যাচে বাদ পড়ার পর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৫৯ বলে ৮৯ রান করে হয়েছেন ম্যাচ সেরা।
দুর্দান্ত ফর্মে থেকে অপরাজিত নিউজিল্যান্ড টেবিলের শীর্ষে থাকলেও পাকিস্তানকে মোটেই খাটো করে দেখছে না। বিশ্বকাপে এশিয়ান প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপক্ষে কিউইদের রেকর্ডটাও সুখকর নয়। এ পর্যন্ত আট ম্যাচে নিউজিল্যান্ড জয় পেয়েছে মাত্র দুটিতে। ১৯৮৩ সালে বার্মিংহামে ও ২০১১ সালে পাল্লেকেলেতে জয় দুটি এসেছিল। কিন্তু পরিসংখ্যানের বিচারে নয়, মাঠের লড়াইয়ে যে দল সঠিকভাবে নিজেদের এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে তাদের পক্ষেই থাকবে সৌভাগ্যের চাবিকাঠি।
পাকিস্তান : ইমাম উল হক, ফখর জামান, বাবর আজম, হারিস সোহেল, সরফরাজ আহমেদ (অধিনায়ক), মোহাম্মদ হাফিজ, ইমাদ ওয়াসিম, সাদাব খান, মোহাম্মদ আমির, হাসান আলী, ওয়াহাব রিয়াজ,
নিউজিল্যান্ড : মার্টিন গাপটিল, কলিন মুনরো, কেন উইলিয়ামসন (অধিনায়ক), রস টেইলর, ইস সোধি, জেমস নিশাম, কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম, মিচেল স্যান্টনার, ম্যাট হেনরি, লোকি ফার্গুসন, ট্রেন্ট বোল্ট, টম লাথাম, হেনরি নিকোলস, টিম সাউদি, টম ব্লান্ডেল।
বাসস/নীহা/১৭১৫/স্বব