মার্টিনেজ, এগুয়েরোর গোলে কোপা আমেরিকার কোয়ার্টার ফাইনালে আর্জেন্টিনা

240

পোর্তো আলেগ্রে (ব্রাজিল), ২৪ জুন ২০১৯ (বাসস) : লটারো মার্টিনেজ ও সার্জিও এগুয়েরোর গোলে রোববার এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন কাতারকে ২-০ গোলে পরাজিত করে কোপা আমেরিকার কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করেছে আর্জেন্টিনা। তবে এই পরাজয়ে বিদায় ঘটেছে কোপায় অভিষিক্ত কাতারের।
গ্রুপ-বি’তে দিনের অপর ম্যাচে ইতোমধ্যেই শেষ আট নিশ্চিত করা কলম্বিয়া প্যাারগুয়েকে ১-০ গোলে পরাজিত করেছে। তিন ম্যাচে শতভাগ জয় নিয়ে শীর্ষ দল হিসেবেই কলম্বিয়ার নক আউট পর্বে উঠেছে। অন্যদিকে তিন ম্যাচে একটি করে জয় ও ড্রসহ ৪ পয়েন্ট সংগ্রহ করে গ্রুপের দ্বিতীয় দল হিসেবে আর্জেন্টিনা কোয়ার্টারের টিকিট পেয়েছে। তিন গ্রুপের দুটি শীর্ষ দলের সাথে তৃতীয় স্থানে থাকা সেরা দুটি দলও কোয়ার্টার ফাইনালে খেলবে। যে কারনে গ্রুপ-এ’র তৃতীয় দল হিসেবে ইতোমধ্যেই পেরু একটি স্থান নিশ্চিত করেছে।
কোয়র্টার ফাইনালে আর্জেন্টিনা রিও ডি জেনিরোর ঐতিহাসিক মারাকানা স্টেডিয়ামে ভেনেজুয়েলার মোকাবেলা করবে। কাতারের বিপক্ষে বাঁচা মরার লড়াইয়ে আর্জেন্টাইন কোচ লিয়নেল স্কালোনি ম্যানচেস্টার সিটি ফরোয়ার্ড এগুয়েরোকে মূল একাদশে সুযোগ দিয়েছিলেন। তবে এ্যাঙ্গেল ডি মারিয়ার স্থানে মার্টিনেজ ঠিকই তার জায়গা ধরে রেখেছিলেন। এশিয়ান চ্যাম্পিন কাতারের শুরুটা বিপদজনক করে তুলেছিলেন বাসাম হিশাম। ৪ মিনিটে হিশাম নিজের বক্সে ক্রস করতে গিয়ে মার্টিনেজের পায়ে বলটি আসলে তা জালে জড়াতে কোন ভুল করেননি ইন্টার মিলানের এই ফরোয়ার্ড। ম্যাচ শেষে মার্টিনেজ বলেছেন, ‘গোলটি শুরুতেই আসায় আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে সুবিধা হয়েছে। প্রথম থেকেই আমাদের উপর চাপ ছিল। ম্যাচটিতে জেতার বিকল্প ছিলনা। এখন আমাদের আরো বেশী পরিশ্রম করতে হবে।’
গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচেই কলম্বিয়ার কাছে পরাজিত হয়ে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায়ের যে শঙ্কা আর্জেন্টিনার ঘাড়ে ছিল তা আপাতত সড়ে গেছে। এখন পাঁচ বারের ব্যালন ডি’অর বিজয়ী লিয়নেল মেসিসহ আগুয়েরো, মার্টিনেজদের অনেকটাই স্বস্তিতে খেলে নিজেদের প্রতিভাবে প্রমানের সুযোগ বাড়লো।
এদিকে কাতার খুব একটা প্রত্যাশা নিয়ে এই টুর্ণামেন্টে খেলতে আসেনি। তবে পুরো টুর্ণামেন্টে যে তিনটি ম্যাচ তারা খেলেছে তাতে ২০২২ বিশ্বকাপের স্বাগতিক হিসেবে আত্মবিশ্বাস নিয়েই তারা বাড়ি ফিরে যাচ্ছে। কালও তারা টুর্নামেন্টের অন্যতম ফেবারিট আর্জেন্টিনার বিপক্ষে একেবারে ছেড়ে কথা বলেনি। ১৯ মিনিটে হামাস খালিদ আল হাইডো কাউন্টার এ্যাটাক থেকে আর্জেইন্টান গোলরক্ষক ফ্র্যাংকো আরমানির মাথার উপর দিয়ে চিপ করে বল পাঠালেও কোনরকমে তা পোস্টের বাইরে পাঠান আরমানি। যদিও লাইন্সম্যান আগেই পতাকা উঠালে অফ-সাইডের কারনে কর্ণার হয়নি।
কাতারের স্প্যানিশ কোচ ফেলিক্স সানচেজ বলেছেন, ‘আমরা অনভিজ্ঞতার কারণে হেরেছি। দুটি ম্যাচে আমরা একেবারে বাজেভাবে শুরুতেই দুটি গোল হজম করেছি, যার থেকে আর বেরিয়ে আসতে পারিনি। এমন একটি দলের বিপক্ষে কাল আমরা মাঠে নেমেছিলাম যারা টুর্ণামেন্ট ফেবারিট ও এই জয়টা তাদের প্রয়োজন ছিল। যে কারনে প্রথম থেকেই তারা সুযোগ কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছে। প্রথম গোলটা আমাদের ভুল ছিল।’
বিরতির পর কাতার কিছুটা আগ্রাসী হয়ে মাঠে নামে। করিম বোডিয়াফের ভলি অল্পের জন্য কাতারকে হতাশ করেছে। যদিও আর্জেন্টিনাও পাল্টা আক্রমনে ব্যবধান বাড়ানোতে সচেষ্ট ছিল। নিকোলাস ওটামেন্ডির হেড পোস্টের বাইরে দিয়ে চলে যায়। মার্টিনেজের হেড দারুন দক্ষতায় রুখে দেন কাতার গোলরক্ষক সাদ আল-শিব। ফ্রি-কিক থেকে ইরানী বংশোদ্ভূত হিশাম প্রায় গোল পেয়েই গিয়েছিলেন। আর্জেন্টাইন দেয়ালকে পরাস্ত করলেও গোলাবার ঘেষে ফ্রি-কিকটি বাইরে চলে যায়। ৮২ মিনিটে আর শেষ রক্ষা হয়নি। দু’জন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে ডান দিক থেকে এগুয়েরোর ক্রস ধরার সাধ্য ছিলনা শিবের।
দিনের আরেক ম্যাচে কলম্বিয়ান পর্তুগীজ কোচ কার্লোস কুয়েরোজ ১০টি পরিবর্তন করে মূল একাদশ সাজিয়েছিলেন। যদিও জুভেন্টাসের ফরোয়ার্ড হুয়ান কুয়াড্রাডো তার স্থান ধরে রেখেছিলেন। ৩১ মিনিটে গুস্তাভো কুয়েলারের গোলে কলম্বিয়ার জয় নিশ্চিত হয়। দ্বিতীয়ার্ধে কলম্বিয়া একটি পেনাল্টি পেলেও ভিএআর’র কারনে তা বাতিল হয়ে যায়।