বাসস দেশ-৫ : জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনসমূহের ফোর্স কমান্ডারগণের বাংলাদেশ মিশন পরিদর্শন

141

বাসস দেশ-৫
বাংলাদেশ মিশন-পরিদর্শন
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনসমূহের ফোর্স কমান্ডারগণের বাংলাদেশ মিশন পরিদর্শন
নিউইয়র্ক, ২০ জুন, ২০১৯ (বাসস) : জাতিসংঘের মিলিটারি অ্যাডভাইজর লে. জে. কার্লোস লয়টে এর নেতৃত্বে বুধবার জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনসমূহের ফোর্স কামান্ডারগণ বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন পরিদর্শন করেছেন।
ঢাকায় প্রাপ্ত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা গেছে।
এতে বলা হয়, জাতিসংঘের চলতি ‘১৭তম হেড অব মিলিটারি কমপনেন্ট কনফারেন্স’ এর অংশ হিসেবে তাঁরা বাংলাদেশ মিশন পরিদর্শনে আসেন।
জাতিসংঘে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাসহ ৩৫ সদস্যের ডেলিগেশনে শান্তিরক্ষা মিশনসমূহের ১২ জন ফোর্স কমান্ডার ছিলেন।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের অব্যাহত অগ্রযাত্রা, বাংলাদেশী শান্তিরক্ষীদের সুনাম এবং জাতীয়ভাবে অর্জিত বাংলাদেশের সু-অনুশীলনসমূহ সমন্ধে জানতে ও শান্তিরক্ষা কার্যক্রম সংক্রান্ত পারস্পরিক অভিজ্ঞতা বিনিময়ের অংশ হিসেবে জাতিসংঘ সদরদপ্তর ফোর্স কমান্ডারদের প্রতিনিধিদলের পরিদর্শনের জন্য বাংলাদেশ মিশনকে নির্ধারণ করেন।
জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন প্রতিনিধিদলকে স্বাগত জানান। স্বাগত বক্তব্যে তিনি অন্যতম বৃহৎ শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ হিসেবে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের ব্যাপক অবদানের কথা তুলে ধরেন।
এ প্রসঙ্গে তিনি বাংলাদেশের নারী শান্তিরক্ষীদের সংখ্যা অব্যাহতভাবে বৃদ্ধিসহ আধুনিক সরঞ্জাম সরবরাহ ও ব্যাপকভিত্তিক প্রশিক্ষণ প্রদানের কথা উল্লেখ করেন।
রাষ্ট্রদূত মাসুদ জাতিসংঘের শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষা, টেকসই শান্তি ও পিস্বিল্ডিং কার্যক্রমে বাংলাদেশের নিবিড় অংশগ্রহণ বিশেষ করে পিসকিপিং মিনিস্ট্রিয়াল, শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের বিশেষ কমিটি (সি-৩৪); নারী, শান্তি ও নিরাপত্তা বিষয়ক জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ২০০০ সালে গৃহীত রেজুলেশন ১৩২৫, রেসপনসিবিলিটি টু প্রটেক্ট (আর২পি) এজেন্ডাসহ জাতিসংঘ মহাসচিবের অ্যাকশন ফর পিসকিপিং (এ৪পি) ইনশিয়েটিভ-এ বাংলাদেশের তাৎপর্যপূর্ণ ও ফলপ্রসূ অবদানের কথা তুলে ধরেন।
শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে যৌন নির্যাতন রোধে বাংলাদেশের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির পুনরুল্লেখ করেন রাষ্ট্রদূত মাসুদ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশের অভাবনীয় আর্থ-সামাজিক অগ্রগতির কথাও তুলে ধরেন তিনি।
গতবছর এলডিসি ক্যাটেগরি থেকে বাংলাদেশ উত্তরণের যোগ্যতা অর্জন করেছে মর্মে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত ও শিল্পসমৃদ্ধ দেশে পরিণত হওয়ার রূপকল্প গ্রহণ ও তা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। এছাড়া রোহিঙ্গা ইস্যুসহ জলবায়ু পরিবর্তন ও বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধিজনিত চ্যালেঞ্জসমূহ বাংলাদেশ মোকাবিলা করছে বলে উল্লেখ করেন স্থায়ী প্রতিনিধি।
বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের ডিফেন্স অ্যাডভাইজর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল খান ফিরোজ আহমেদ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীদের ভূমিকা ও বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশ সামনের সারির একটি দেশ। এ পর্যন্ত বাংলাদেশের ১ লাখ ৬৩ হাজার ১৮১ জন শান্তিরক্ষী জাতিসংঘের ৫৪টি পিস কিপিং মিশনে অংশ নিয়েছেন, যাঁর মধ্যে রয়েছেন ১ হাজার ৬১৬ জন নারী সদস্য। আর বর্তমানে ১০টি মিশনে নিয়োজিত রয়েছেন ৬ হাজার ৫০০ জন বাংলাদেশী শান্তিরক্ষী। দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় এ পর্যন্ত শহীদ হয়েছেন ১৪৬ জন এবং আহত হয়েছেন ২২৭ জন’।
এছাড়া বিগত ত্রিশ বছরে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের সাফল্য মন্ডিত অগ্রযাত্রার বিভিন্ন দিকগুলোর কথা তুলে ধরেন ডিফেন্স অ্যাডভাইজর।
প্রতিনিধিদলকে বাংলাদেশের উন্নয়ন পরিক্রমা ও শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের বাংলাদেশের অংশগ্রহণ শীর্ষক দুটি ভিডিও প্রদর্শন করা হয়।
তথ্য-সমৃদ্ধ এই চমৎকার আয়োজন ও আতিথেয়তার জন্য শান্তিরক্ষা মিশনসমূহের ফোর্স কামান্ডারগণসহ ডেলিগেশনের সকল সদস্য বাংলাদেশ মিশনকে ধন্যবাদ জানান।
তাঁরা বাংলাদেশকে সবচেয়ে বিশ্বস্থ, সহায়তাকারী ও উদার শান্তিরক্ষীর দেশ হিসেবে উল্লেখ করেন।
ফোর্স কমান্ডারগণ জটিল ও বহুমূখী হুমকিসংকুল পরিবেশে সফলভাবে শান্তিরক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশী শান্তিরক্ষীদের পেশাগত দক্ষতা ও নিয়মানুবর্তিতার ভূয়সী প্রশংসা করেন।
অনুষ্ঠানটিতে জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশনের কর্মকর্তাগণসহ জাতিসংঘ সদরদপ্তরে কর্মরত বাংলাদেশ সামরিক বাহিনীর কর্মাকর্তাগণও উপস্থিত ছিলেন।
বাসস/সবি/এমএমবি/১৫৩২/এমএবি