পরিবেশ সংরক্ষণে সরকারের পাশাপাশি বিশ্বসম্প্রদায়কে এগিয়ে আসতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

194

ঢাকা, ১৯ জুন, ২০১৯ (বাসস) : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরিবেশ সংরক্ষণে সরকারের পাশাপাশি বিশ্বসম্প্রদায়কে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, বিশ্ব পরিবেশ দিবস উদ্যাপনের মধ্য দিয়ে পরিবেশ ও প্রতিবেশ সংরক্ষণে জনসচেতনতা ও জনসম্পৃক্ততা বৃদ্ধি পাবে। বাংলাদেশ সরকারের পাশাপাশি পরিবেশ সংরক্ষণে বিশ্বসম্প্রদায়কে এগিয়ে আসার উদাত্ত আহ্বান জানাই।’
আগামীকাল (২০ জুন) বিশ্ব পরিবেশ দিবস উদ্যাপন উপলক্ষে আজ বুধবার দেয়া এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। পরিবেশ দিবস উপলক্ষে এ বছরের প্রতিপাদ্য ‘বায়ু দূষণ’।
দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি পরিবেশ ও সামাজিক উন্নয়নে বলিষ্ঠ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সরকার প্রকৃতি ও পরিবেশ সংরক্ষণকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে।’
তিনি বলেন, ‘নতুন নতুন অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং শিল্পপ্রতিষ্ঠান স্থাপনে যাতে প্রতিবেশ ও পরিবেশসম্মত বিধিব্যবস্থা প্রতিপালিত হয় সে দিকে বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে। বর্জ্য শোধনাগার স্থাপন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার বায়ুদূষণের মাত্রা সার্বক্ষণিক পরিবীক্ষণের জন্য ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, সিলেট, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, সাভার, নরসিংদী, ময়মনসিংহ, রংপুর ও কুমিল্লা শহরে মোট ১৬টি সার্বক্ষণিক বায়ুমান পরিবীক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করেছে। এছাড়াও দেশের বড় শহরগুলোতে আরো ১৫টি স্থানান্তরযোগ্য বায়ুমান পরিবীক্ষণযন্ত্র স্থাপন করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘ক্লিন এয়ার অ্যাক্টের খসড়া প্রণয়ন করা হয়েছে, যা অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। যানবাহনের দূষণ হ্রাসে ডিজেলে সালফারের মাত্রা কমিয়ে আনা হয়েছে। ঢাকা শহরে যানবাহনের চাপ ও দূষণ কমানোর লক্ষ্যে মেট্রোরেল ও বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট চালু হচ্ছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘ইতোমধ্যে বিভিন্ন রুটে চক্রাকার বাস সার্ভিস চালু করা হয়েছে। গৃহের অভ্যন্তরে বায়ুদূষণরোধে প্রায় ৩০ লাখ উন্নত চুলা বিতরণ করা হয়েছে। বিদ্যুৎ সংযোগবিহীন প্রত্যন্ত গ্রামগুলোতে প্রায় ৫৫ লাখ সোলার হোম সিস্টেম চালু করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের দৈনন্দিন জীবনে প্রকৃতি ও পরিবেশের গুরুত্ব অপরিসীম। মানুষের অপরিনামদর্শী কর্মকা-ের কারণে প্রতিনিয়ত পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। ফলে প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিশে^র উন্নয়নশীল অনেক দেশের মত বাংলাদেশেও বায়ুদূষণজনিত সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করেছে। সনাতন পদ্ধতিতে ইট পোড়ানো, যানবাহনের ধোঁয়া, অপরিকল্পিত নির্মাণ কাজ এবং দূষণরোধে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় বায়ু দূষিত হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘বায়ুদূষণের ফলে অনেকেই শ^াসকষ্টসহ বিভিন্ন ধরনের অসুস্থতায় ভুগছেন এবং মৃত্যুবরণ করছেন। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী বায়ুদূষণের ফলে বিশ্বব্যাপী প্রতিবছর প্রায় ৭০ লাখ মানুষ মারা যাচ্ছে; এর মধ্যে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে প্রায় ৪০ লাখ মানুষের মৃত্যু হচ্ছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বায়ুদূষণজনিত রোগ প্রতিকারে প্রতি বছর স্বাস্থ্যসেবা খাতে বিশ^ অর্থনীতির প্রায় ৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় হচ্ছে। বায়ুদূষণ সঙ্কট মোকাবেলায় জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ব্যাপক সচেতনতা বৃদ্ধিসহ কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ অত্যাবশ্যক।’
তিনি পরিবেশ সংরক্ষণে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও বাংলাদেশে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে বিশ^ পরিবেশ দিবস পালিত হচ্ছে জেনে আনন্দ প্রকাশ এবং দিবসটি উপলক্ষে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।