সংসদ ভবন, ১৮ জুন, ২০১৯ (বাসস) : প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকারি দলের সদস্যরা বলেছেন, বাজেট বাস্তবসম্মত, এটা কোন অবস্থায়ই বিশাল বাজেট নয়, ১৭ কোটি জনসংখ্যার দেশে এর চেয়ে চারগুন বড় আকারের বাজেট দেয়া প্রয়োজন।
তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আগামীদিনে আরো বড় আকারের বাজেট দিয়ে এবং বাস্তবায়ন করে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ নিশ্চিত করা হবে।
তারা বাজেটকে গণমুখী উল্লেখ করে বলেন, সফলভাবে বাস্তবায়নের মাধ্যমে এ বাজেটে জনগণের আশা-আকাক্সক্ষার প্রতিফলন ঘটেছে।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে আজ বিকেল ৩টা ০৯ মিনিটে অধিবেশনের শুরুতে মন্ত্রীদের জন্য প্রশ্ন-জিজ্ঞাসা-উত্তর টেবিলে উপস্থাপন শেষে ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনা শুরু হয়।
গত ১৩ জুন অর্থমন্ত্রী আ,হ.ম মুস্তফা কামাল ২০১৯-২০ অর্থবছরের জন্য ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকার বাজেট পেশ করেন।
২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট আলোচনার ১ম দিন আজ সরকারি দলের অধ্যাপক আলী আশরাফ, আবদুল মান্নান, মো. সাইফুজ্জামান, পংকজ নাথ, হাবিবে মিল্লাত, খালেদা খানম, কানিজ ফাতেমা আহমেদ, অ্যারোমা দত্ত, সৈয়দা রুবিনা আক্তার, শেখ এ্যানি রহমান, বিএনপির মোশাররফ হোসেন ও ওয়ার্কার্স পার্টির বেগম লুৎফুন্নেসা খান অংশ নেন।
বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকারি দলের অধ্যাপক আলী আশরাফ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের অর্থনীতি আরো মজবুত হয়েছে। এটা আজ আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। এরই ধারাবাহিকতায় আগামী অর্থ বছরের জন্য সোয়া পাঁচ লাখ কোটি টাকার বেশী বাজেট দেয়া সম্ভব হয়েছে। সরকারের গত দুই মেয়াদে প্রবৃদ্ধি ধারাবাহকভাবে ৬ শতাংশের বেশী অর্জন করা সম্ভব হয়েছে। দুই মেয়াদের এ প্রবৃদ্ধি অর্জনে সাফল্যের ধারাবাহিকতায় আগামী অর্থ বছরে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৮ দশমিক ১০ শতাংশ নির্ধারন করা হয়েছে। মূল্যস্ফীতি ধরা হয়েছে ৫ দশমিক ৫শতাংশ।
প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে বিভিন্ন মহলের সমালোচনার জবাবে তিনি বলেন, ১৭ কোটি জনসংখ্যার দেশে এটি কোন বড় আকারের বাজেট নয়। জনসংখ্যার দিক থেকে আরো ৪ গুন বড় আকারের বাজেট প্রদান করা দরকার ছিল। ইনশাল্লাহ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এ কাঙ্খিত আকারের বাজেট দেয়া সম্ভব হবে। আর এর মাধ্যমে দেশ ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়া সম্ভব হবে।
আলী আশরাফ বাজেটের ব্যপারে সমালোচনার জবাবে আরো বলেন, এ বাজেট বা প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্র কোন অবস্থায়ই বিশাল নয়।এ সরকারে দেয়া বিগত বাজেটগুলো সফলভাবে বাস্তবায়নের মাধ্যমে প্রমান হয়েছে সরকার আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটও বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হবে। তবে তিনি দেশের রাজস্ব আয় বাড়াতে করের আওতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
সরকারি দলের আবদুল মান্নান, প্রস্তাবিত বজেটকে ব্যাতিক্রম উল্লেখ করে বলেন, এ বাজেটে ১শ’ কোটি টাকা নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এছাড়া আরো ১শ’ কোটি টাকা নদী ভাঙ্গন কবলিতদের পুর্নবাসনের জন্য রাখা হয়েছে। এটা দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা রাখবে।
এছাড়া তিনি বর্তমান সরকারের আমলে কৃষি, খাদ্য, আবাসন, স্বাস্থ্য সেবা, শিক্ষা বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, অবকাঠামো খাত, সামাজিক নিরাপত্তাসহ সবখাতে অর্জিত সাফল্যের চিত্র তুলে ধরেন।
সরকারি দলের সদস্যরা বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে দেশের যে অভূতপূর্ব অর্থনেতিক অগ্রগতি সাধিত হয়েছে, তা আজ দৃশ্যমান। আন্তর্জাতিক বিশ্বের কাছে বাংলাদেশের উন্নয়ন সাফল্য আজ বিস্ময়। আগামী অর্থবছরের জন্য বর্তমান সরকার বাংলাদেশের গত ৪৮ বছরের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকার বাজেট পেশ করে এক অনূন্য উদাহরন সৃষ্টি করেছে।
আলোচনায় অংশ নিয়ে তারা প্রস্তাবিত বাজেটে খাত ওয়ারি বরাদ্দের কথা তুলে ধরে বলেন, এ বরাদ্দ অত্যন্ত সময়োপযোগী।