ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে জয়ই প্রধান লক্ষ্য : মাশরাফি

676

টনটন, ১৬ জুন ২০১৯ (বাসস) : দ্বাদশ বিশ্বকাপে নিজেদের পঞ্চম ম্যাচে আগামীকাল ওয়েস্ট ইন্ডিজের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। সেমিফাইনালে যাবার লক্ষ্যে এ ম্যাচে জয়টা খুবই বেশি প্রয়োজন হয়ে পড়েছে টাইগারদের। তাই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দল জয় ছাড়া অন্যই কিছুই ভাবছে না বলে জানালেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা।
টনটনের সমারসেট ক্রিকেট গ্রাউন্ডে আজ এক সংবাদ সম্মেলনে মাশরাফি বলেন, ‘প্রথম ও শেষ কথা হলো জয় প্রয়োজন। আমরা যদি আরও একটি ম্যাচ জিতে থাকতাম, তারপরও এই ম্যাচে জয় খুবই প্রয়োজন থাকতো। তাই জয়ের কোন বিকল্প কিছু নেই। শারীরিকভাবে সবাই ঠিক থাকার কথা। ছোট-ছোট ইনজুরি থাকবেই এটা স্বাভাবিক। বিশ্বকাপে ভালো করতে হলে এক জন, দু’জন নয়, সবারই দায়িত্ব নিয়ে খেলতে হবে। যতদূর সম্ভব দলের বেনিফিট হয়, সেটা লক্ষ্য রাখা দরকার অধিনায়ক হিসেবে। আমি সেটা চেষ্টা করেছি। আশা করি, এটা দলকে আরও বেশি উৎসাহি করবে। এই মুহূর্তে আমার কাছে মনে হয়, সকলের নিজের পারফরমেন্স নিয়ে ভাবা উচিত। এমন চিন্তা আসাটাই স্বাভাবিক।’
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে গেল নয় ম্যাচের মধ্যে ৭টিতেই জিতেছে বাংলাদেশ। তাই সাম্প্রতিক পারফরমেন্সে ক্যারিবীয়দের চেয়ে এগিয়ে টাইগাররা। কিন্তু এটি মানতে নারাজ বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি। কাল নতুন ম্যাচ, সবকিছুই নতুনভাবে শুরু হবে। তিনি বলেন, ‘দ্বিপক্ষীয় সিরিজ হলে অন্যরকম পরিকল্পনা থাকে। তবে এ ধরনের টুর্নামেন্টে একেক দিন একেক দলের সাথে খেলতে হয়। তাই সেভাবে মাইন্ডসেট থাকে না। প্রত্যক ম্যাচ শেষে অন্য দল নিয়ে চিন্তা করতে হয়। ওয়েস্ট ইন্ডিজ যেকোন দিনই প্রতিপক্ষকে ধসিয়ে দিতে পারে। আমাদের সেটা মাথায় রাখতে হবে। আমাদের সেরাটাই খেলতে হবে। আগের ৯ ম্যাচের সাতটিতে জিতেছি, তার মানে এই না আমরা এখানে সহজেই জিতে যাবো। আমাদের ভালো খেলতে হবে।’
ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটিং লাইন-আপ ও অতীতের কথা চিন্তা করে স্পিন দিয়েই শুরুতে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার ইঙ্গিত দিলেন মাশরাফি, ‘মিরাজের সাফল্যের সুযোগ আছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের টপ-অর্ডারে প্রথম দিকে পাঁচ জনের মধ্যে কিছু বাঁ-হাতি থাকছে। তাই তাদের অ্যাটাক করতে হলে অফ-স্পিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া অন্য কোন পরিকল্পনা করা যায় কি-না, তাও আমরা ভাবছি। তবে যেভাবে আমরা আগে সাফল্য পেয়েছি, আমাদের সেভাবেই ফোকাস করা উচিত।’
টনটনের উইকেট নিয়ে কথা বলতে গিয়ে নিউজিল্যান্ড ম্যাচের স্মৃতি রোমন্থন করে মাশরাফি বলেন, ‘উইকেটের উপর একটি দলের হার-জিত নির্ভর করে। আমার কাছে মনে হয় আমরা নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে উইকেট মূল্যায়ন করতে পারিনি। আমরা যদি উইকেট ঠিকমতো পর্যবেক্ষণ করতে পারতাম তাহলে চিন্তা করতাম ২৭০ বা ২৬০ করলেই হতো। ওই রান সেই ম্যাচে জেতার মতো ছিল। এই উইকেটে বিভ্রান্তি আছে। প্রথমদিকে শুনেছি ঘাস থাকবে। আবার কেউ কেউ বলছেন ফ্ল্যাট উইকেট। আমার মনে হয় যারা যারা উইকেটে যাবে তারা দ্রুত উইকেটের মূল্যায়ন করতে পারবে।’
ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটিং লাইন-আপে বেশক’জন বিগ হিটার রয়েছে। এছাড়া বোলিং লাইন-আপে পেস বোলাররা বেশ শক্তিশালী। তাই ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে পরিকল্পনা ছাড়া কোন উপায় নেই। মাশরাফি বলেন, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে খেলতে গেলে যেকোন দলকে পরিকল্পনা করেই খেলতে হয়। কারন তারা টি-২০ মেজাজে খেলে থাকে। ওয়ানডেতেও মারমুখী মেজাজে খেলে তারা। এসময় বোলারদের জন্য চ্যালেঞ্জ থাকে। নিজের উপর আস্থা রাখতে হবে। ইতিবাচক ব্যাপার হচ্ছে, তারা যেহেতু বড় শট খেলবে তাই আউটেরও সুযোগ আছে। ঐ সুযোগগুলো যদি আমরা নিতে পারি, তবে উইকেট নিতে পারি।’
নিজেদের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানকে বিধ্বস্ত করতে প্রধান ভূমিকা ছিলো ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলারদের। পাকিস্তানকে ১০৫ রানেই অলআউট করে দেয় ক্যারিবীয় বোলাররা। তাই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলারদের নিয়ে দলের ব্যাটসম্যানদের সতর্ক থাকতে বললেন মাশরাফি, ‘তাদের বোলিং অ্যাটাককে আমরা খেলে এসেছি। আগে সাফল্য পেলেও, কাল নতুন একটা ম্যাচ। এখন তারা বোলিং অ্যাটাকে ভালো করছেও। তাই আমাদের ব্যাটসম্যানদের সেটা মাথায় রেখে খেলতে হবে। শুরুতে ব্যাটসম্যানদের সতর্ক থাকতে হবে। আবার বোলারদের মাথায় রাখতে হবে যাতে আমরা উইকেট নিতে পারি।’