নিরাপদ ও পুষ্টিমানের খাবার নিশ্চিতে ফল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে : কৃষিমন্ত্রী

222

ঢাকা, ১৬ জুন, ২০১৯ (বাসস) : কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, বাংলাদেশ এখন শুধু খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণই নয়, খাদ্যে উদ্বৃত্তের দেশ। এখন দরকার জনগণের জন্য নিরাপদ ও পুষ্টিমানের খাবার নিশ্চিত করা। এই নিরাপদ ও পুষ্টিমানের খাবার নিশ্চিতে ফল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
আজ রোববার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ অডিটোরিয়ামে ‘ফলদ বৃক্ষ রোপণ পক্ষ ও জাতীয় ফল প্রদর্শনী ২০১৯’ উপলক্ষে আয়োজিত ‘পরিকল্পিত ফল চাষ যোগাবে পুষ্টি সম্মত খাবার’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্বৃতি দিয়ে ড. রাজ্জাক বলেন, কৃষির জন্য টাকা কোনো সমস্যার হবে না। এ খাতে ৯ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। দরকার হলে আরো টাকা দেয়া হবে, আরো কমানো হবে সারের দাম। কৃষি উন্নয়নে যাÑ যা করণীয় তা-ই করা হবে।
তিনি বলেন, আমরা কৃষি পণ্য রপ্তানিতে শতকরা ২০ ভাগ ভূর্তকি দিচ্ছি। চাল আমদানিকে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। করের পরিমাণও বাড়ানো হয়েছে। ফিলিপাইনের সাথে দেশি ব্যবসায়ীর আলোচনা হয়েছে, ২-৩ লাখ মেট্রিক টন চাল রপ্তানি করা যেতে পারে।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, আমাদেরকে জনগণের আয় বাড়াতে হবে। আয় বৃদ্ধি করতে আমাদেরকে রপ্তানি বহুমুখীকরণ করতে হবে। এজন্য কৃষির বাণিজ্যিকীকরণসহ উচ্চ মূল্যের ফসল চাষাবাদে এগিয়ে আসতে হবে। এতে করে আমাদের জনগণের আয় যেমন বাড়বে, তেমনিভাবে স্থানীয় বাজারও সম্প্রসারিত হবে।
তিনি বলেন, আমাদের ধানের উৎপাদন বৃদ্ধির কারণে দাম অস্বাভাবিকভাবে কমেছে। এছাড়াও শ্রমিকের দামও অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে। এখন শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। এর অর্থ হলো মানুষের জীবনযাত্রার মান ও কর্মসংস্থানের সুযোগ বেড়েছে। আমাদেরকে কৃষি যান্ত্রিকীকরণে যেতে হবে। কৃষিতে বরাদ্দের অতিরিক্ত ৩ হাজার কোটি টাকা যান্ত্রিকীকরণে ব্যয় করা হবে। আমাদের জমিগুলো আকার ছোট । তাই আমাদের দেশিয় উপযোগি যন্ত্রপাতি উদ্ভাবন করতে হবে। অথবা বিদেশ থেকে আমদানি করার সময় বিষয়টি চিন্তা করতে হবে।
কৃষিমন্ত্রী ড. রাজ্জাক ফল মেলার বিষয় উল্লেখ করে বলেন, ফল উৎপাদনে আমরা অনেক এগিয়ে গিয়েছি। অনেক ফল আছে যেগুলো সারা বছর ধরে চাষ করা হচ্ছে। পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের বিদেশি ফলও চাষ হচ্ছে। আমাদের দেশের আম বিদেশিরা খেয়ে বলে খুবই সুস্বাদু। আমাদের দেশিয় ফলের পুষ্টিমান যেমন রয়েছে, তেমনি সকলের কাছে সমাদৃত। এ ফল মেলা সকলের সচেতনতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে।
কৃষি সচিব মো. নাসিরুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে কৃষি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য কৃষিবিদ আব্দুল মান্নান ও চ্যানেল আইয়ের পরিচালক ও বার্তা প্রধান শাইখ সিরাজ বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক (সেবা ও সরবরাহ) মদন গোপাল সাহা। মূল প্রবন্ধের ওপর আলোচনায় অংশ নেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক এম এনামুল হক এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের এপিএ পুলের সদস্য মো. হামিদুর রহমান।
সেমিনারের আগে আ. কা. মু. গিয়াস উদ্দীন মিলকী অডিটরিয়াম চত্বরে ১৬ হতে ১৮ জুন তিন দিনব্যাপি জাতীয় ফল মেলার উদ্বোধন করে কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক মেলার বিভিন্ন স্টল ঘুরেÑঘুরে দেখেন। এসময় কৃষি মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও সংস্থার প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে ‘পরিকল্পিত ফল চাষ যোগাবে পুষ্টিসম্মত খাবার’ প্রতিপাদ্যে ‘ফলদ বৃক্ষ রোপণ পক্ষ ও জাতীয় ফল প্রদর্শনীÑ২০১৯’ উপলক্ষে এক বর্ণাঢ্য র‌্যালি জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজা শুরু হয়ে আ. কা. মু. গিয়াস উদ্দীন মিলকী অডিটরিয়াম চত্বরে শেষ হয়।
জাতীয় ফল মেলায় ৭টি সরকারি ও ৫৭টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মোট ৮৪টি স্টল রয়েছে। মেলা প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকছে।