মামলা জট কমিয়ে অবশ্যই গ্রহণযোগ্য মাত্রায় আনতে হবে : আইনমন্ত্রী

219

ঢাকা, ১৬ জুন, ২০১৯ (বাসস) : আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক সকল আদালতের মামলা জট কমিয়ে গ্রহণযোগ্য মাত্রায় আনার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের মামলা জট কমিয়ে অবশ্যই গ্রহণযোগ্য মাত্রায় আনতে হবে এবং এটিকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিতে হবে। আমরা কোন বিচারপ্রার্থীকে বছরের পর বছর ন্যায়বিচার পাওয়ার জন্য আদালতের বারান্দায় ঘুরতে দেখতে চাইনা। কারণ বিলম্বিত বিচারে বিচারপ্রার্থী জনগণ যেমন আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন তেমনী তার ন্যায়বিচার পাওয়ার পথ সংকুচিত হয়।’
আইনমন্ত্রী আজ রোববার রাজধানীর বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পাবলিক প্রোসিকিউটদের বিশেষ প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। এ প্রশিক্ষণে ৪৪ জন প্রোসিকিউটর অংশ নেন।
আনিসুল হক বলেন,‘ নারী নির্যাতন হচ্ছে আমাদের কাঙ্খিত জাতীয় উন্নয়নের পথে সবচেয়ে বড় বাঁধা। তাই প্রথমবার সরকার গঠন করেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার এ বাঁধা দূর করার জন্য বেশকিছু পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। যার মধ্যে অন্যতম ছিল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের আধুনিকায়ন।’
মন্ত্রী বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালগুলোতে বিচারাধীন মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষ্যে পূর্বের ৫৪টি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পাশাপাশি ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে ২৯টি জেলায় আরো ৪১টি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল স্থাপন করা হয়।
সেগুলোতে বিচারক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন,নতুন ৪১টি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল স্থাপনের মাধ্যমে বিচারপ্রার্থী জনগণের মনে নতুন করে আশা জেগেছে। কারণ তারা স্বল্প সময়ে, স্বল্প ব্যয়ে ও সহজে ন্যায় বিচার পাবেন। আইনমন্ত্রী বলেন,‘আমার বিশ্বাস, সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতায় আমরা তাঁদের এই নতুন আশা পূরণ করতে সক্ষম হবো। আমাদের খুশির খবর হলো, বিগত এক বছরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালগুলোতে নতুন করে মামলা জট তৈরি হয়নি বরং বিচারাধীন ১,৮৩১টি মামলা কমেছে।’
মন্ত্রী বলেন, আধুনিককালে উন্নত বিশ্বে অপরাধ বিজ্ঞান ও উন্নয়ন তত্ত্বের মধ্যে বিপরীতমুখী সম্পর্ক অর্থাৎ উন্নয়ন বাড়লে অপরাধ বা অপরাধ প্রবণতা কমবে এবং উন্নয়ন কম হলে অপরাধ বা অপরাধ প্রবণতা বাড়বে-এ সম্পর্ক সুপ্রতিষ্ঠিত হলেও বাংলাদেশে উন্নয়ন ও অপরাধ সমানতালে চলছে। তাই যে কোন উপায়ে ‘আমাদের অপরাধ বা অপরাধ প্রবণতা কমাতে হবে। নইলে আমাদের উন্নয়নের মূল উদ্দেশ্যই ব্যাহত হবে।’
তিনি দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে দ্রুততম সময়ে ন্যায়বিচার প্রদানে সহায়তা করে অপরাধ দমনে এগিয়ে আসার জন্য বিচার ব্যবস্থার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহবান জানান।
প্রশিক্ষণার্থীদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, বিচারপ্রার্থী জনগণ আপনাদের নিকট যেন সবরকম সহোযোগিতা পায় সে বিষয়ে সজাগ থাকবেন। আপনারা জানেন যে, সরকার দুর্নীতির ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে। সেজন্য আদালত অঙ্গনে দুর্নীতি সংক্রান্ত সকল প্রথাগত কর্মকা- পরিহার করে সততা, স্বচ্ছতা এবং সাহসিকতার সমন্বয়ে দায়িত্ব পালন করবেন। তাহলেই জনগণের প্রত্যাশিত স্বল্প সময়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে এবং বিচার বিভাগের প্রতি সাধারণ জনগণের আস্থা বহুলাংশে বৃদ্ধি পাবে।
বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বিচারপতি খোন্দকার মূসা খালেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আইন ও বিচার বিভাগের সচিব আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হক বক্তৃতা করেন।