পরাজয় দিয়ে কোপা আমেরিকা শুরু করলো মেসির আর্জেন্টিনা

242

সালভাদোর, ১৬ জুন ২০১৯ (বাসস) : বদলী বেঞ্চ থেকে উঠে আসা রজার মার্টিনেজ ও ডুভান জাপাটার গোলে আর্জেন্টিনাকে হতাশ করে কোপা আমেরিকা মিশন শুরু করেছে কলম্বিয়া। প্রথম ম্যাচে ২-০ গোলের এই পরাজয়ে জাতীয় দলের হয়ে আর্জেন্টাইন সুপারস্টার লিয়নেল মেসির শিরোপা জয়ের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন শুরুতেই হোঁচট খেল।
৭২ মিনিটে মার্টিনেজের দুর্দান্ত গোলে এগিয়ে যায় কলম্বিয়া। আরেক বদলী খেলোয়াড় জাপাটা ম্যাচ শেষের চার মিনিট আগে দলের জয় নিশ্চিত করেন। সালভাদোরে যদিও গ্রুপ-বি’র এই ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধটা পুরোটাই আধিপত্য দেখিয়েছে আর্জেন্টিনা। সর্বশেষ ২০ বছর আগে কোপা আমেরিকায় আর্জেন্টিনাকে পরাজিত করেছিল কলম্বিয়া।
ম্যাচ শেষে উচ্ছসিত জাপাটা বলেছেন, ‘আমরা জানি তাদের বিপক্ষে অনেক দিন আগে আমরা জয়ী হয়েছিলাম। এই জয়ে স্বাভাবিক ভাবেই আমরা দারুন খুশী। কিন্তু এটা সবেমাত্র শুরু।’
গ্রুপের পরের দুই ম্যাচে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালিস্ট কলম্বিয়ার মুখোমুখি হবে প্যারাগুয়ে ও এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন কাতার। সে কারনে ধরে নেয়া যায় আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ম্যাচটিই কলম্বিয়ানদের গ্রুপের সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষা ছিল।
গত ২৬ বছর ধরে বড় কোন আন্তর্জাতিক শিরোপা না পাওয়া আর্জেন্টিনা দক্ষিণ আমেরিকান সর্বোচ্চ এই আসরের গত দুইবারের ফাইনালে চিলির কাছে পরাজিত হয়েছিল। এছাড়া ২০১৪ সালের বিশ্বকাপেও তাদেরকে জার্মানীর কাছে পরাজয়ন বরণ করতে হয়েছে। আর্জেন্টাইন কোচ লিওনেল স্কালোনি বলেছেন, ‘খেলোয়াড়রা জানে এখনো টুর্ণামেন্টে অনেক দুর যেতে হবে। আমাদের হাতে আপাতত আরো দুটি ম্যাচ বাকি আছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে সঠিক পথে নিজেদের ধরে রেখে ভুলগুলো শুধরে নেয়া।’
কাগজে কলমে এবারের কোপা আমেরিকায় গতকাল সম্ভবত বিশ্বের সেরা ফরোয়ার্ড লাইন নিয়ে দুই দল মাঠে নেমেছিল। আর্জেন্টিনার হয়ে পাঁচবারের ব্যালন ডি’অর বিজয়ী মেসির সাথে ছিলেন সার্জিও এ্যাগুয়েরো ও এ্যাঙ্গেল ডি মারিয়া, আর কলম্বিয়ার আক্রমনভাগে ছিলেন হামেস রদ্রিগেজ, রাদামেল ফ্যালকাও ও হুয়ান কুয়াড্রাডো। কিন্তু ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দিয়েছেন দুই বদলী খেলোয়াড়। এ সম্পর্কে হামেস বলেন, ‘গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে আমরা সবাই নিজেদের সেরাটা দিতে চেষ্টা করেছি। এটা আমাদের সকলের জন্য অনেক বড় একটি দিন।’
প্রথমার্ধেও প্রায় পুরোটা সময় দুই দল অত্যন্ত দ্রুতগতির ফুটবল খেললেও কাঙ্খিত গোলের দেখা পায়নি। ১৬ মিনিটে প্রথম আক্রমন অবশ্য আসে কলম্বিয়ার কাছ থেকে। কুয়াড্রাডোর ক্রস থেকে মার্টিনেজের শট ডিফ্লেকটেড হয়ে বাইরে চলে যায়। এরপর মার্টিনেজের পাসে ফ্যালকাওয়ের শট রুখে দেন আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক ফ্র্যাংকো আরমানি। বল ও পজিশনের দিক থেকে কলম্বিয়াই মূলত প্রথমার্ধ শাসন করেছে। বিপরীতে মেসির নেতৃত্বে আর্জেন্টিনার আক্রমনভাগ তেমন একটা সুযোগ সৃষ্টি করতে পারেনি। ম্যাচ শেষে মেসি স্বীকার করেছেন প্রথমার্ধে আর্জেন্টিনা কিছুটা নার্ভাস ছিল। কারন টুর্নামেন্টে এটি তাদের প্রথম ম্যাচ।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে আর্জেন্টিনা ম্যাচের সবচেয়ে সহজ সুযোগটি সৃষ্টি করেও কাজে লাগাতে পারেনি। লিওনার্দো পারেডেসের দুরপাল্লার শট আটকাটে কলম্বিয়ান গোলরক্ষক ডেভিড ওসপিনাকে বেশ বেগ পেতে হয়েছে। এরপর মেসি ও পারডেসে আবারো নিজেদেও ব্যর্থ প্রমান করেছেন। ৬০ মিনিটে মেসিকে ফাউলের অপরাধে কুয়াড্রাডো হলুদ কার্ড পেলে সাথে সাথে তাকে মাঠ থেকে উঠিয়ে নেন পর্তুগীজ কোচ কার্লোস কুয়েরোজ। এই সুযোগে আর্জেন্টিনা কিছূটা আগ্রাসী হয়ে উঠে। ওটামেন্ডির হেড রুখে দেন ওসপিনা, মেসির হেড অল্পের জন্য পোস্টের বাইরে দিয়ে চলে যায়। ৭১ মিনিটে হামেসের ক্রস থেকে লেফট উইং দিয়ে মার্টিনেজের ডান পায়ের জোড়ালো শট আটকানোর সাধ্য ছিলনা আরমানির। ম্যাচ শেষের চার মিনিট আগে ফুল-ব্যাক জেফারসন লারমার লেফট উইংয়ের ক্রস থেকে জাপাটা দলের জয় নিশ্চিত করেন।