খুলনা অঞ্চল থেকে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ১ হাজার ৬৩০ কোটি টাকার পণ্য রফতানি

221

খুলনা, ১৬ জুন, ১২০১৯ (বাসস) : অর্থনৈতিক উন্নয়নের মূল শর্ত হলো বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন। আর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের অন্যতম মাধ্যম হিসেবে ধরা হয় রফতানিকে। খুলনায় বিগত দিনের তুলনায় গত এক দশকে ব্যাপক উন্নয়নে সহায়ক হিসেবে কাজ করেছে বৈদেশিক মুদ্রা। বৃহত্তর খুলনা থেকে রফতানির মাধ্যমে অর্জন হয়েছে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা। রফতানি খাত থেকে অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রা দেশের উন্নয়নের গতি ত্বরান্বিত রাখতে সহায়তা দেয়। দেশের রফতানি বাণিজ্যে খুলনাঞ্চল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। গত অর্থ বছর এ অঞ্চল থেকে বিশ্বের ২২টি দেশে ১ হাজার ৬৩০ কোটি ৩১ লাখ টাকার পণ্য রফতানি করা সম্ভব হয়েছে। তবে ২০১৭-১৮ অর্থবছরের চেয়ে চলতি ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের গত ১০ মাসে রফতানি হয়েছে আরও বেশী। আশা করা হচ্ছে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে খুলনা অঞ্চল থেকে রফতানি পণ্যের পরিমাণ ২ হাজার কোটি টাকা ছাড়িযে যাবে। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্রমতে, ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে খুলনা বিভাগের ১০ জেলা থেকে জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, বাশিয়া, ফ্রান্স, বেলজিয়াম, ইতালি, যুক্তরাজ্য, স্পেন, গ্রিস, ডেনমার্ক, তুরস্ক, স্লোভেনিয়া, সুইজারল্যান্ড, জাপান, ভারত, পাকিস্তানসহ ২২টি দেশে ২০ প্রকারের পণ্য রফতানি হয়। রফতানিকৃত পণ্যগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-পাট ও পাটজাত পণ্য, মাটির টালি, ম্যান কুইন, আ্যাঙ্গেল ব্র্যান্ড, কাঁচা পাট, সুপারি, হস্তশিল্প পণ্য, টাইলস, ট্রাভেল্স ব্যাগ, হিমায়িত চিংড়ি ও সাদা মাছ। ইপিবির সনদ নিয়ে ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন বাণিজ্য চুক্তি ও শুল্ক সুবিধার আওতায় এ সব পণ্য রফতানি করেন।
সূত্র জানায়, গত অর্থবছর (২০১৭-১৮) ইপিবি মোট ১ হাজার ৮৬৪টি সনদ ইস্যু করে। ইপিবির সনদ থাকলে অন্তর্জাতিক চুক্তি অনুযায়ী পণ্য রফতানিতে শুল্ক ছাড় সুবিধা পান ব্যবসায়ীরা। গত অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে রফতানি আয় বেশ কম ছিল। জানুয়ারিতে খুলনা অঞ্চল থেকে বিশ্বের ১০টি দেশে ৫৩ কোটি টাকার পণ্য রফতানি করা হয়। ফেব্রুয়ারিতে রফতানি আয়ের পরিমাণ ছিল ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা। মার্চে আটটি দেশে পণ্য রফতানি বাবদ আয় হয় ১ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। এপ্রিল ও মে মাসে রফতানি আয় কোটির নিচে নেমে আসে। এ দু’মাসে খুলনাঞ্চল থেকে যথাক্রমে ৫১ লাখ ও ৯৮ লাখ টাকার পণ্য রফতানি হয়। তবে জুন থেকে রফতানি আয় শত কোটি টাকা ছাড়াতে শুরু করে। এ মাসে ১৩টি দেশে ১১৯ কোটি ৭২ লাখ টাকার পণ্য রফতানি করা হয়। বছরের শেষ ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) যথাক্রমে ৩৫০ কোটি ৪৬ লাখ, ৩৪৪ কোটি ৬৫ লাখ, ১৬৪ কোটি ১৬ লাখ, ৪৪১ কোটি ২৭ লাখ, ১৯৩ কোটি ৭৯ লাখ ও ১৬৬ কোটি টাকার পণ্য রফতানি হয়।
রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো খুলনা কার্যালয়ের পরিচালক আলমগীর সিদ্দিকী বাসসকে বলেন, এ অঞ্চলে উৎপাদিত পণ্য রফতানির জন্য নতুন নতুন বাজার খোঁজা হচ্ছে। রফতানিকারকদের ব্যাপক ভাবে উৎসাহিত করা হচ্ছে। বিশ্ববাজারে রফতানিকৃত পণ্যের তালিকা সন্নিবেশন করা হয়েছে।
তিনি জানান, গত অর্থবছর এ অঞ্চল থেকে বিশ্বের ২২টি দেশে ১ হাজার ৬৩০ কোটি ৩১ লাখ টাকার পণ্য রফতানি করা হয়েছে। তবে ২০১৭-১৮ অর্থ বছরের চেয়ে চলতি ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের গত ১০ মাসে রফতানি হয়েছে ১৮০০ কোটি টাকারও বেশী। আশা করা হচ্ছে চলতি অর্থবছরে রফতানি আয় ২০০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
তাঁরমতে, বৈদেশিক সাহায্য না নিয়ে দেশের কাঙ্খিত অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি অর্জনের ক্ষেত্রে রফতানি বাণিজ্যের গুরুত্ব অপরিসীম। তিনি পণ্য রফতানি বাড়াতে খুলনা অঞ্চলের ব্যবসায়ীদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।