বাজিস-৪ : ভোলায় মুক্তিযুুদ্ধ কর্ণারে দর্শনার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে

279

বাজিস-৪
ভোলা-মুক্তিযুদ্ধ-কর্ণার
ভোলায় মুক্তিযুুদ্ধ কর্ণারে দর্শনার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে
॥ হাসনাইন আহমেদ মুন্না ॥
ভোলা, ১৬ জুন, ২০১৯ (বাসস) : জেলায় মুক্তিযুদ্ধ কর্ণারে দর্শনার্থীর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ কর্ণারটি চালু করা হয়। জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নিচতলার একটি কক্ষে গত জানুয়ারি মাসে এটি উদ্বোধন করা হয়েছে। কর্ণারটিতে মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ের বহু ঐতিহাসিক প্রামাণ্য চিত্র, দলিল, তথ্য, প্রতিবেদন, পুস্তকসহ দুর্লভ নিদর্শন স্থান পেয়েছে। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত অফিস চলাকালীন সময়ে মুক্তিযুদ্ধ কর্ণারটি সকলের জন্য উন্মুক্ত থাকছে। শত শত মানুষ এখান থেকে মুক্তিযুদ্ধের গৌরব গাঁথা ইতিহাস জানছে ।
জেলা প্রশাসক মো. মাসুদ আলম সিদ্দিক বাসস’কে জানান, মুক্তিযুদ্ধ আমাদের জাতীয় জীবনের অত্যন্ত গর্বের বিষয়। তরুণ প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরার লক্ষ্যেই আমরা এটি চালু করেছি। মুক্তিযুদ্ধ কর্ণারের বিষয়টি বাংলাদেশে তুলনামুলক নতুন একটি বিষয়। প্রতিদিন জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে শত শত সেবা গ্রহীতা সেবা নিতে আসেন। অনেক সময় সেবা পেতে একটু সময় লাগে। এ সময়টাতে তারা এখান থেকে মুক্তিযুদ্ধের নানান বিষয় সম্পর্কে জানতে পারেন। জ্ঞান লাভ করতে পারেন আমাদের জাতীয় জীবনের মহান এ অধ্যায় সম্পর্কে।
তিনি আরো বলেন, এছাড়া জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে প্রচুর শিক্ষার্থীরা আসেন। তারাও মুক্তিযুদ্ধ কর্ণারে প্রবেশ করে যুদ্ধের নানান বিষয় সম্পর্কে অবহিত হচ্ছে। এর বাইরেও অনেকে এখানে এসে মুক্তিযুদ্ধের সচিত্র প্রতিবেদন, বই’র মাধ্যমে অনেক তথ্য জানতে পারেন। আমাদের তরুণ প্রজন্মের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আরো সমৃদ্ধ করতে এ কর্ণারটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে বলে জানান জেলা প্রশাসক।
এদিকে জেলায় এ প্রথম মুক্তিযুদ্ধ কর্ণার চালু হওয়াতে আনন্দ প্রকাশ করেছে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল, সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ। তারা মনে করেন, এর মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আরো ব্যাপকতা লাভ করবে।
এ ব্যাপারে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ভোলা প্রেসক্লাব সভাপতি এম হাবিবুর রহমান বাসস’কে বলেন, মুক্তিযুদ্ধ কর্ণার চালু করাতে জেলা প্রশাসককে আমরা মুক্তিযোদ্ধারা সাধুবাদ জানাই। কারণ এটি ভোলা তথা জাতির জন্য অত্যন্ত গর্ব ও গৌরবের বিষয়। বিশেষ করে আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের কাছে যুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে এর ভূমিকা বলে শেষ করা যাবেনা। ইতোমধ্যে জেলায় এটি ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। এর মাধ্যমে স্থানীয়ভাবে মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন উপাদান ও ইতিহাস যথাযথভাবে সংরক্ষিত হবে এমনটাই মনে করছেন এ মুক্তিযোদ্ধা। তবে তিনি মুক্তিযুদ্ধ কর্ণারটি আরো বৃহৎ পরিসরে স্থাপনের দাবি জানান।
ভোলা সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার হোসেন, সবুজ রায়হান, ফারজানা সাদিয়া বলেন, মুক্তিযুদ্ধ কর্ণারের মাধ্যমে আমরা মুক্তিযুদ্ধের অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জানতে পারি। বিশেষ করে বিভিন্ন দুর্লভ চিত্র ও বই’র মাধ্যমে সঠিক ইতিহাস জানা যায়।
জেলা প্রশাসক আরো বলেন, মুক্তিযুদ্ধ কর্ণারটি ভবিষ্যতে আরো সম্প্রসারতি করা হবে। আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে একটি বড় কক্ষে আরো কর্ণারটির কার্যক্রম চলবে। এখানে অডিও ভিজ্যুয়াল ব্যবস্থা রাখা হবে। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক ভিডিও চিত্র, বিভিন্ন চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে। সব মিলিয়ে এটি নিয়ে জেলা প্রশাসনের আরো বিস্তারিত পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান তিনি।
বাসস/এইচএএম/১২৪৫/-নূসী