কৃষি শুমারির তথ্য সংগ্রহ শুরু

490

ঢাকা, ৯ জুন,২০১৯ (বাসস): কৃষিপ্রধান বাংলাদেশের কৃষি ও কৃষির উপখাত সম্পর্কে সর্বশেষ তথ্য সংগ্রহের জন্য আজ রোববার থেকে শুরু হয়েছে ষষ্ঠ কৃষি শুমারি (শস্য, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ)। বাংলাদেশ পরিসংখ্যাণ ব্যুারো (বিবিএস) এই শুমারি পরিচালনা করছে। শুমারি চলবে আগামী ২০ জুন পর্যন্ত।
কৃষি শুমারি ২০১৯ পরিচালনার মাধ্যমে কৃষি খানার সংখ্যা,খানার আকার, ভূমির ব্যবহার, কৃষির প্রকার, শস্যের ধরন,চাষ পদ্ধতি,গবাদি পশু ও হাঁস-মুরগীর সংখ্যা,মৎস্য উৎপাদন ও চাষাবাদ সংক্রান্ত তথ্যাদি এবং কৃষি ক্ষেত্রে নিয়োজিত জনবল সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করা হবে।
রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পরিসংখ্যাণ ভবনে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বেলুন ও কবুতর উঠিয়ে শুমারির উদ্বোধন করেন।
শুমারি উপলক্ষে বিবিএস এর উদ্যোগে আগারগাঁওয়ে বর্ণ্যাঢ্য র‌্যালি অনুষ্ঠিত হয়।
র‌্যালিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। এতে অন্যান্যের মধ্যে পরিসংখ্যাণ ও তথ্য ব্যবস্থাপনা সচিব সৌরেন্দ্র নাথ চক্রবর্তী, বিবিএস মহাপরিচারক কৃঞ্চা গায়েন এবং কৃষি শুমারির প্রকল্প পরিচালক মো. জাফর আহমেদ খান উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন,মানুষের যেমন স্বাস্থ্য নিয়মিত পরীক্ষা প্রয়োজন। তেমনি অর্থনীতির স্বাস্থ্য জানতে কৃষি শুমারিসহ অন্যান্য শুমারি পরিচালনা করা হয়।
তিনি বলেন,দেশের প্রথম নাগরিক হিসেবে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রথম খানা (পরিবার) রাষ্ট্রপতির বাসভবনে আমি নিজে সন্ধ্যায় গিয়ে গণনার কাজ শুরু করব। এই শুমারির মাধ্যমে কেবল ধান ও পাট নয়, হাঁস, মুরগী,গরু-ছাগল সবকিছুর তথ্য পাওয়া যাবে।
এক প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী জানান,তিন মাসের মধ্যে শুমারির প্রাথমিক ফল এবং ছয় মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ ফল জানিয়ে দেয়া হবে। এই শুমারিতে কোনো অসঙ্গতি চোখে পড়লে তা তুলে ধরার জন্যও অনুরোধ জানান পরিকল্পনামন্ত্রী।
তিনি শুমারি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্য বলেন,‘শুমারি সুচারুরুপে সম্পন্ন করবেন,যাতে করে এটা বিশ্বমানের একটি কাজ হয় এবং আমরা যেন গর্ববোধ করতে পারি। এজন্য আমাদের সরকারের যা যা করা দরকার আর্থিক,সাংগঠনিক, প্রাতিষ্ঠানিক-সবকিছু করা হবে।’
এম এ মান্নান বলেন,আমাদের জাতীয় জিডিপিতে কৃষির অবদান শতকরা ১৩ দশমিক ৩৭ শতাংশ।এটা আগামীতে আরো বাড়বে। ধানের ক্ষেত্রে কমলেও মাছ,সবজি,ফলের ক্ষেত্রে অনেক বাড়বে।
কৃষি শুমারি ২০১৯ বাস্তবায়নের লক্ষে পল্লী এলাকায় গড়ে ২৪০টি,পৌরসভা এলাকায় গড়ে ৩০০টি এবং সিটি করপোরেশন এলাকায় গড়ে ৩৫০টি খানা নিয়ে একটি গণনা এলাকা গঠন করা হয়েছে। এছাড়া উপজেলা,জেলা, বিভাগীয় ও জাতীয় পর্যায়ে কৃষি শুমারির তথ্য সংগ্রহে সমন্বয়কারী থাকবে। এরই মধ্যে সমন্বয়কারীদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।
প্রতিটি গণনা এলাকায় তথ্য সংগ্রহের জন্য স্থানীয়ভাবে শিক্ষিত বেকার যুবক ও যুব মহিলাদের গণনাকারী হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
শুমারিতে একজন প্রধান শুমারি সমন্বয়কারী, একজন জাতীয় শুমারি সমন্বয়কারী,একজন অতিরিক্ত জাতীয় শুমারি সমন্বয়কারী, ১০ জন বিভাগীয় শুমারি সমন্বয়কারী, ৯০ জন জেলা শুমারি সমন্বয়কারী (ডিসিসি),৪৯২ জন উপজেলা শুমারি সমন্বয়কারী (ইউসিসি),২ হাজার ১২৭ জন জোনাল অফিসার,২৩ হাজার ১৬৫ জন সুপারভাইজার এবং ১ লাখ ৪৪ হাজার ২১১ জন তথ্য সংগ্রহকারী কাজ করছেন বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়।
এদেশে ১৯৬০ সালে প্রথমবারের মত নমুনা আকারে কৃষি শুমারি অনুষ্ঠিত হয়। স্বাধীনতা-পরবর্তী বাংলাদেশে ১৯৭৭ সালে প্রথম কৃষি শুমারি অনুষ্ঠিত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৮৩-৮৪,১৯৯৬ ও ২০০৮ সালে কৃষি শুমারি অনুষ্ঠিত হয়। সর্বশেষ ষষ্ঠবারের মতো দেশে কৃষি শুমারি ২০১৯ পরিচালনার উদ্যোগ নেয়া হয়।