বাসস ক্রীড়া-৬ : পেরুর বিশ্বকাপে ফেরার আনন্দ নষ্ট করে দিতে চায় ডেনমার্ক

188

বাসস ক্রীড়া-৬
ফুটবল-বিশ্বকাপ-প্রিভিউ
পেরুর বিশ্বকাপে ফেরার আনন্দ নষ্ট করে দিতে চায় ডেনমার্ক
ঢাকা, ১৫ জুন, ২০১৮ (বাসস) : আগামীকাল গ্রুপ-সি’র দ্বিতীয় ও নিজেদের প্রথম ম্যাচে রাতে ডেনমার্কের মুখোমুখি হবে পেরু। ১৯৮২ সালের পর, দীর্ঘ ৩৬ বছর বাদে আবারো বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্বে খেলার উৎসবটা তাই স্মরণীয় করে রাখতে চায় দক্ষিণ আমেরিকান দলটি। অন্যদিকে তারকা মিডফিল্ডার ক্রিস্টিয়ান এরিকসেরেনর উপর ভর করে ডেনমার্কও বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে পূর্ণ তিন পয়েন্ট নিয়েই যাত্রা শুরু করতে চায়।
ডোপিং নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে অধিনায়ক পাওলো গুয়েরেরোর দলে ফেরা পেরুকে বাড়তি উদ্দীপনা যোগাচ্ছে। সে কারনেই ১৯৩০, ১৯৭০, ১৯৭৮ ও ১৯৮২ সালের পরে পঞ্চমবারের মত বিশ্বকাপে খেলতে আসা পেরু কিছু একটা অর্জন নিয়ে বাড়ি ফিরতে চায়। বিশ্বকাপ শুরুর মাত্র এক সপ্তাহ আগে ফ্লামেঙ্গো ফরোয়ার্ড গুয়েরেরোর ১৪ মাসের নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেয়াটা পেরু বস রিকার্ডো গার্সিয়ার জন্য দারুণ স্বস্তির খবর ছিল।
এদিকে ডেনমার্ক তাদের টটেনহ্যাম হটস্পারের গোল মেশিন এরিকসেনকে নিয়ে দারুণ ফুরফুরে মেজাজে রয়েছে। বাছাইপর্বে এই মিডফিল্ডারের কাছ থেকে এসেছে ১১টি গোল। যা ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডো কিংবা রবার্ট লিওয়ানোদোস্কির নিজ নিজ দেশের হয়ে বাছাইপর্বের গোলের তুলনায় বেশী। ২৬ বছর বয়সী এই মিডফিল্ডার গত নভেম্বরে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে বাছাইপর্বে প্লে-অফে হ্যাটট্রিক করেছিলেন। যে কারনে ডেনমার্ক ৫-১ গোলে আয়ারল্যান্ডকে বিধ্বস্ত করে মূল পর্বের টিকিট পায়। এরপর বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ম্যাচে শক্তিশালী মেক্সিকোর বিপক্ষে ২-০ গোলের জয়ের ম্যাচে নিজে এক গোল করার পাশাপাশি আরেকটিতে এ্যাসিস্ট করেন।
গ্রুপ-সি’ থেকে এই দুই দল কাল মাঠে নামছে। যেহেতু এই গ্রুপের ফেবারিট হিসেবে ফ্রান্সকে ধরা হচ্ছে, সে কারনে কোন দলই চাইবেনা প্রথম ম্যাচে পয়েন্ট হারাতে। সারানাস্কে অনুষ্ঠিত ম্যাচের স্পটলাইট অবশ্য থাকবে ৩৪ বছর বয়সী গুয়েরেরোর ওপর। অনেকটা বয়স্ক দল হিসেবে এবারের বিশ্বকাপে খেলতে আসা পেরুর আক্রমনভাগে গুয়েরেরোর পাশাপাশি আরো রয়েছেন ৩৩ বছর বয়সী জেফারসন ফারফান, যিনি প্যারাগুয়ে ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে গোল করে পেরুকে দীর্ঘ তিন দশক পরে বিশ্বকাপের পথ দেখিয়েছেন।
গত অক্টোবরে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে বাছাইপর্বের পরে কোকেইন সেবনের দায়ে নিষিদ্ধ গুয়েরেরো মূল পর্বের ঠিক আগ মুহূর্তে আপিলে জয়ী হয়ে খেলার ছাড়পত্র পান। আর দলে ফিরেই সৌদি আরবের বিপক্ষে ৩-০ গোলের জয়ী প্রস্তুতি ম্যাচে দুই গোল করে নিজের দক্ষতার আরো একবার প্রমান দেন।
যদিও ডেনমার্কের বিপক্ষে লড়াইটা যে মোটেই সহজ হবে না তা সহজেই অনুমান করতে পারছেন পেরুর খেলোয়াড়রা। এ সম্পর্কে ডিফেন্ডার এন্ডারসন সান্টামারিয়া বলেছেন, ‘আমরা নিজেদের যোগ্যতা দিয়েই কোচের উপর চাপ সৃষ্টি করেছি। তার জন্য মূল একাদশের খেলোয়াড় বাছাই করা খুব একটা সহজ হবে না। প্রতিপক্ষ হিসেবে ডেনমার্ক কঠিন দল। আমাদের সেরাটা দিয়েই খেলতে হবে।’
দক্ষিণ আমেরিকান বাছাইপর্বে পঞ্চম স্থানে থেকে পেরু বিশ্বকাপ নিশ্চিত করে। বাছাইপর্বে পেরু উইঙ্গার এডিসন ফ্লোরেস পাঁচ গোল করেছেন। ক্লাব পর্যায়ে ফ্লোরেস ড্যানিশ লিগে আলবোর্গের হয়ে খেলে থাকেন। ২৪ বছর বয়সী মাত্র ৫ ফুট ৫ ইঞ্চি উচ্চতার এই উইঙ্গার বলেছেন, আমার উচ্চতা কম হতে পারে, কিন্তু মানসিক শক্তির দিক থেকে আমি অনেকের থেকে এগিয়ে। একজন ফুটবলারের জন্য বিশ্বকাপে খেলাটা তার ক্যারিয়ারের সেরা প্রাপ্তি। কোচের আমাদের উপর আস্থা আছে এবং আমাদেরও তার উপর।
এবারের বিশ্বকাপে খেলোয়াড়দের গড় উচ্চতার দিক থেকে ডেনমার্কই এগিয়ে রয়েছে। তাদের খেলোয়াড়দের গড় উচ্চতা যেখানে ১.৮৫ মিটার সেখানে পেরু ১.৭৮ মিটার গড় নিয়ে বেশ খানিকটা পিছিয়ে রয়েছে।
কোচ এইজ হারেইদির অধীনে ২০১৬ সাল থেকে টানা ১৪ ম্যাচ অপরাজিত রয়েছে ডেনমার্ক।
স্কোয়াড :
পেরু
গোল রক্ষক : পেড্রো গালেসে (১), জোসে কারভালো (২১), কার্লোস কাসেডা (১২)।
রক্ষনভাগ : লুইস এডভিনকুলা (১৭), মিগুয়েল আরাউজো (৫), আল্ডো কোরজো (৩), নিলসন লয়োলা (২২), ক্রিস্টিয়ান রামোস (১৫), আলবার্তো রড্রিগুয়েজ (২), এন্ডারসন সান্টামারিয় া(৪), মিগুয়েল ট্রাউসে া(৬)।
মধ্যমাঠ : পেড্রো একুইনো (২৩), উইলমার কার্টাজেনা (১৬), ক্রিস্টিয়ান কুয়েভা (৮), এডিসন ফ্লোরেস (২০), পাওলো হার্টাডো (৭), রেনাটো তাপিয়া (১৩), ইওশিমার ইওটুন (১৯)।
আক্রমণভাগ : পাওলো গুয়েরারো (৯), আন্দ্রে ক্যারিলো (১৮), রাউল রুইডিয়াজ (১১), এন্ডি পোলো (১৪), জেফারসন ফারফান (১০)।
কোচ: রিকার্ডো গ্যারেচা
ডেনমার্ক:
গোলরক্ষক : ক্যাসপার শেমিচেল (১), জোনাস লসল (১৬), ফ্রেডেরিক রোনোউ (২২)।
রক্ষন ভাগ : সিমন কাজায়ের (৪), আন্দ্রেয়াস ক্রিসটেনসেন (৬), ম্যাথিয়াস জর্গেনসেন (১৩), জানিক ভেস্তারগার্ড (৩), হেনরিক ডালসাগার্ড (১৪), জেনস স্ট্রিগার লারসেন (১৭), জোনাস কেনুডসেন (৫)।
মধ্য মাঠ : উইলিয়াম কেভিস্ট (৭), ভিক্টর ফিশচার (১৫), টমাস ডেলানি (৮), লুকাস লেরাগার (১৮), লাসে শোন (১৯), ক্রিস্টিয়ান এরিকসেন (১০), মাইকেল ক্রন-ডেলি (২)।
আক্রমন ভাগ : মার্টিন ব্রেইথওয়েট (১১), আন্দ্রেয়াস কর্নেলিয়াস (২১), ইউসুফ পুলসেন (২০), নিকোলাই জর্গেনসেন (৯), ক্যাসপার ডলবার্গ (১২), পিয়োনে সিস্টো (২৩)।
কোচ: এইজ হারেইদি
বাসস/এএসজি/নীহা/১৪২৫/স্বব/